স্কুল অব লাইফের অনলাইন পর্ব অনুষ্ঠিত

স্কুল ও কলেজশিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হলো ‘এ এস ইসলাম স্কুল অব লাইফ’ কর্মশালার অনলাইন পর্ব। ২৩ মার্চ, শনিবার অনলাইনে এ পর্ব আয়োজিত হয়। কর্মশালার মূল লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের জীববিজ্ঞানে আগ্রহী করে তোলা ও গবেষণায় হাতেখড়ি দেওয়া।

এ কর্মশালায় আলোচনা করেন দেশের স্বনামধন্য গবেষকরা। জুনিয়র ক্যাটাগরিতে জীববৈচিত্র্য এবং এর কারণ নিয়ে সেশন নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রিফাত আরা বেগম। কোষ নিয়ে আলোচনা করেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুশতাক ইবনে আয়ূব। ব্যাকটেরিয়া নিয়ে দুটি সেশন নেন অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মঞ্জুরুল করিম। জিন সম্পর্কিত সেশনে আলোচনা করেন প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহাবুবুর রশিদ। রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ প্রযুক্তি এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিকূলতা নিয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ডিপার্টমেন্ট অব লাইফ সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাবরিনা মারিয়াম ইলিয়াস আলোচনা করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৌমিত্র চক্রবর্তী আলোচনা করেন ‘জীববিজ্ঞানের থিওরি অব এভরিথিং’ নিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক কাজী মুহাইমিন-আস-সাকিবের সেশনের নাম ছিল ‘ক্যামোফ্লেক: মেকিং ক্যামেস্ট্রি ফান অ্যান্ড ইন্টারেক্টিভ থ্রু ব্লেন্ডেড লার্নিং’। বায়োমলিকিউল বা জৈব অণুর উৎস ও কাজ নিয়ে আলোচনা করেন প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইসমাইল হোসেন। ‘মানবশরীর যখন দুর্গ’ শিরোনামে একটি সেশন নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক আদনান মান্নান। জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, পরিবেশদূষণ এবং এর ফলাফল নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ হাসীব মুহাম্মদ ইরফানউল্লা এবং ‘পৃথিবী বাঁচাই’ শিরোনামে সেশন নেন ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি ট্রান্সফারের ডিরেক্টর রেজাউল করিম।

চার দিনের এ অনলাইন কর্মশালা ক্যাম্পে অংশ নেয় প্রায় ১৬০ জন শিক্ষার্থী। জুনিয়র ক্যাটাগরি (৬ষ্ঠ-৮ম) এবং সিনিয়র ক্যাটাগরিতে (৯ম-১২শ) অংশ নেয় এসব শিক্ষার্থী। এ পর্বে জুনিয়র ক্যাটাগরিতে ৬টি এবং সিনিয়র ক্যাটাগরিতে ৭টি সেশন নেওয়া হয়। পাশাপাশি আয়োজিত হয় অনলাইন কুইজ ও অ্যাসাইনমেন্ট।

এ অনলাইন পর্ব থেকে বাছাইকৃত ৩০ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে শিগগিরই শুরু হবে অফলাইন ক্যাম্প। এ ক্যাম্পে থিওরির পাশাপাশি ল্যাবে হাতেকলমে শেখানো হবে এক্সপেরিমেন্ট, নেওয়া হবে ল্যাব ক্লাস। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন গবেষণাগার ঘুরিয়ে দেখানো হবে শিক্ষার্থীদের। পরে অফলাইন ক্যাম্প থেকে বাছাইকৃত শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে ফেলোশিপ। পাশাপাশি তারা পাবে দেশের স্বনামধন্য গবেষণাগারগুলোতে ইন্টার্নশিপের সুযোগ।

বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ আহমদ শামসুল ইসলাম। তাঁর নামেই এ আয়োজনের নামকরণ করা হয়েছে এ এস ইসলাম স্কুল অব লাইফ। তিনি বাংলাদেশে প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার ল্যাবরেটরি ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির (বিএপিটিসিবি) প্রতিষ্ঠাতা। পাটের দুটি জাত ‘তোষা’ ও ‘দেশি’-এর মধ্যে সংকরায়ণ ঘটিয়েছেন। শিক্ষা ও গবেষণায় অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ সরকারি সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।

‘স্কুল অব লাইফ’ যৌথভাবে আয়োজন করছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি, গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশি বায়োটেকনোলজিস্ট ও মাকসুদুল আলম সায়েন্স ল্যাবরেটরি (ম্যাসল্যাব)।