কিশোর গবেষকদের হাতে গবেষণা উপকরণ হস্তান্তর

চিলড্রেন রিসার্চ ফান্ডজয়ী শিক্ষার্থীরা

চিলড্রেন রিসার্চ ফান্ডের ৭ বিজয়ীর হাতে তুলে দেওয়া হলো গবেষণার নানা উপকরণ। গত ২২ মার্চ, শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাকসুদুল আলম বিজ্ঞানাগারে (ম্যাসল্যাব) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব উপকরণ হস্তান্তর করা হয়। পাশাপাশি সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় বিজয়ী এই শিক্ষার্থীদের।

বিজয়ী ৭ শিক্ষার্থীর ৫ জন মেয়ে ও ২ জন ছেলে। তাঁরা হলেন, রাজধানীর হলি ক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রত্যাশা রায়; সিলেটের গোলাম মোস্তফা চৌধুরী একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের মুনতাকা তাহসীন চৌধুরী ও সামীন দাইয়ান চৌধুরী; ঢাকার সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের জয়ীতা রায়; রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের নাহিয়ান পারিন; চট্টগ্রামের ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অপূর্বা চৌধুরী; সানিডেইল, ঢাকার আবরার জাহিন সুহাম এবং ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের এস এম তৈয়াব হোসাইন।

মুনতাকা তাহসীন গ্রামাঞ্চলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার কারণ নিয়ে গবেষণা করতে চায়। অপূর্বা আয়োডিনের ওপর তাপমাত্রার প্রভাব নিয়ে কাজ করবে। তৈয়াব আইওটিনির্ভর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে রোগীদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখতে চায়

বিজয়ী কিশোরদের গবেষণা প্রস্তাবে উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়। যেমন মুনতাকা তাহসীন গ্রামাঞ্চলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার কারণ নিয়ে গবেষণা করতে চায়। অপূর্বা আয়োডিনের ওপর তাপমাত্রার প্রভাব নিয়ে কাজ করবে। তৈয়াব আইওটিনির্ভর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে রোগীদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখতে চায়। প্রত্যাশা গবেষণা করতে চায় ক্যাকটাস লেদার নিয়ে। ওদিকে জয়ীতা রায় বুড়িগঙ্গার পানির গুণগত মান পরীক্ষা করার আইডিয়া জমা দিয়েছে। আর নাহিয়ান পারিন বাংলাদেশে প্রচলিত সৌরকোষগুলোর কর্মদক্ষতা মূল্যায়ণের লক্ষ্যে কাজ করবে। এরকম বৈচিত্রপূর্ণ নানা ধারণা ও প্রস্তাব পাওয়া গেছে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের গবেষণা প্রস্তাবনায়।

পুরস্কার হস্তান্তরের এ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও পরিচালক বি এম মইনুল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক খন্দকার সামাহের সালাম এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাশরাফি বিন মোবারক।

এ আলোচনায় বিজয়ী কিশোর গবেষকেরা জানতে পারে কীভাবে বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহ করতে হয়, গবেষণাপত্র লিখতে হয়, মাপজোক করতে হয় এবং প্রত্যাশিত ফলের সঙ্গে বাস্তব ফলের পার্থক্য বের করতে হয়

অনুষ্ঠানে অতিথিরা কিশোর গবেষকদের সঙ্গে নিজেদের গবেষণার অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেন। গবেষণাবিষয়ক নানা বিষয় উঠে আসে তাঁদের আলোচনায়। পাশাপাশি এই শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তাঁরা। এ আলোচনায় বিজয়ী কিশোর গবেষকেরা জানতে পারে কীভাবে বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহ করতে হয়, গবেষণাপত্র লিখতে হয়, মাপজোক করতে হয় এবং প্রত্যাশিত ফলের সঙ্গে বাস্তব ফলের পার্থক্য বের করতে হয়।

এর আগে, গত ডিসেম্বরে চিলড্রেন রিসার্চ ফান্ড প্রোগ্রামের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানে আগ্রহী করে তুলতেই এ উদ্যোগ। অনলাইনে গবেষণা প্রস্তাব জমা দেওয়ার মাধ্যমে এ ফান্ডের জন্য আবেদন করে শিক্ষার্থীরা।

দুই শর বেশি শিক্ষার্থী এ প্রকল্পে গবেষণাপত্র জমা দেয়। সেখান থেকে প্রাথমিকভাবে ৬০ জনকে বাছাই করা হয়। বাছাইকৃতরা দুটি কর্মশালায় অংশ নিয়ে গবেষণা প্রস্তাবনা লেখা শেখে। এরপর নিজেদের প্রস্তাবনা জমা দেয় বাজেটসহ। সেখান থেকে চূড়ান্ত এই সেরা ৭ কিশোর গবেষককে বিজয়ী নির্বাচন করা হয়।

এ প্রকল্প যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি (এসপিএসবি) ও মাকসুদুল আলম বিজ্ঞানাগার (ম্যাসল্যাব)।