ষষ্ঠ রাধাগোবিন্দ চন্দ্র স্মারক বক্তৃতার আয়োজনের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো বিগ ডেটার জ্যোতির্বিজ্ঞানবিষয়ক কর্মশালা। ২৪ নভেম্বর, রোববার ঢাকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এ কর্মশালা আয়োজিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও গবেষক সৈয়দা লামমীম আহাদ এবং রুসলান ব্রিলেনকোভ।
লামমীম আহাদ বর্তমানে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলুর ওয়াটারলু সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সে পোস্টডক্টরাল ফেলো হিসেবে কাজ করছেন। আর নেদারল্যান্ডসের ইউনিভার্সিটি অব খ্রোনিঙ্গেনের ক্যাপ্টেইন অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইন্সটিটিউটের পিএইচডি গবেষক হিসেবে কাজ করছেন রুসলান ব্রিলেনকোভ। এ কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎকৌশল ও ইলেকট্রনিকস বিভাগের অধ্যাপক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী।
‘রাধাগোবিন্দ চন্দ্র ৩৫ বছর পরিশ্রম করে প্রায় ৩৭ হাজার শেফালী বিষম তারা পর্যবেক্ষণ করেন।'
মোট দুই অংশে জ্যোতির্বিজ্ঞানে বিগ ডেটার ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেন দুই জ্যোতির্বিজ্ঞানী। প্রথম অংশে লামমীম আহাদ মহাবিশ্বের জটিল প্রশ্নগুলোর সংক্ষেপে উত্তর দেন। ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জির প্রকৃতি, গ্যালাক্সির বিবর্তন এবং বহির্জাগতিক জীবনের সম্ভাবনা নিয়ে তিনি আলোচনা করেন। পাশাপাশি জ্যোতির্বিজ্ঞানে রাধাগোবিন্দ চন্দ্রের কাজের গুরুত্ব বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘রাধাগোবিন্দ চন্দ্র ৩৫ বছর পরিশ্রম করে প্রায় ৩৭ হাজার শেফালী বিষম তারা পর্যবেক্ষণ করেন। এখন প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে। ফলে এ কাজ এখন এক রাতেই করার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু বিংশ শতাব্দীতে তাঁর এ কাজ সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ’।
বক্তব্যের দ্বিতীয় অংশে বিগ ডেটার কার্যকরী ব্যবহারের ওপর আলোকপাত করেন ব্রিলেনকোভ। বিগ ডেটার চারটি বৈশিষ্ট্য—ভলিউম, ভ্যারাইটি, ভেলোসিটি এবং ভেরাসিটির সাহায্যে কীভাবে মহাকাশ জরিপ করা হয়, তা সংক্ষেপে বর্ণনা করেন।
দুই বক্তার বক্তব্য শেষে সাধারণ মানুষের জন্য ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। কীভাবে এসব ডেটা ব্যবহার করে গবেষণা করা যায়, বিদেশে পড়তে গেলে কীভাবে পড়াশোনা করতে হয়, মহাবিস্ফোরণের আগে মহাবিশ্বের অবস্থা কেমন ছিল—এমন নানা প্রশ্ন করেন অংশগ্রহণকারীরা। তাঁদের প্রশ্নের উত্তর দেন লামমীম আহাদ।
উপমহাদেশের অন্যতম বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ রাধাগোবিন্দ চন্দ্রের জীবন ও তাঁর অমূল্য অবদানের স্মরণে বাংলাদেশ ২০০৯ সাল থেকে এ বক্তৃতার আয়োজন। বিগ ডেটার জ্যোতির্বিজ্ঞানবিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করে বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি (এসপিএসবি) ও বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি। এই আয়োজনের শুরুতে রাধাগোবিন্দ চন্দ্রকে স্মরণ করে তাঁর জীবনী পাঠ করা হয়।