অস্ট্রেলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ: সেরা দশে বাংলাদেশের টিম অ্যাটলাস

অস্ট্রেলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ ২০২৪-এ নবম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশের টিম অ্যাটলাস। বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী রোভারের মর্যাদা পেয়েছে তাদের তৈরি অ্যাটলাস মার্স রোভার। চলতি বছর বিশ্বের ১৪টি দল এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় বাংলাদেশ। ২১-২৪ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত হয় এ প্রতিযোগিতা।

এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ১১ সদস্যের দল টিম অ্যাটলাস। দলনেতা হিসেবে আছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানি জুবায়ের ও জান্নাতুল ফেরদৌস ফাবিন এবং টিম ম্যানেজার হিসেবে আছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহতাব নেওয়াজ। দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিহাব আহমেদ, মো. আদহাম ওয়াহিদ ও  মোহাম্মদ সাদমান ওয়াসিফ, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) নুর হোসেন আসিফ, বিএএফ শাহীন কলেজ কুর্মিটোলার শিক্ষার্থী মো. তানজীর আরাফাত, দাউদ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আতিক শাহারিয়ার হাসান, ঢাকা বিশ্বিদ্যালয়ের মো. ফাহিম শাহরিয়ার ও বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকার শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মেহরান ইসলাম।

অ্যাটলাস মার্স রোভার
অস্ট্রেলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ অন্যতম সম্মানজনক মার্স রোভারভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ১১ সদস্যের দল টিম অ্যাটলাস।

অস্ট্রেলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ অন্যতম সম্মানজনক মার্স রোভারভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। দূর-নিয়ন্ত্রিত ও স্বয়ংক্রিয় যেসব রোবট মঙ্গলপৃষ্ঠে ঘুরে বেড়াতে পারে, প্রয়োজনীয় গবেষণার পাশাপাশি বার্তা পাঠাতে পারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে, সেগুলোই মঙ্গলযান বা মার্স রোভার। নাসার তৈরি এরকম দুটি বিখ্যাত মার্স রোভার কিউরিওসিটি ও পারসিভিয়ারেন্স। বার্ষিক এ রোবটিকস প্রতিযোগিতায় সারা বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন মঙ্গলযান নিয়ে আসেন। এ নভোযানের বাজেট থাকে ১৫০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার। তারপর তাঁরা মেতে ওঠেন সত্যিকার চন্দ্রাভিযানের মতো মিশন সম্পন্ন করার প্রতিযোগিতায়। সিমুলেটেড চন্দ্র-পরিবেশে দিক ঠিক করে চলাচল, গন্তব্য খোঁজা, বিভিন্ন রিসোর্স খুঁজে বের করাসহ বেশ কিছু কাজ করতে হয় এতে। এই পর্বটিই অনুষ্ঠিত হয় গত ২১-২৪ মার্চ, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডিলেডে। এখানেই নবম হয়েছে টিম অ্যাটলাস।

টিম অ্যাটলাস

এর আগে, অস্ট্রেলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ ২০২৪-এর সিলেকশন রাউন্ডের প্রথম ধাপে টিম অ্যাটলাসকে রোভার ডিজাইন ও কার্যপ্রণালী এবং গবেষণাপত্র জমা দিতে হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ডিজাইন অনুযায়ী রোভার তৈরি, ফিল্ড টেস্টে অংশ নেওয়া এবং ভিডিও রিপোর্ট জমা দিতে হয়েছে। ফিল্ড টেস্টে ‘বেস স্টেশন’ থেকে রিমোটের মাধ্যমে রোভার নিয়ন্ত্রণ করে নিয়ে যেতে হয়েছে নির্দিষ্ট গন্তব্যে। সে জন্য রোভারটি চালাতে হয়েছে বিভিন্ন ধরনের পৃষ্ঠে। রোভারের বাহুর মাধ্যমে তুলে নিতে হয়েছে প্রয়োজনীয় নানা জিনিস, পাঠাতে হয়েছে নির্দিষ্ট স্থানে। এ ছাড়াও রোভারের ক্যামেরা, নাইট ভিশন, বিশেষ ধরনের চাকার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে রোভার চার্জ করাসহ বেশ কিছু পরীক্ষা দিতে হয়েছে।

এই প্রতিযোগিতার পার্টনার হিসেবে ছিল বিশ্বের অন্যতম বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং, অস্ট্রেলিয়া সরকার, অস্ট্রেলিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা—অস্ট্রেলিয়ান স্পেস এজেন্সি, অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে চন্দ্রযান বা লুনার রোভারের ডিজাইনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইএলও২সহ খ্যাতনামা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান।

টিম অ্যাটলাসের সঙ্গে ম্যাগাজিন পার্টনার হিসেবে রয়েছে বিজ্ঞানবিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা।