আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডে রাশিয়া যাচ্ছে বাংলাদেশের ৬ শিক্ষার্থী
আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডে (আইজেএসও) রাশিয়া যাচ্ছে বাংলাদেশের ছয় শিক্ষার্থী। আগামী ২৩ নভেম্বর রাশিয়ার সোচিতে আয়োজিত ২২তম আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডে এই শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। এ উপলক্ষে ২০ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় সোনারগাঁও প্যান প্যাসিফিক হোটেলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এ সম্মেলনে অতিথি হিসাবে ছিলেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির সভাপতি মুনির হাসান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী ও আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জালাল আহমেদ।
২২তম আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের জন্য বাছাইকৃত শিক্ষার্থীরা হলো বাংলাদেশ সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবরার জাহিন পাঠান, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী বিহান পাল, চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের আহনাফ আহমেদ সিনান, গলগথা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী এইচ এম আজিজুর রহমান আলিফ, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাশওয়ান হক মাহির এবং যশোর পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রুফফা নূর জারিয়াহ।
এই দলের সঙ্গে বাংলাদেশ দলের প্রধান দলপতি হিসেবে যাবেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, সহকারী দলনেতা হিসেবে আছেন বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের কো-অর্ডিনেটর মো. রেজাউল ইসলাম ও একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর মোর্শেদা আক্তার মীম। পর্যবেক্ষক হিসেবে যাচ্ছেন মুহম্মাদ জাকারিয়া পাঠান।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী বলেন, ‘অভিভাবকদের ধন্যবাদ, শিক্ষার্থীদের এভাবে উৎসাহী করার জন্য। তাঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। পদক বড় কথা নয়, অংশগ্রহণই আসল। তবে স্বর্ণপদক পেতে আমাদের আঁটঘাট বেধে নামতে হবে। সে জন্য আমাদের আবাসিক ক্যাম্পের প্রতিও জোর দিতে হবে।’
জালাল আহমেদ বলেন, ‘পদক পাওয়া কঠিন কিছু নয়। তোমাদের লেভেলের সিনিয়ররা পদক পেয়েছে। পুরো বিষয়টা সহজভাবে নিলেই স্বর্ণপদক আসবে। তোমরাই ১৮ কোটি মানুষের প্রতিনিধি। তোমাদের মাধ্যমে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক দেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে পারছে।’
সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ দল বুদ্ধির লড়াইয়ে অবতীর্ণ করতে যাচ্ছে। স্বর্ণপদক আমরা পেতে পেতেও পাচ্ছি না। এই পদকের আশায় আমরা প্রতিবছর একটু একটু করে ভালো করছি।’
এর আগে বিভিন্ন ধাপে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই ছয় শিক্ষার্থী বাছাই করা হয়েছে। চলতি বছর জুলাই মাস থেকে শুরু হয় বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের ১১তম আসর। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয় অনলাইন বাছাই পর্ব। ৬টি আঞ্চলিক পর্ব, একটি ই-অলিম্পিয়াড, ১০টি উপজেলা পর্যায়ে স্কুল অলিম্পিয়াড শেষে ঢাকায় আয়োজিত হয় জাতীয় পর্ব ও ক্যাম্প। সেখান থেকে বাছাই করা হয় ছয় সদস্যের বাংলাদেশ দল।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডে প্রথমবার অংশগ্রহণ করে ব্রোঞ্জ পদক পায় বাংলাদেশ। প্রতি বছরের মত এবছরেও আইজেএসওর পৃষ্ঠপোষকতা করছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। অলিম্পিয়াডের জন্য বাংলাদেশ দল নির্বাচন করে যৌথভাবে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি ও বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন। প্লাটিনাম স্পন্সর হিসেবে ছিল আইইউবিএটি। সহযোগী হিসাবে রয়েছে ম্যাসলাব ও রকমারি। ম্যাগাজিন পার্টনার মাসিক কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তা।