বিশ্বমঞ্চে স্বর্ণপদক পেল বাংলাদেশের টিম অটোমর্ফ

স্বর্ণপদকজয়ী দলের সদস্যরা পদক হাতে

ইন্দোনেশিয়া ইন্টারন্যাশনাল ইনভেনশন এক্সপো (IIIEX) ২০২৫-এ স্বর্ণপদক জয় করেছে বাংলাদেশি তরুণ উদ্ভাবক দল অটোমর্ফ। গত ৮-১১ আগস্ট ইন্দোনেশিয়ায় আয়োজিত হয় বৈশ্বিক উদ্ভাবনের এই মহাযজ্ঞ। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ২৭০টির বেশি দল অংশ নেয়। রোবট ‘রক্ষ-বট’ তৈরি করে এতে স্বর্ণপদক জয় করেছে বাংলাদেশের টিম অটোমর্ফের তরুণ শিক্ষার্থীরা। শুধু তাই নয়, বিশেষ স্বীকৃতি হিসেবে তারা মালয়েশিয়া ইনোভেশন ইনভেনশন ক্রিয়েটিভিটি অ্যাসোসিয়েশনের বিশেষ পুরস্কারও পেয়েছে।

দলের শিক্ষার্থীরা নিজেদের পুরস্কার নিয়ে উচ্ছ্বসিত। তাঁরা বলেন, ‘ছোটবেলায় বাংলাদেশের যে পতাকা খাতায় আঁকতাম, আজ সেই পতাকা বিশ্বমঞ্চে উঁচু করে প্রদর্শন করতে পেরে আমরা গর্বিত।'

টিম অটোমর্ফের তৈরি রোবটটি এ প্রতিযোগিতায় বাস্তবসম্মত ও মানবকল্যাণে নিবেদিত প্রকল্প হিসেবে সবার নজর কাড়ে। এই রোবটের নাম রাখা হয়েছে বাংলা ‘রক্ষা’ শব্দের অনুকরণে। নাম শুনেই বোঝা যায়, এটি তৈরি করা হয়েছে সুরক্ষা ও প্রতিরক্ষার জন্য। রোবটটি বিপজ্জনক পরিবেশে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে পারে, ঝুঁকি শনাক্ত করতে পারে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সিদ্ধান্তও নিতে পারে। এর মধ্যকার রোবোটিক আর্ম বা বাহু বিপজ্জনক বস্তু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। পাশাপাশি ভেতরে থাকা ড্রোন সিস্টেম মুহূর্তেই আকাশে উঠে পর্যবেক্ষণ করতে পারে চারপাশের পরিস্থিতি। এ ছাড়াও এই রোবটে রয়েছে নাইট ভিশন, সৌরশক্তি এবং মাল্টিচ্যানেল যোগাযোগ ব্যবস্থা।

ছোটবেলায় বাংলাদেশের যে পতাকা খাতায় আঁকতাম, আজ সেই পতাকা বিশ্বমঞ্চে উঁচু করে প্রদর্শন করতে পেরে আমরা গর্বিত।
—টিম অটোমর্ফ
রক্ষবটের প্রদর্শনী

রক্ষ-বটের মূল উদ্ভাবক ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. ইযহার হোসেন এবং মিরাজাম মুনীর, ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী মো. ফাতিন নুর ও লিয়ন এবং রয়। এই শিক্ষার্থী দলের সুপারভাইজার হিসাবে ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মির্জা রাশেদুজ্জামান।

আরও পড়ুন

অটোমর্ফ দলের দলনেতা মো.ইযহার হোসেন তাঁদের রোবট সম্পর্কে বিজ্ঞানচিন্তাকে বলেন, ‘রক্ষ-বটকে আমরা বিভিন্ন বিপজ্জনক পরিবেশে সহচর হিসেবে কল্পনা করেছি। যেখানে মানুষের প্রবেশ ঝুঁকিপূর্ণ, সেখানে রক্ষ-বট গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারবে।’

ইন্দোনেশিয়া ইন্টারন্যাশনাল ইনভেনশন এক্সপো (IIIEX) ২০২৫ আয়োজন করেছে ইন্দোনেশিয়ান ইয়াং সায়েন্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (IYSA)। ইন্দোনেশিয়ার পলিটেকনিক নেগেরি সেমারাংয়ের সহযোগিতায় তারা এ আয়োজন করে।

বাংলাদেশের টিম অটোমর্ফ এর আগেও আন্তর্জাতিক আইওটি অলিম্পিয়াডে রৌপ্য পদক জিতেছিল। এবারের এ প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জয় করে তারা আবারও প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশি উদ্ভাবকেরা বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভবিষ্যতের প্রযুক্তি গড়ে তুলতে পারবে।