অনুষ্ঠিত হলো খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তাবিষয়ক গোলটেবিল বৈঠক

Ashraful Alam (Tito)

খাদ্য-পুষ্টি নিরাপত্তা বিষয়ক এক বিশেষ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।

২৮ জুন ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশের রাজধানীর প্রথম আলোর কার্যালয়ে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সরকারি ও বেসরকারি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির প্রধান বিশেষজ্ঞ, উন্নয়ন অংশীদারেরা এই অনুষ্ঠানে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশে কৃষিতে জীবপ্রযুক্তির তাৎপর্য তুলে ধরে খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করার লক্ষ্য অর্জনে কৃষি উদ্ভাবন সম্পর্কে মতামত ব্যক্ত করেন বিশেষজ্ঞরা।

বৈঠকে কৃষিতে জীবপ্রযুক্তি সর্ম্পকে ধারণা এবং সংশ্লিষ্ট নীতিসহ টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রমাণ-ভিত্তিক জ্ঞান এবং তথ্যনির্ভর নীতি প্রণয়ণে ওপর জোর দেওয়া হয়। সাউথ এশিয়ান বায়োসেফটি প্রোগ্রামের কান্ট্রি হেড ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রাখ হরি সরকার প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন। তাতে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার যেভাবে বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে না। তাই বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। প্রতিকূল এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৃষি জীবপ্রযুক্তিতে এখনই বিনিয়োগ করা প্রয়োজন।’

অ্যালায়েন্স ফর সায়েন্সেস অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর অব পলিসি অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফের্য়াস গ্রেগরি জেফ বিশ্বব্যাপী বর্তমান বায়োটেক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন নিজের দেশের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাইরেও রপ্তানী করছে। কিন্তু কৃষি অবকাঠামোতে আরও উন্নয়নের সুযোগ আছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম বলেন, ‘কৃষিতে অর্জিত সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে এবং লাগসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ কৃষকের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য কৃষিতে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি গ্রহণ ও এর সম্প্রসারণ ওপর নির্ভর করে দেশের খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্যনিরাপত্তা। এ জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা জরুরি।’

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীর। তিনি বলেন, ‘দেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে কৃষিখাত সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। সকলের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং দারিদ্র্যবিমোচন করতে কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যাবহার এখন সময়ের দাবি। আর বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতে উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে দেশের খাদ্য চাহিদা আগে মেটাতে হবে।’

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং কৃষি জমির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক এবং ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন করতে এবং দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে অন্যান্য কৃষি উদ্ভাবনের পাশাপাশি কৃষিপ্রযুক্তি ব্যপকভাবে প্রয়োগ করা জরুরি।’

বৈঠকের শেষ পর্যায়ে, অংশগ্রহণকারীরা উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে, বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি উদ্ভাবন ও টেকসই কৃষি ব্যবস্থার কার্যকরী উপায় নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় গোলটেবিল আলোচনায়।