ঠোঁটের রং লাল হয় কেন

মানবদেহের সংবেদনশীল অঙ্গের মধ্যে ঠোঁট অন্যতম। গবেষকদের মতে, হাতের নরম আঙুলের ডগার চেয়ে ঠোঁট একশ গুণ বেশি স্পর্শকাতর। এই ঠোঁটের লাল রং স্বাভাবিকভাবেই নজর কাড়ে। আর একে পুঁজি করে ঠোঁটে রং করার প্রসাধনীরও অভাব নেই বাজারে। এ প্রসাধনীকে আমরা লিপস্টিক বা অধররঞ্জনী নামে চিনি (যদিও লিপস্টিকের সোজা বাংলা অর্থ ঠোঁটের কাঠি)। তবে এসব রাসায়নিক রঙে সাময়িকভাবে ঠোঁট রাঙা হলেও ক্ষতির পরিমাণই বেশি।

তবে শুধু সৌন্দর্যই নয়, মানুষসহ অন্যান্য অনেক প্রাণী এই ঠোঁটের মাধ্যমে ভাব বিনিময়ও করে। হাসি, রাগ, ঘৃণা, ভালোবাসা, আদর—সব ওই ঠোঁটেই বোঝা যায়। ছোট বাচ্চারা ব্যথা পেলে মা যখন সেখানে ঠোঁট দিয়ে চুমু দেন, তখন ব্যথা কোথায় উবে যায়! আর ভেংচি কাটতে ঠোঁট তো লাগেই। প্রাণখোলা নির্মল হাসি হাসতেও লাগে ওই ঠোঁট।

স্বাভাবিকভাবে মানুষের ঠোঁট দেহের অন্য জায়গার তুলনায় একটু বেশি লাল। এর পেছনে রয়েছে রক্তনালীর ভূমিকা। আমাদের ঠোঁটের পাতলা চামড়ার নিচ দিয়ে অসংখ্য সরু রক্তনালী চলে গেছে। এসব রক্তনালীর মধ্যে আছে ধমনী ও শিরা। অনেকেই হয়তো জানেন, ধমনী ফুসফুস থেকে বিশুদ্ধ রক্ত বহন করে হৃৎপিণ্ডে নিয়ে যায়। আর শিরা হৃৎপিণ্ড থেকে দুষিত রক্ত বয়ে নিয়ে আসে ফুসফুসে। এসব ধমনী ও শিরা এক ধরনের রক্তনালীর সঙ্গে যুক্ত থাকে, যাকে বলা হয় ক্যাপিলারি বা কৈশিক নালিকা। কৈশিক নালিকায় সবসময় লাল রঙের রক্ত প্রবাহিত হয়। এ কারণে দেহের এসব অংশ দেখতেও লাল রঙের হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ঠোঁটের পাতলা চামড়ার নিচেই এই কৈশিক নালিকা থাকে। আর পাতলা চামড়ার কারণেই ঠোঁটের নিচের কৈশিক নালিকার লাল রঙে ঠোঁটও লাল দেখা যায়।

কী বোঝা গেল তো ব্যাপারটা?