আজ নোবেল পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে চলতি বছরের বিজয়ীদের হাতে। সুইডেনের রাজধানী স্টকমহোমের স্টকহোম কনসার্ট হলে ১০ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময়ে রাত ৯টায় আয়োজিত হবে এ অনুষ্ঠান। এ সময় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান ও শারীরতত্ত্ব, সাহিত্য এবং অর্থনীতিতে নোবেল জয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন সুইডেনের বর্তমান রাজা রাজা ষোড়শ কার্ল গুস্তাভ। এর তিন ঘণ্টা আগে, সন্ধ্যা ৬টায় শান্তিতে নোবেল জয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
চলতি বছরের নোবেল পুরস্কারে ছিল নতুনের সুর। সবাইকে চমকে দিয়ে নতুন দিনের, নতুন ধাঁচের বিজ্ঞানের জয়গান গেয়ে এবারে পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে মেশিন লার্নিং গবেষণায়। যন্ত্রের শেখার পদ্ধতিই মেশিন লার্নিং। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক গবেষণার দুই অগ্রপথিক মার্কিন বিজ্ঞানী অধ্যাপক জন হপফিল্ড ও কানাডিয়ান বিজ্ঞানী অধ্যাপক জেফরি হিন্টনকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। একই সুর দেখা গেছে রসায়নে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন ও প্রোটিনের গঠন অনুমানে যুগান্তকারী সাফল্যের জন্য নোবেল দেওয়া হয়েছে মার্কিন বিজ্ঞানী ডেভিড বেকার, ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ডেমিস হাসাবি ও মার্কিন বিজ্ঞানী জন জাম্পারকে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নেই বটে, তবে নতুন দিনের ছাপ স্পষ্ট। মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার ও জিন গবেষণায় বিপ্লবের জন্য এ শাখায় নোবেল পেয়েছেন দুই মার্কিন বিজ্ঞান ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন।
এ ছাড়া সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার কথাসাহিত্যিক হান কাং। আর অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) অধ্যাপক ড্যারন আসেমোগলু ও সিমন জনসন এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেমস এ রবিনসন। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে জাপানের নিহন হাদানকায়ো সংস্থাকে। পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে ও পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহ পরিণতি বিশ্ববাসীর নজরে আনতে সংস্থাটির অবিরাম প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসাবে দেওয়া হয়েছে এ পুরস্কার।
সাধারণত এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা দেন নোবেল ফাউন্ডেশন বোর্ডের চেয়ারম্যান। বর্তমান চেয়ারম্যান অস্ট্রিড সোডারবার্গ উইডিং আজ এ স্বাগত বক্তব্য দেবেন (যদিও এ ব্যাপারে নোবেল প্রাইজের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি)।
প্রতিবছর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুদিবসে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় বিজয়ীদের হাতে। চলতি বছর প্রত্যেক বিভাগের নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীরা পাবেন একটি নোবেল মেডেল, একটি সনদপত্র এবং মোট ১১ মিলিয়ন বা ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা। ২০২৩ সালে নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য ১০ মিলিয়ন ক্রোনা থেকে বাড়িয়ে ১১ মিলিয়ন করা হয়েছে। যেসব বিভাগে একাধিক নোবেলজয়ী রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এই ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা ভাগ হয়ে যাবে। বর্তমান বাজারে এর মান প্রায় ১০ লাখ ৬৭ হাজার মার্কিন ডলার, বাংলাদেশী টাকায় হবে প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকার মতো!