কপার নামটি যেভাবে পেলাম

নতুন কিছু আলাদাভাবে চিহ্নিত করাসহ নানা কারণেই নাম দিতে হয়। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও কথাটি সত্য। এসব নামের পেছনেও লুকিয়ে থাকে মজার ইতিহাস

রসায়নবিদেরা তামাকে কপার নামে ডাকেন। যিশুখ্রিষ্টের জন্মের প্রায় ৫ হাজার বছর আগে থেকেই মানুষ তামার সঙ্গে পরিচিত। অনেকের মতে এ ধাতুর সঙ্গে মানুষের পরিচয় খ্রিষ্টপূর্ব ৮ হাজার বছর আগে। খ্রিষ্টপূর্ব আড়াই হাজার বছর আগে তামার সঙ্গে টিন মিশিয়ে সংকর ধাতু ব্রোঞ্জ তৈরির পদ্ধতি শেখে মানুষ। ইতিহাসে সে যুগটির নাম ব্রোঞ্জ যুগ। ব্রোঞ্জ তৈরির পদ্ধতি শিখে মানুষ পাথরের তৈরি যন্ত্রপাতি ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছিল।

ইংরেজিতে কপার (Copper) নামটি এসেছে লাতিন নাম কিউপ্রাম (Cuprum) থেকে। কিউপ্রামের উত্পত্তি সাইপ্রাস (Cyprus) থেকে। কারণ প্রাচীনকালে সাইপ্রাস দ্বীপের তামাখনিগুলো ছিল বিখ্যাত, যেগুলো ছিল রোমান সাম্রাজ্যের তামার প্রধান জোগানদাতা।

বিশুদ্ধ তামা উজ্জ্বল ও চকচকে। কিন্তু তামাকে অনেক দিন খোলা বাতাসে ফেলে রাখলে ধীরে ধীরে তাতে হালকা সবুজ স্তর পড়ে। সবুজ এ স্তরকে বলে প্যাটিনা। এটা আসলে বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে তামার রাসায়নিক বিক্রিয়ার (অক্সিডেশন) কারণে হয়ে থাকে। ঠিক একই কারণে লোহাকে বেশি দিন বাতাসে ফেলে রাখলে তাতে মরিচা ধরে। তামার অক্সিডেশন বিক্রিয়ায় কপার কার্বনেট নামের কপার লবণ তৈরি হয়। এ লবণের রংও সবুজ। এই প্যাটিনা স্তরের কারণে স্তরের নিচের কপার নষ্ট হয় না। তামার এই গুণের কারণে অনেক দেশে তামা দিয়ে বাড়ির ছাদ মুড়ে দেওয়া হয়। ফলে এসব বাড়ির ছাদ দেখতে সবুজ রঙের হয়। অনেকে হাতে তামার আংটি বা বালা পরেন। সেগুলোতেও সবুজ দাগ পড়তে দেখা যায়। আসলে আমাদের দেহ থেকে যে ঘাম বের হয় তা অ্যাসিডিক বা অম্ল্লীয় গুণসম্পন্ন। এই অ্যাসিডের সংস্পর্শে তামা লাগলেও তা সবুজ রং ধারণ করে। আবার তামার কারণেই নিম্নশ্রেণির কিছু প্রাণীর (যেমন: শামুক, চিংড়ি, বিছা) রক্তের রং সবুজ হয়। কারণ তাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিবর্তে থাকে হিমোসায়ানিন