ইন্টারনেট থেকে উধাও ২০ লাখের বেশি গবেষণাপত্র

ছবি: নেচার

সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, ইন্টারনেট থেকে প্রায় ২০ লাখের বেশি গবেষণাপত্র উধাও হয়ে গেছে। ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ এ প্রসঙ্গে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জার্নাল অব লাইব্রেরিয়ানশিপ অ্যান্ড স্কলারলি কমিউনিকেশন।  

এতে বলা হয়েছে, অনলাইনে গবেষণাপত্র সংরক্ষণের পদ্ধতিগুলো আধুনিক গবেষণার সঙ্গে তাল মেলাতে ব্যর্থ হয়েছে। এ ব্যাপারে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের গবেষক মার্টিন ইভ বলেন, ‘কখন কে কী বলেছেন, তা যাচাই করতে না পারলে আপনাকে কোনো জিনিস অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে হবে। কারণ আপনি নিজে গবেষণাপত্র পড়তে পারবেন না।’ 

প্রতিষ্ঠানটি ৭৪ লাখ ৩৮ হাজার ৩৭টি গবেষণা পত্রের ডিজিটাল অবজেক্ট আইডিন্টিফায়ারস (ডিওআইএস) যাচাই করে দেখেছেন।

কিন্তু তাঁরা কীভাবে বুঝলেন, প্রায় ২০ লাখ গবেষণাপত্র অনলাইন থেকে উধাও হয়েছে? আসলে ডিজিটাল অবকাঠামোবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ক্রসরেফ এটা অনুসন্ধান করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ৭৪ লাখ ৩৮ হাজার ৩৭টি গবেষণা পত্রের ডিজিটাল অবজেক্ট আইডিন্টিফায়ারস (ডিওআইএস) যাচাই করে দেখেছেন। ডিওআইএস হলো সংখ্যা, অক্ষর ও প্রতীকের সাহায্যে তৈরি একটি অনন্য চিহ্ন যা নির্দিষ্ট প্রকাশনাগুলো শনাক্ত করতে পারে। ডিওআইএস আছে এমন গবেষণাপত্রগুলো খোঁজার চেষ্টা করেছে কোম্পানিটি। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল অবজেক্ট আইডিন্টিফায়ারস কোম্পানি।

এই ৭৪ লাখ গবেষণাপত্র থেকে কোম্পানিটি দৈবচয়নের ভিত্তিতে ১ হাজার গবেষণাপত্র বাছাই করে। পরে সেগুলো ইন্টারনেটে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। কিন্তু সবগুলো খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই ১ হাজার গবেষণাপত্রের ২৮ শতাংশ অনলাইনে পাওয়া যায়নি। তবে ৫৮ শতাংশ তাঁরা সহজেই খুঁজে পেয়েছেন। আর বাকি ১৪ শতাংশ গবেষণাপত্র এই তালিকা থেকে কোম্পানিটি বাদ দিয়েছে। কারণ এগুলোতে এখনো ডিওআইএস ট্যাগ লাগানো হয়নি। ওগুলো অল্পদিন আগেই প্রকাশিত হয়েছে। 

এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। হেলসিংকির হ্যানকেন স্কুল অব ইকোনমিক্সের মিকায়েল লাকসো বলেন, ‘অনেকের ধারণা, কোনো গবেষণাপত্রে ডিওআইএস ট্যাগ থাকলে সেটা চিরকাল টিকে থাকবে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, লিংকটি সবসময় কাজ করবে।’ তাঁর এই কথার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ২০২১ সালে লাকসো ও তাঁর সহকর্মীরা রিপোর্ট করেন ২০০০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ১৭০টির বেশি ওপেন অ্যাকসেস জার্নাল ইন্টারনেট থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছে। 

নিউইয়র্ক সিটির ডিজিটাল আর্কাইভিং সার্ভিস পোর্টিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেট উইটেনবার্গ সতর্ক করে বলেছেন, ‘বড় প্রকাশকদের তুলনায় ছোট প্রকাশকদের গবেষণাপত্র বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই আমাদের এখনই সচেতন হওয়া উচিৎ।’

লেখক: সদস্য, সম্পাদনা দল, বিজ্ঞানচিন্তা

সূত্র: নেচার ডট কম