প্রশ্ন করা থামিয়ো না

প্রশ্ন করতে থাকো এবং প্রশ্নের সঠিক উত্তর খোঁজো। প্রশ্ন করা থামিয়ো না।

সুকেশ রায়, সিইও ও গবেষক, স্পেকট্রাল এনার্জি, যুক্তরাষ্ট্র

সুকেশ রায়। যুক্তরাষ্ট্রের স্পেকট্রাল এনার্জি নামের কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, উদ্যোক্তা ও গবেষক। নারায়ণগঞ্জে জন্ম নেওয়া এই গবেষক বুয়েট থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকের পর চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। ফ্লোরিডার ইউনিভার্সিটি অব হিউস্টোনে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডির পর গবেষক ও উদ্যোক্তা হিসেবে শুরু করেন নতুন জীবন। তাঁদের প্রতিষ্ঠান কাজ করছে লেজার সেন্সর টেকনোলজি নিয়ে। তাঁদের তৈরি কার্স প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে নাসাসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। সম্প্রতি দেশে এসেছিলেন এই গবেষক ও উদ্যোক্তা। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন বিজ্ঞানচিন্তার নির্বাহী সম্পাদক আবুল বাসার ও সহসম্পাদক আবদুল গাফফার

প্রশ্ন :

বিজ্ঞানচিন্তা: কেমন আছেন?

সুকেশ রায়: ভালোই আছি। অনেক দিন পর দেশে এলাম। বাড়তি একটা ভালো লাগা কাজ করবেই।

প্রশ্ন :

বিজ্ঞানচিন্তা: এই মুহূর্তে কী নিয়ে গবেষণা করছেন?

সুকেশ রায়: আমাদের গবেষণার মূল বিষয় হলো সেন্সর টেকনোলজিতে লেজার ও লাইট ব্যবহার। আমাদের উদ্ভাবিত এই সেন্সর টেকনোলজি চরম প্রতিকূল পরিবেশেও ব্যবহার উপযোগী। এর সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম উপাত্ত বিভিন্ন সংখ্যা সূচক মডেলের বৈধতা যাচাইয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। এখনকার ইনফ্রারেড থার্মোমিটারের কথাই ভাবুন। আগে আমরা সাধারণ থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা মাপতাম। এতে বেশ কিছুক্ষণ সময় লাগে। তারপরও সূক্ষ্ম মাপটা পাই না। কিন্তু ইনফ্রারেড থার্মোমিটার দিয়ে যদি তাপমাত্রাটা মাপা হয়, তাহলে মুহূর্তেই লক্ষবস্তুকে স্পর্শ না করেই সূক্ষ্মভাবে তাপমাত্রা মেপে ফেলতে পারি। আমাদের উদ্ভাবিত সেন্সর টেকনোলজিও অনেকটা এ রকম। এটা প্রতিকূল পরিবেশে শুধু তাপমাত্রাই নয়, বরং অনন্য প্রবহমান ধ্রুবক যেমন চাপ, বেগ এবং বিভিন্ন অণু ও পরমাণুর ঘনত্ব—এগুলোর নিজ নিজ প্রবাহে বাধা সৃষ্টি না করেই সূক্ষ্মভাবে পরিমাপ করতে সক্ষম।

আমাদের লেজার ও লাইটভিত্তিক সেন্সর সিষ্টেম ব্যবহার করে ইঞ্জিন এবং যেকোনো প্রপালশন সিস্টেমের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভবিষ্যৎ আকস্মিক বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব।

প্রশ্ন :

বিজ্ঞানচিন্তা: আপনাদের তৈরি সেন্সরটা কোন কোন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বা ভবিষ্যতে কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে, জানাবেন কি?

সুকেশ রায়: এটা এখন বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে প্রপালশন সিস্টেমে, গ্যাস টারবাইনে, উড়োজাহাজ, এমনকি রকেটেও। আমরা নাসার জন্যও কিছু কাজ করেছি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারফোর্স, সিভিল ডিফেন্স এবং কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্যও কাজ করছি।

প্রশ্ন :

বিজ্ঞানচিন্তা: আপনাদের প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রাল এনার্জি কী ধরনের কোম্পানি আর কী ধরনের কাজ করে? প্রশাসক ও বিজ্ঞানী হিসেবে কোম্পানিতে আপনার ভূমিকা ঠিক কতটা?

সুকেশ রায়: স্পেকট্রাল এনার্জি একটি উদীয়মান গবেষণাভিত্তিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। কোম্পানিটির প্রধান ফোকাস হলো বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক এবং প্রকৌশলের বিস্তৃত এলাকায় উদ্ভাবনী সমস্যার সমাধান নিয়ে কাজ করা। বর্তমানে আমাদের দল মাইক্রো-ইলেকট্রনিকস, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং এবং এক্সোটিক ম্যাটেরিয়াল ফর সেন্সিং নিয়ে কাজ করছে। যেহেতু এটি একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং পণ্য উন্নয়ন সংস্থা, তাই সিইও ও সায়েন্টিস্ট—এই দুটি ভূমিকাই আন্তসম্পর্কিত। সিইও হিসেবে আমি দৈনন্দিন কোম্পানি পরিচালনার পাশাপাশি বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সমস্যার চিহ্নিতকরণ এবং এই সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য নতুন নতুন ধারণা আমার টিমকে দিই। প্রয়োগকৃত গবেষণার ওপর ভিত্তি করে বাণিজ্যিক পণ্য বিকাশের জন্যও কাজ করি আমি। যেহেতু আমাদের কোম্পানির বেশির ভাগ টিম মেম্বারেরই পিএইচডি ডিগ্রি আছে, তাদের আমার কাছ থেকে প্রতিদিনের দিকনির্দেশনার প্রয়োজন হয় না।

প্রশ্ন :

বিজ্ঞানচিন্তা: সহকর্মীদের সঙ্গে আপনি কার্স গবেষণাগার থেকে ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহারের উপযোগী করে তুলেছেন। এ পদ্ধতি সম্পর্কে কিছু বলুন। এ ছাড়া আরেকটি প্রশ্ন আছে। ট্রিপল পাম্প কার্স সম্পর্কেও কিছু বলুন।

সুকেশ রায়: কার্স (কোহেরেন্ট অ্যান্টিস্টোকস রমন স্ক্যাটারিং) হলো অনেকগুলো স্পেকট্রোস্কোপিক কৌশলের একটি, যা নিয়ে আমরা কাজ করছি। কার্স রমন স্ক্যাটারিংয়ের বৈচিত্র্য, যেখানে সিগন্যাল লেজার বিম হয়ে বের হয়ে আসে। প্রথাগত রমন স্ক্যাটারিংয়ে এমন হয় না। এটি খুব সঠিক উপায়ে গ্যাস-ফেজ পরিবেশের তাপমাত্রা এবং অণু-পরমাণুর ঘনত্ব পরিমাপ করার কৌশল। কার্স ব্যবহার করে আমরা এমনকি প্রতিকূল পরিবেশেও ১ শতাংশ তাপমাত্রার নির্ভুলতা অর্জন করতে পারি। চিরায়ত পদ্ধতিতে থার্মোমিটার বা থার্মোকলের সাহায্যে তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য আমাদের একটি ফিজিক্যাল প্রোব সন্নিবেশ করতে হয়। ইঞ্জিন অথবা গ্যাস টারবাইন কম্বাস্টারের ভেতরে—যেখানে খুব উচ্চ তাপমাত্রা থাকে—সেখানে থার্মোমিটার ও থার্মোকল উভয়ই ব্যর্থ। যেহেতু কার্স একটি লেজারভিত্তিক কৌশল, এটি প্রবাহে ব্যাঘাত না ঘটিয়ে ৪০০০ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা পরিমাপ করতে পারে। প্রশ্ন হলো কেন ১ শতাংশের কম নির্ভুলতা দরকার? ইঞ্জিনের ভেতরে যে রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়, তা বুঝতে হলে তাপমাত্রা খুব সঠিকভাবে জানতে হয়। কারণ, তাপমাত্রা বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার হারের পাশাপাশি রাসায়নিক পণ্যের প্রজন্মকেও নির্দেশ করে। সঠিক তাপমাত্রা এবং অন্যান্য প্রবাহের প্যারামিটার অজানা থাকলে, বিভিন্ন ইঞ্জিন সিস্টেম গবেষণার জন্য শক্তিশালী কম্পিউটার মডেল তৈরি করা সম্ভব নয়। যা পরিবেশবান্ধব বিকল্প জ্বালানির ইঞ্জিনের বিকাশে জটিলতা বাড়ায়। ইঞ্জিনের উন্নত কর্মক্ষমতা জ্বালানি ব্যবহার এবং জ্বালানি খরচ সাশ্রয় করে।

আমরা লেজার বিম ব্যবহার করে নাইট্রোজেন বা অক্সিজেনের মতো অণুকে উত্তেজিত করি । এই লেজার বিমগুলোকে এমনভাবে বেছে নেওয়া হয়, যাতে তারা অণুর রেজোনেন্স ফ্রিকোয়েন্সির সঙ্গে মেলে। প্রতিটি পরমাণু বা অণুর একটি নির্দিস্ট রেজোনেন্স ফ্রিকোয়েন্সি থাকে, এটা অতিক্রম করলে সেগুলো উত্তেজিত হয়। কার্স এবং অন্যান্য লেজারভিত্তিক স্পেকট্রোস্কোপিক কৌশলগুলোতে লেজার বিমগুলোকে এমনভাবে নির্বাচন করা হয়, যেন পরমাণু বা অণুর রেজোনেন্স ফ্রিকোয়েন্সিকে অত্রিক্রম না করে। অণুগুলো উত্তেজিত হলে উত্তেজনার ফ্রিকোয়েন্সির ওপর নির্ভর করে কম্পন বা ঘূর্ণন শুরু করে। উত্তেজিত অণুগুলোর গতিবিধি দেখার জন্য অন্য ধরনের লেজার রশ্মি ব্যবহার করি আমরা। এই লেজার রশ্মি বিক্ষিপ্ত হয় এবং তাপমাত্রার তথ্য বহন করে। এই রশ্মি বিশ্লেষণ করে আমরা সহজেই উত্তেজিত অণুগুলোর পরিমাণ, তাপমাত্রা এবং প্রজাতির (স্পেসিস) ঘনত্ব নির্ধারণ করতে পারি। স্ট্যান্ডার্ড কার্সে আমরা একই সঙ্গে একটির বেশি অণুকে উত্তেজিত করতে পারি না। কিন্তু আমাদের উদ্ভাবিত ট্রিপল পাম্প কার্সে একসঙ্গে তিনটি অণুকে উত্তেজিত করতে পারি। ফলে তিনটি আলাদা পরীক্ষা না করে একই সঙ্গে তিনটি অণুর তাপমাত্রা এবং ঘনত্ব নির্ধারণ করতে পারি।

প্রশ্ন :

বিজ্ঞানচিন্তা: এখানে রমন স্ক্যাটারিংয়ের বিষয়টি এল কীভাবে?

সুকেশ রায়: ১৯৩০ সালে চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন এই স্ক্যাটারিং আবিষ্কার করেন। তাপমাত্রা শুধু্ বৈদ্যুতিক, কম্পন এবং ঘূর্ণন স্তরে সংযুক্ত অণুগুলোর অভ্যন্তরীণ শক্তি বিতরণের প্রকাশ। সঠিকভাবে গ্যাস-ফেজ তাপমাত্রা নির্ধারণ সম্ভব হয়, শুধু যদি সংযুক্ত (ensemble) গ্যাসগুলোর শক্তি বিতরণ নির্ধারণ করা যায়। রমন স্ক্যাটারিং নির্দিষ্ট অণুগুলোর শক্তি বণ্টন খুব সঠিকভাবে নির্ণয় করতে সক্ষম। ফলে গ্যাস ফেজ এনসেম্বলের তাপমাত্রা খুব সঠিকভাবে নির্নয় করতে সাহায্য করে। আরও কিছু পদ্ধতি আছে। তবে রমন পদ্ধতিতে অনিশ্চয়তা ৫-২০%। আমাদের ক্ষেত্রে সেটা ১%-এর কম। এ কারণেই আমরা রমন স্ক্যাটারিং বেছে নিয়েছি।

প্রশ্ন :

বিজ্ঞানচিন্তা: এই প্রযুক্তির সুফল বাংলাদেশ কীভাবে পেতে পারে।

সুকেশ রায়: বাংলাদেশের শিল্পক্ষেত্রে এই মুহূর্তে কার্স প্রযুক্তির প্রয়োগ কঠিন। কিছু সাশ্রয়ী সেন্সর প্রযুক্তি রয়েছে, যা অবিলম্বে বিভিন্ন শিল্পকারখানায় স্থাপন দূষণকারী উৎপদান চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। বাংলাদেশে বর্তমান শিল্পায়নের হার বিবেচনায় রেখে আমাদের অনতিবিলম্বে সক্রিয় এবং যথাযথ দূষণ পর্যবেক্ষণ এবং প্রশমন প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা অপরিহার্য বলে আমি মনে করি। কার্স সেক্ষেত্রে ভালো বিকল্প হতে পারে।

প্রশ্ন :

বিজ্ঞানচিন্তা: এ দেশের তরুণ ও প্রবীণদের গবেষণা বিশ্বমানের জার্নালে প্রকাশিত হচ্ছে। বাইরে সেগুলো প্রশংসাও পাচ্ছে। কিন্তু সেই গবেষণাগুলোকে আমরা ইন্ডাস্ট্রিতে কাজে লাগাতে পারছি না, কেন এমনটা হচ্ছে?

সুকেশ রায়: মূলত পরীক্ষামূলক বা প্রয়োগকৃত কাজের জন্য টেকসই তহবিলের অপ্রতুলতার জন্য এটা হচ্ছে। এদেশে প্রফেসর বা গবেষকদের উৎসাহিত করার জন্য খুব বেশি প্রণোদনা নেই। যুক্তরাষ্ট্রে এসবিআইআর (স্মল বিজনেজ ইনিশিয়েটিভ রিসার্চ) নামে একটি নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম রয়েছে। সেখান থেকে মৌলিক গবেষণার মাধ্যমে ফলিত সমস্যার সমাধান করাকে অত্যন্ত উৎসাহিত করা হয়। স্পেকট্রাল এনার্জি এসবিআইআর প্রোগ্রামের সরাসরি সুবিধাভোগী একটি কোম্পানি। বাংলাদেশের বর্তমান প্রজন্ম রোবোটিকসে খুব ভালো করছে। টেকসই উপায়ে তাদের সমর্থন করার পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়ার পরেও তারা যেন দেশের উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত থাকে, সে ব্যাপারে উৎসাহিত করার উপায় বের করতে হবে।

প্রশ্ন :

বিজ্ঞানচিন্তা: আপনার ছেলেবেলা ও পড়াশোনার কথা বলুন।

সুকেশ রায়: আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা নারায়ণগঞ্জে। নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরি স্কুল, নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল এবং তোলারাম কলেজে পড়েছি। এইচএসসির পর বুয়েটে ভর্তি হই। আমি স্কুল ও কলেজে মাঝারি ধরেনের ছাত্র ছিলাম। কিন্তু পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও গণিতে খুব ভালো করতাম। বুয়েটে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হই। পড়াশোনার পাট চুকিয়ে এক বছর লেকচারার ছিলাম বুয়েটে। তারপর ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসি এবং ইউনিভার্সিটি অব হিউস্টনে ফুল ফান্ডিংসহ মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হয়। এখানে ফ্লুইড মেকানিকস, বিশেষ করে টার্বুলেন্সের ওপর গবেষণায় যুক্ত ছিলাম। সেটা ছিল নাসার ফান্ডেড প্রজেক্ট। এরপর পিএইচডির জন্য আমি টেক্সাসে এ অ্যান্ড এম ইউনিভার্সিটিতে চলে যাই। যা আমি আমার উদ্ভাবিত এই সেন্সর থেকে পেয়ে যাই।

প্রশ্ন :

বিজ্ঞানচিন্তা: বই পড়ার সময় পান? আপনার প্রিয় বইয়ের নাম বলবেন কি? কোন বইটি সবার পড়া উচিত বলে আপনি মনে করেন।

সুকেশ রায়: বই পড়া আমার চিরকালের অভ্যাস। আমার প্রিয় বই দ্য ফাইনম্যান লেকচারস ইন ফিজিকস। আমি মনে করি এটা সবার পড়া উচিত। এ ছাড়া সবাইকে পড়তে বলব জন গার্টেনের লেখা দ্য আইডিয়া ফ্যাক্টরি : বেল ল্যাবস অ্যান্ড দ্য গ্রেট এজ অব আমেরিকান ইনোভেশন বইটি। জেমস ক্লেইগের কেওস বইটাও সবার পড়া উচিত। এ ছাড়া সিউরলি ইউ আর জোকিং মিস্টার ফাইনম্যানও সবার পড়া উচিত। এ ছাড়া ওয়াল্টার আইজ্যাকসনের দ্য ইনোভেটরস অ্যান্ড দ্য কোড ব্রেকার বইটা পড়ার জন্য বলতে পারি। বাংলা বই এখন আর তেমন পড়া হয় না বললেই চলে। তবে দেশে থাকতে নিয়মিত পড়তাম। হুমায়ূন আহমেদের বই খুব পড়তাম। এ ছাড়া সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই সময়, সমরেশ মজুমদারের উত্তরাধিকার ছিল আমার প্রিয় বাংলা বই।

প্রশ্ন :

বিজ্ঞানচিন্তা: বিজ্ঞানচিন্তার কিশোর-তরুণ পাঠকদের উদ্দেশে কিছু বলুন।

সুকেশ রায়: তরুণদের জন্য আমার প্রধান উপদেশ হবে বই পড়া, ফিকশন বা নন-ফিকশন যা তোমার ভালো লাগে। আমার আরেকটি পরামর্শ হলো ‘কেন?’— এ প্রশ্ন করা। যা কিছু অজানা তা নিয়ে সর্বদা প্রশ্ন করতে থাকবে। ‘তুমি বুঝতে পারবে না’ বা ‘কেন এত বেশি প্রশ্ন করো?’ এই ধরনের উত্তর পেলে নিরুৎসাহিত হবে না। এখনকার যুগে বেশির ভাগ গভীর তথ্য তোমাদের নখদর্পণে। আজকের ইন্টারনেটের যুগে জ্ঞানের সন্ধানের জন্য অন্য কারও সাহায্যের খুব একটা প্রয়োজন নেই। প্রশ্ন করতে থাকো এবং প্রশ্নের সঠিক উত্তর খোঁজো। প্রশ্ন করা থামিয়ো না।