বিজ্ঞানচিন্তা পড়ে বড় বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখি

বিজ্ঞানচিন্তার বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে পাঠকের অনুভূতি, মতামত বা অভিজ্ঞতা লিখে পাঠাতে বলেছিলাম আমরা। অনেক পাঠক লেখা পাঠিয়েছেন, জানিয়েছেন মতামত। অংশগ্রহণকারী সবাইকে ধন্যবাদ। এসব লেখা থেকে বাছাইকৃত সেরা তিনটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানচিন্তার অক্টোবর ২০২৩ সংখ্যায়। এ ছাড়াও আরও সাতটি, অর্থাৎ সেরা ১০টি লেখা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হবে বিজ্ঞানচিন্তা অনলাইনে।

নবম সেরা লেখাটি আজ প্রকাশিত হলো।

আজ প্রায় তিন মাস হতে চলল আমি বিজ্ঞানচিন্তা পড়ছি। এটি আমার অন্যতম এক প্রিয় সঙ্গী। একদম বেস্ট ফ্রেন্ডের মতো। গত জুলাই মাসের কথা। আম্মুর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বিজ্ঞানচিন্তার পেজে ফলো দিয়েছিলাম। বিজ্ঞানচিন্তার ওই পেজে ঢোকার জন্য দিনে একবার হলেও ফোনটা হাতে নিতাম। পেজে ঢোকামাত্র কী সুন্দর সুন্দর জিনিস যে চোখে পড়ত, আর আমি সেগুলো অনেক উৎসাহে পড়তাম। কী যে ভালো লাগত তখন। একদম মনের ভেতরের সব দুঃখ মুছে যেত। আগে হকার আঙ্কেলকে অনেকবার বলা সত্ত্বেও বিজ্ঞানচিন্তা এনে দেননি। বলতে বলতে একসময় বলা বাদ দিয়ে দিলাম। কিন্তু পেজে চোখ রাখতে রাখতে আবার মনে হলো, এবার একটু চেষ্টা করে দেখি। তাই প্রথমা ডটকমে গিয়ে অর্ডার দিতে গিয়েও পারলাম না। মনটা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল।

তারপর আমাদের স্কুলে আমার অন্যতম প্রিয় শিক্ষক তানভীর স্যারকে সব খুলে বললাম। স্যারও কোনো দ্বিধা ছাড়াই বললেন, ‘আমি অর্ডার দিয়ে দেব।’ স্যার অর্ডার দিয়ে দিলেন। তিন দিনের মধ্যেই বইটা স্যারের হাতে পৌঁছাল এবং পরদিন রোববার স্কুলে বিজ্ঞানচিন্তা লেখা একটা কাগজে মোড়ানো বই এনে স্যার আমার হাতে তুলে দিলেন। তখন মনে হচ্ছিল, বিজ্ঞানের সব রহস্য বুঝি আমার কাছেই চলে এল। জুলাই সংখ্যাটা দারুণ ছিল! সেই থেকেই বিজ্ঞানচিন্তার সঙ্গে আমার পথচলা শুরু।

এখনো বিজ্ঞানচিন্তা আমার হাতে তুলে দেন আমাদের স্কুলের গণিতশিক্ষক বিপ্লব স্যার। প্রতি মাসেই তিনি ময়মনসিংহ থেকে আমার জন্য একটা বিজ্ঞানচিন্তা আনেন। আর কিছু না আনলেও প্রতি মাসে বিজ্ঞানচিন্তা ঠিকই আনেন। তিনি নিজেও বিজ্ঞানচিন্তার একজন নিয়মিত পাঠক। প্রতি মাসেই বইটা পড়ার পর আমার ও স্যারের মধ্যে খুব সুন্দর একটা আলোচনা হয়। আলোচনার বিষয়বস্তু থাকে বিজ্ঞানচিন্তার রোমাঞ্চকর সব লেখা। অনেক ভালো লাগে।

স্যার গণিতের শিক্ষক হলেও বিজ্ঞানের প্রতি তাঁর অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করে। এমনকি এই বিপ্লব স্যারই আমাকে আজ বিজ্ঞানমুখী করে তুলেছেন। আমি এই বিজ্ঞানচিন্তা পড়ে অনেক বড় বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখি। আমি স্বপ্ন দেখি, এই বিজ্ঞানচিন্তা পড়েই ভারতের মতো চাঁদের দেশে চন্দ্রযান পাঠিয়ে চাঁদের বুকে বাংলাদেশের পতাকা রেখে আসব। আমি জানি, আমি নিয়মিত বিজ্ঞানচিন্তা পড়লে এবং এর লেখকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলে অবশ্যই আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।

আশা করছি, বিজ্ঞানচিন্তার ৭০ বছরে আমি আবার লিখতে পারব এবং আমি যত দিন বেঁচে থাকব, তত দিন বিজ্ঞানচিন্তার সঙ্গেই থাকব।

লিখেছেন জামালপুরের বকশীগঞ্জ উলফাতুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফিয়া মুতাহারা সিদ্দিকা