বিজ্ঞানচিন্তা বিজ্ঞান ভালোবাসতে শিখিয়েছে

বিজ্ঞানচিন্তার বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে পাঠকের অনুভূতি, মতামত বা অভিজ্ঞতা লিখে পাঠাতে বলেছিলাম আমরা। অনেক পাঠক লেখা পাঠিয়েছেন, জানিয়েছেন মতামত। অংশগ্রহণকারী সবাইকে ধন্যবাদ। এসব লেখা থেকে বাছাইকৃত সেরা তিনটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানচিন্তার অক্টোবর ২০২৩ সংখ্যায়। এ ছাড়াও আরও সাতটি, অর্থাৎ সেরা ১০টি লেখা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হবে বিজ্ঞানচিন্তা অনলাইনে।

প্রথম সেরা লেখাটি আজ প্রকাশিত হলো।

যখন বিজ্ঞানচিন্তার পাতায় বিজ্ঞানচিন্তাকে নিয়ে চিঠি লেখার আহ্বান দেখলাম, তখনই ভেবেছিলাম আমিও লিখব। সত্যি বলতে কি, বিজ্ঞানচিন্তা আমার কাছে এক আবেগ ও ভালোবাসার নাম। বিজ্ঞানচিন্তা পড়েই বুঝেছি, বিজ্ঞান আসলে কত মজার একটা বিষয়। বিজ্ঞানচিন্তা পড়েই বুঝেছি, বিজ্ঞান কল্পগল্পের মজা। বাসায় এইচ জি ওয়েলসের বিজ্ঞান কল্পগল্প পড়ে ছিল। কখনো ধরেও দেখিনি। মূলত ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানচিন্তা ও কিশোর আলো কিনতাম। কিশোর আলো পড়তে ভালো লাগলেও বিজ্ঞানচিন্তার কিছু লেখা পড়েই রেখে দিতাম। ভালো লাগত না, তাই বিজ্ঞানচিন্তা নিয়মিত কিনতামও না। কিন্তু এ বছরের শুরু থেকেই বিজ্ঞানচিন্তা পড়ছি নিয়মিত। আর এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানচিন্তার এ বছরের জানুয়ারি সংখ্যাটিই আমার কাছে সেরা। মহাকাশ নিয়ে আমার অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি এখানে।

বিজ্ঞানচিন্তা আমাকে শিখিয়েছে কীভাবে বিজ্ঞানকে ভালোবাসতে হয়, হৃদয়ে ধারণ করতে হয়। বিজ্ঞানচিন্তার সেপ্টেম্বর সংখ্যায় আইনস্টাইনের একটি উক্তি উল্লেখ করা হয়েছে। সেটা হলো, ‘কল্পনা জ্ঞানের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’ দেখামাত্রই এটি আমার প্রিয় হয়ে গেছে। আগে বিজ্ঞান বইটা আমার সবচেয়ে কঠিন লাগত। আর এখন এটাই আমার সবচেয়ে প্রিয়। বিজ্ঞানচিন্তা আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে জামাল নজরুল ইসলাম, অমল রায় চৌধুরী, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, জগদীশচন্দ্র বসুসহ আরও অনেক বিজ্ঞানীর সঙ্গে। আমাদের দেশেও যে গর্ব করার মতো অনেক বিজ্ঞানী জন্মেছেন, সেটা বিজ্ঞানচিন্তা পড়েই জেনেছি। বর্তমানে ইন্টারনেটের এই যুগে গুগলেই সব জানা যায়। তবু গুগলের চেয়ে বিজ্ঞানচিন্তার প্রতিই আমার বেশি আগ্রহ। আমার কাছে গুগলের চেয়ে বিজ্ঞানচিন্তার তথ্যগুলোই বেশি নির্ভরযোগ্য। বিজ্ঞানচিন্তা আমাদের কাছে বিজ্ঞানকে যেভাবে উপস্থাপন করে, তাতে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানভীতি খুব সহজেই দূর হয়ে যাওয়ার কথা।

এখনো প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক শিক্ষার্থী বিজ্ঞানচিন্তা সম্পর্কে জানে না। অনেকে জানলেও এতে আগ্রহ খুঁজে পায় না। তাই শুধু শহরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য বিজ্ঞান উৎসব করলে চলবে না। প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদেরও বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। তাদের যদি বিজ্ঞানের সৌন্দর্য বোঝানো না যায়, তাহলে শুধু শহরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানে আগ্রহী করে কোনো লাভ হবে বলে আমার মনে হয় না। তা ছাড়া বিজ্ঞানবিষয়ক বিভিন্ন প্রতিযোগিতার খবরও যদি বিজ্ঞানচিন্তা আমাদের জানায়, তাহলে খুব ভালো হয়। সর্বশেষ বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের প্রতিটি স্কুলে যদি বিজ্ঞানচিন্তা ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তাহলে এখান থেকেই আমাদের ভবিষ্যতের জামাল নজরুল ইসলামরা গড়ে উঠবে। বিজ্ঞানচিন্তার জন্য শুভকামনা রইল।

আনফাল, অষ্টম শ্রেণি, হাটহাজারী পার্বতী মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়