বিজ্ঞানচিন্তার সাহায্যে আমি জানতে পেরেছি মহাবিশ্বের রহস্য

বিজ্ঞানচিন্তার বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে পাঠকের অনুভূতি, মতামত বা অভিজ্ঞতা লিখে পাঠাতে বলেছিলাম আমরা। অনেক পাঠক লেখা পাঠিয়েছেন, জানিয়েছেন মতামত। অংশগ্রহণকারী সবাইকে ধন্যবাদ। এসব লেখা থেকে বাছাইকৃত সেরা তিনটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানচিন্তার অক্টোবর ২০২৩ সংখ্যায়। এ ছাড়াও আরও সাতটি, অর্থাৎ সেরা ১০টি লেখা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হবে বিজ্ঞানচিন্তা অনলাইনে।

ষষ্ঠ সেরা লেখাটি আজ প্রকাশিত হলো।

‘বিজ্ঞানচিন্তা’ শব্দটির মধ্যেই লুকিয়ে আছে সাগরতলের রহস্য, মহাকাশ জয়ের নতুন অধ্যায়। বিজ্ঞানচিন্তার মাধ্যমেই আমি যেতে পেরেছি, বিগ ব্যাংয়ের আরও কাছে, জানতে পেরেছি মহাবিশ্বের রহস্য। বিজ্ঞানচিন্তার সঙ্গে আমার পরিচয়ের ঘটনাটি সংক্ষেপে বলি—

একদিন আমাদের নিচের রুমে বসে আমি পড়াশোনা করছিলাম। তারপর হঠাৎ বাবা বিজ্ঞানচিন্তা নামে একটি ম্যাগাজিন আমার হাতে দিলেন। এটি ছিল ২০২২ সালের মার্চ মাসের ‘বাংলাদেশ ও রোবোটিকস’ সংখ্যা। প্রথমবার বিজ্ঞানচিন্তা পড়ে আমার এত ভালো লাগলো, মনে হলো, বিজ্ঞানচিন্তা প্রতি মাসে পড়া যেতে পারে। আগে মনে হতো, বিজ্ঞানের মতো কঠিন বিষয় বোধ হয় পৃথিবীতে নেই। কিন্তু বিজ্ঞানচিন্তা পড়ে আমার ভালো লেগে যায়। মনে হলো পৃথিবীতে বিজ্ঞানের মতো সহজ বিষয় আর কোনোটাই নেই। আগে তো বুঝতেই পারতাম না মহাবিশ্ব কী। আর এখন আমি মহাবিশ্ব সম্পর্কে ক্লাসের সবার থেকে বেশি জানি। কারণ, বিজ্ঞানচিন্তাই আমাকে শিখিয়েছে, মহাবিশ্ব কী, গ্যালাক্সি কী, ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জির মধ্যে পার্থক্য কী। বিজ্ঞানচিন্তাই আমাকে জানিয়েছে, চ্যাটজিপিটি কী, চ্যাটজিপিটির কাজ কী। প্লুটো যে একটি বামন গ্রহ, আমি তো আগে জানতাম না। আমি জানতাম, প্লুটো একটি গ্রহ। আর মজার ব্যাপার কি জানো, স্কুলে আমার শাখার নামই প্লুটো!

তো একদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বইমেলায় প্রথমা প্রকাশন থেকে আমি পেয়ে গেলাম বিজ্ঞানচিন্তার অনেক আগের পাঁচটি সংখ্যা! তখন আমার খুশি দেখে কে! সঙ্গে সঙ্গে বাবাকে বললাম, বিজ্ঞানচিন্তাগুলো কিনে দাও, প্লিজ। আর বাবাও আমাকে সংখ্যাগুলো কিনে দিলেন। বাসায় এসেই নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে পাঁচটি সংখ্যা নিয়ে বসে পড়লাম। খুব আনন্দ লেগেছিল সেদিন।

বিজ্ঞানচিন্তা, তোমার এখন সাত বছর বয়স। তোমাকে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এভাবেই লাখো মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করে তোলো, এই প্রত্যাশা রইল।

আর মাটির নিচের বিষয় সম্পর্কে বিজ্ঞানচিন্তার একটি সংখ্যা তৈরি করার জন্য অনুরোধ করছি।

আর হ্যাঁ, সেপ্টেম্বর মাসের সংখ্যাটি খুবই ভালো  লেগেছিল। এখন আমাদের ক্লাসের সবাই তোমাকে পড়তে খুবই পছন্দ করে। আমি প্রতিদিন ক্লাসে তোমাকে নিয়ে যাই। তোমাকে একটু পড়ার পর আমাদের শ্রেণিশিক্ষকও আমাকে  বলেছেন, তাঁর মেয়ের জন্যও একটি বিজ্ঞানচিন্তা দিতে। তাঁর মেয়েও বিজ্ঞান পড়তে, বিশেষ করে মহাবিশ্ব সম্পর্কে পড়তে খুবই পছন্দ করে।

আর হ্যাঁ, তুমি আবার তোমার পৃষ্ঠাসংখ্যা ৯৬ পৃষ্ঠা করো, না হলে তো আশি পৃষ্ঠা এক দিনেই পড়া শেষ হয়ে যায়।

ভালো থেকো। আর লেখাটি কেমন লাগল, সেটি জানিও।

বিদায়!

সিদরাতুল মুনতাহা, খ্রিষ্টিয়ান মিশন প্রাইমারি স্কুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।