জেনো,অসীম ধারা, কাছে আসার প্রক্রিয়া

সামথিংস ওয়্যার গ্রিক টু দ্য গ্রিকস লিখেছেন গণিতের ইতিহাসবিদ ডেভিড বার্লিনস্কি। এমন অনেক জিনিস আছে, যা গ্রিকরাও বুঝত না। যেমন একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করা। যেমন আমি যদি বলি, ‘কাছে আসুন,’ তাহলে আপনি হেঁটে বা দৌড়ে আমার কাছে এসে দাঁড়ালেন। কিন্তু খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীর দার্শনিক জেনো বললেন, এটা সম্ভব নয়। কারণ, আমার কাছে এসে দাঁড়াতে হলে আপনাকে আমার-আপনার দূরত্বের অন্তত অর্ধেকটা প্রথমে অতিক্রম করতে হবে। তারপর বাকি দূরত্বের অর্ধেক। কাজেই আপনি যতই এগোন না কেন, আপনার আমার মধ্যে একটি সামান্য অনতিক্রম্য দূরত্ব থেকেই যাচ্ছে। এভাবে জেনো যুক্তি দেখালেন, দূরত্ব অতিক্রমের এই পদ্ধতি সারাক্ষণই চলতেই থাকবে এবং এর কোনো শেষ নেই। কাজেই দূরত্ব অতিক্রমের ব্যাপারটি যেহেতু একটি অসীম ধারায় প্রকাশ করা গেল, অসীম ধারার যোগফল যেহেতু অসীম (কারণ অসীমসংখ্যক পদ আছে), তাই দূরত্ব অতিক্রম করা যায় না। পথ পরিক্রমার ব্যাপারটিও তাই একটি বিভ্রম, গতি একটি মায়া। এমনই ছিল জেনোর যুক্তি।

কিন্তু আপনি বলবেন, আরে দাঁড়ান দাঁড়ান। আপনি বললেন, কাছে আসুন। আর তখনই আমি হেঁটে গিয়ে আপনার কাছে দাঁড়ালাম। এ তো হামেশাই ঘটে। দৈনন্দিন ঘটে। বাস চলে, গাড়ি চলে, রিকশা চলে। আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। আমি স্কুলে যাই। আমি তো কোনো সমস্যাই দেখছি না। না, সমস্যা কেউই দেখে না। অথচ গণিতের যুক্তি, তা তো অবধারিত। জেনোর একটি সামান্য মিঠেকড়া যুক্তিতে গতিই অসম্ভব হয়ে পড়ে। এ জন্যই ডেভিড বার্লিনস্কি মন্তব্য করেছেন, গ্রিকরাও অনেক কিছু বুঝত না। কিন্তু জেনোর যুক্তির সমস্যা কোথায়? গতি তো প্রতিনিয়তই হয়। প্রায় ২ হাজার ২০০ বছর পর সপ্তদশ শতকে এসে এ সমস্যার সমাধান মিলল।

লম্বা ও আকর্ষণীয় চেহারার জেনো জন্মেছিলেন দক্ষিণ ইতালির গ্রিক উপনিবেশ ইলিয়ায়। তখন খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দী। এ সময় গ্রিক দুনিয়ায় বেশ কয়েকজন চিন্তাবিদ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাঁরা প্রায় দুই শ বছর ধরে জ্ঞানকাণ্ডে এক বিশেষ ধারার সংযোজন করতে প্রয়াসী হয়েছিলেন। শুরুটা হয়েছিল মিলেটাসের থেলিসের হাত ধরে। প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করতে তাঁরা ব্যবহার করেছিলেন নানা প্রাকৃতিক কার্যকরণ। কোনো অপ্রাকৃতিক ব্যাখ্যার আমদানি না করেই জগৎ-সংসারকে যে ব্যাখ্যা করা সম্ভব, সেটাই শুরু হয়েছিল এ সময়। পিথাগোরাসের উদ্ভাবিত পরমাণুবিষয়ক কিছু আলগা ধারণাকে আনাক্সাগোরাস লিখিত রূপ দিলেন। একই রকম কথা শোনালেন এমপিডোক্লিস। যেকোনো জটিল জিনিসই সরলতম বস্তুর সমন্বয়ে তৈরি। এভাবে লিউসিপ্পাস বস্তুর ক্ষুদ্রতম কণা হিসেবে পরমাণুর কথা বললেন।

এ রকম সাংস্কৃতিক ভাবধারায় লালিত ও বিকশিত জেনো বললেন যে গতি অসম্ভব। কেননা, যেকোনো নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করতে হলে প্রথমে তার অর্ধেকটা অতিক্রম করতে হবে, তারপর বাকি অর্ধেকের অর্ধেকটা, তারপর তার অর্ধেকটা—এভাবে অসীমভাবে চলতে থাকে। পুরো দূরত্ব তাই অতিক্রম করা যায় না। প্লেটোর ভাষ্যমতে, ইলিয়াটিক স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পারমেনাইডাসের ভাবশিষ্য জেনো এথেন্সে এসে একদা এই চিন্তাধারা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। অ্যারিস্টটলের ফিজিকস গ্রন্থে তিনি জেনোর চারটি ধাঁধার কথা তুলে ধরেন—

১) কোনো চলন্ত বস্তু কখনোই কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুতে পৌঁছাতে পারে না, কেননা, যত কাছেই থাকুক না কেন, প্রথমে ওই বিন্দুর দিকে অর্ধেক দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে, তারপর বাকি পথের অর্ধেক দূরত্ব এবং এভাবে চলতেই থাকে, কেননা এই ধারার কোনো শেষ নেই। কাজেই এই নির্দিষ্ট দূরত্ব ওই বস্তুটি কখনোই পেরোতে পারবে না।

২) যত বড় দৌড়বিদই হোক না কেন, তিনি কখনোই শ্লথতম দৌড়বিদকে হারাতে পারবেন না। কেননা দ্রুততম দৌড়বিদ যখন পৌঁছাবেন, শ্লথতম দৌড়বিদ ততক্ষণে তাঁর শুরুর বিন্দু থেকে সামনে এগিয়ে গেছেন কিছুটা হলেও। আবার বাকি পথটুকু যখন দ্রুততম দৌড়বিদ অতিক্রম করবেন, ততক্ষণে শ্লথতম দৌড়বিদ আরও খানিকটা এগোবেন। এভাবে দ্রুততম মানব একিলিস কখনোই শ্লথতম কচ্ছপকে হারাতে পারবেন না, যদি শুরুতে কচ্ছপ কিছুটা এগিয়ে থাকে।

৩) কোনো সময় ধরে কোনো কিছুর চলন্ত থাকা সম্ভব নয়, কেননা সময়ের অবিভাজ্য ক্ষুদ্রতম মুহূর্তে কোনো কিছুর চলন সম্ভব নয়। এভাবে চলন্ত তির এলে কোনো দূরত্বই অতিক্রম করতে পারে না। কেননা, আমরা যদি অতিক্রান্ত সময়কে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এককে ভাগ করি এবং প্রতিটি সময় তিরটিকে দেখি, আমরা দেখব ওই অবিভাজ্য ক্ষুদ্র সময়ের এককে তিরটি স্থির আছে। তাহলে অন্য সব মুহূর্তেও সে স্থির থাকে। এভাবে গতি অসম্ভব হয়ে যায়।

৪) কোন পর্যায়কালের অর্ধেক ওই পর্যায়কালের পুরোটার সমান। যেহেতু বস্তু স্থির হোক কিংবা গতিশীল, তাকে অতিক্রম করতে ভিন্ন ভিন্ন সময় লাগে, অথচ একই গতির একই সময় লাগার কথা। সমস্যাটা হলো কোনো গতিশীল বস্তু যখন কোনো স্থির বা গতিশীল বস্তুকে অতিক্রম করে, মনে করা হয় তার একই সময় লাগে।

জেনোর এসব হেঁয়ালি প্রাচীন চিন্তাবিদদের ভাবিয়ে তুলেছিল। যুক্তিতর্ক যেটা তিনি দিচ্ছেন, ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না, আবার মেনে নেওয়াও যাচ্ছে না। আমরা তো চলমান গতি দেখি প্রতিদিনই। আমরা হেঁটে এক ঘর থেকে অরেক ঘরে যাই, আমরা দৌড়াই, গাড়ি চলে, নদী প্রবাহিত হয়। তীর ছুটে চলে বাতাস কেটে, বুলেট ঠিকই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে। তাহলে? স্থান এবং কাল কি তবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে তৈরি নাকি নিরবচ্ছিন্ন? মনে রাখতে হবে, এসব চিন্তাভাবনা হচ্ছে আজ থেকে দুই হাজার বছর আগে। আজকের কম্পিউটার, ইন্টারনেট, জেট বিমান আর ক্যালকুলাসের যুগে এসব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর আছে। কিন্তু বিশ্লেষণের আধুনিক টুল না থাকায় দীর্ঘকাল এসব হেঁয়ালি চিন্তা বাজারে প্রচলিত ছিল।

জেনোর এই চারটি ধাঁধা ছাড়াও দর্শনের ওপর তাঁর লেখা ঢাউস একটা বইয়ের কথা জানা গেছে। প্লেটোর একাডেমিতে বইটি প্রচলিত পাঠ্য ছিল। পঞ্চম শতাব্দীর দার্শনিক ও জ্যামিতিক প্রোক্লাসের কথা থেকে জানা যায়, জেনোর বইয়ে ৪০টি ধাঁধা ছিল। কিন্তু সে বই মহাকালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। জেনোর জীবন সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। এর-ওর লেখা থেকে খুচরা তথ্যই কেবল আমরা জানতে পারি। প্লেটো, ডায়ো-জেঁনিস, প্রোক্লাস ও অ্যারিস্টটলের লেখা থেকেই আমরা যা কিছু জানতে-শিখতে পারি।

খ্রিস্টপূর্ব ২১২ অব্দে আর্কিমিডিসের মৃত্যুর পর গতিবিষয়ক চিন্তা থমকে দাঁড়ায়। ১৪০০ বছর পর ব্রাসেলসের জেরার্ড আর্কিমিডিস ও ইউক্লিডের লেখনী থেকে গতি সংজ্ঞায়নে কিছুটা অগ্রসর হন। গতি যে দূরত্ব ও সময়ের অনুপাত, সেটা তিনি মোটামুটি বুঝতে পেরেছিলেন বলে মনে হয়। এরও ১০০ বছর পর মেরটন কলেজের চারজন গণিতবিদ গতিবিজ্ঞানবিষয়ক গাণিতিক বিশ্লেষণ শুরু করেন। মুক্তভাবে পতনশীল বস্তুর দূরত্ব ও ত্বরণের মধ্যকার সম্পর্কের প্রাথমিক সূত্রাবলি প্রতিপাদন করেন তাঁরা। এরও ৩০০ বছর পর হাতে–কলমে পরীক্ষা করে গ্যালিলিও অতিক্রান্ত দূরত্বসংক্রান্ত সূত্রাবলি প্রণয়ন করেন। কিন্তু মূল গাণিতিক প্রক্রিয়াগুলো প্রতিষ্ঠা পায় পরবর্তী নিউটন, লিবনিজ ও অন্যান্যের হাতে। তাঁরাই ক্যালকুলাস তৈরি করেন।

অগতির গতি

গণিতবিদ জোসেফ মাযুর ঠাট্টা করে লিখেছিলেন, ত্রয়োদশ শতাব্দীতে যদি সাধু টমাস একুইনাসকে জিজ্ঞেস করা যেত, ‘হুজুর গতির কারণ কী?’ তিনি সম্ভবত সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দিতেন, ঈশ্বর। এই ধারাকেই এক যুগ পর চার্চের কর্তারা আইন করে সিদ্ধ করে দিলেন। তাঁরা ঘোষণা দিলেন অ্যারিস্টটল আর আরবেরা অবিশ্বাসী এবং গতির উৎস ঈশ্বর। কিন্তু তত দিনে দেরি হয়ে গেছে। পারস্য থেকে লিবিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ‘আধুনিক সভ্যতার’ চিন্তাকণিকা ইউরোপে ঢোকা শুরু হয়ে গেছে। তত দিনে ক্রুসেডও শেষ হয়ে গেছে। চতুর্দশ শতকে ব্রাসেলসের জেরার্ড গতিবিজ্ঞানবিষয়ক (সৃতিবিদ্যা, Kinematics) গণিতভিত্তিক গ্রন্থে গতিকে দূরত্ব ও সময়ের অনুপাত হিসেবে দেখাতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। তাঁর লেবার ডে মটু–তে (গতিবিষয়ক গ্রন্থ, ১১৮৭-১২৬০–এর মধ্যে লেখা) তিনি লিখেছিলেন, বিন্দুর চলাচলের অনুপাতের সমান সময়ে যে রেখা অতিক্রম করে, সেটা এই বাক্য গতিসংক্রান্ত গাণিতিক বিশ্লেষণী চিন্তার পরবর্তী এক শতাব্দী ধরে পথিকৃৎ হিসেবে গণ্য করা যায়। এর আগে দূরত্বের সঙ্গে দূরত্বের অনুপাত কিংবা অতিক্রান্ত সময়ের সঙ্গে অন্য সময়ের অনুপাত বোঝাতে ‘গতি’ ব্যবহার করা হতো। জেরার্ডের সংজ্ঞার মাধ্যমে আমরা সমান সময়ে অতিক্রান্ত দূরত্বের তুলনা করতে পারি। এই প্রথম গতিকে একটা মান হিসেবে ব্যবহার শুরু হলো।

১৩২৮ থেকে ১৩৫০ সালের মধ্যে অক্সফোর্ড নব্য স্থাপিত মেরটন কলেজের চারজন গণিতের অধ্যাপক (টামস ব্র্যাডওয়ার্ডাইন, উইলিয়াম হেইটাসবারি, রিচার্ড সোইনসহেড, হব ডাম্বলটন) ত্বরণ নিয়ে চিন্তা–ভাবনা শুরু করেন এবং তাৎক্ষণিক গতি (Instantenous) এবং সুষম (Uniformly accelarated motion) ত্বরণ নিয়ে ভাবছিলেন। মনে রাখা দরকার, এই সময়ে গানপাউডার, গুলি, কামানের গোলা ইত্যাদি ইউরোপে আবিষ্কৃত হওয়া শুরু হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে ছুড়ন্ত বস্তু বা প্রজেক্টাইল নিয়ে এই সময়ে প্রযুক্তিবিদেরা ভাবনাচিন্তা করছিলেন।

হেইটাসবারি ত্বরণ বিষয়ে বক্তৃতা দেওয়া শুরু করলেন। তাঁর বক্তব্যের বিষয় ছিল ‘ত্বরণ উপপাদ্য’। এই উপপাদ্যের মূল বক্তব্য ছিল এ রকম, মুক্তভাবে পতনশীল বস্তুর সময়ের সঙ্গে গতির বৃদ্ধি হয় সমান অনুপাতে। ফলে পতনশীল বস্তু প্রথম সেকেন্ডে যে গতিতে পড়ে, দ্বিতীয় সেকেন্ডে তার দ্বিগুণ, তৃতীয় সেকেন্ডে তার তিন গুণ দ্রুত পড়ে। এটা সমত্বরণের উদাহরণ। তিনি দেখলেন, প্রথম সেকেন্ডে যতটুকু দূরত্ব অতিক্রান্ত হয়েছে, দ্বিতীয় সেকেন্ডের শেষে তার চার গুণ পথ অতিক্রম করবে। তাঁর ফর্মুলা অনুযায়ী মুক্ত পতনশীল বস্তুর অতিক্রান্ত দূরত্ব আদিবেগ ও শেষবেগের গড় মান এবং ওই সময়কালের গুণফলের সমান। অর্থাৎ আধুনিক সূত্রে—

s={(v+u)/2}t

এই সূত্র নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলো হলো—

১) ইতিহাসে এই প্রথম অতিক্রান্ত দূরত্ব ও সময় থেকে গতিবেগের একটা নির্দিষ্ট মান গণনা করা গেল।

২) দূরত্ব ও সময়ের অনুপাত দুটি ভিন্ন রাশির অনুপাত।

৩) আজকের দৃষ্টিভঙ্গিতেও সূত্রটি সঠিক।

আধুনিক হিসাবে আমরা জানি, মুক্তভাবে পতনশীল বস্তুর ক্ষেত্রে v=u+gt

এখানে v হলো শেষবেগ, u আদিবেগ, g মহাকর্ষীয় ত্বরণ এবং t হলো সময়। এখান থেকে ওপরের সূত্রে বসালে পাই,

এটা আধুনিক ক্যালকুলাসের ছাত্ররা সবাই জানে।

মেরটন কলেজের চারজন অধ্যাপকের এই সূত্র দিয়ে জেনোর ধাঁধা অনেকটাই পাশ কাটানো যায়। ধরা যাক, একিলিস প্রতি ঘণ্টায় a মাইল বেগে এবং কচ্ছপ প্রতি ঘণ্টায় b মাইল বেগে এগোচ্ছে। কচ্ছপ আবার h দূরত্ব এগিয়ে থাকছে। তাহলে একিলিস t সময়ে at মাইল এগিয়ে আর কচ্ছপ bt+h এগিয়ে। তাহলে at=bt+h

t=h/(a-b)

এই সময়ে একিলিস কচ্ছপকে ধরে ফেলবে। এই সহজ সূত্র আমাদের কিন্তু অনেক কিছু বলে—

১) a অবশ্যই b থেকে বড়, নইলে t ঋণাত্নক অর্থহীন হয়ে যায়।

২) a=b হলে শূন্য দ্বারা বিভাজনের অলীক ব্যাপার চলে আসে।

৩) এই মডেল ব্যবহার করে একিলিস বা কচ্ছপের গতিবেগ মাপা সম্ভব। ‘গতি’ যে মাপা যায়, সেটা চিন্তার বিরাট উল্লম্ফন।

৪) গতি হলো দূরত্ব ও সময়ের অনুপাত।

এই সূত্র দিয়ে আমরা সহজেই গণনা করতে পারি, একিলিস কখন কচ্ছপকে অতিক্রম করবে এবং কেন করবে। কেন? কারণ a>b। এই পুরো মডেলে কোনো অসীম সংখ্যা নেই, অলীক উপাদান নেই। খুব সহজেই গাণিতিক প্রক্রিয়ায় একিলিস-কচ্ছপের পরিণতি জানা যায়। জেনোর ধাঁধার এমন ঠান্ডা নিষ্পত্তি নিশ্চয়ই দার্শনিকেরা ভাবতে পারেননি।

লেখক: অধ্যাপক, তড়িৎকৌশল ও ইলেকট্রনিকস বিভাগ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়