ভাগের কিছু সহজ কৌশল আছে। সেগুলো জানলে খুব সহজে বোঝা যায়, সংখ্যাটি আসলে কত দিয়ে ভাগ করা যাবে। যেমন ১,৪৪,৫৮,০২,৬৯,৫৮০। সংখ্যাটি অনেক বড়। এখন এই সংখ্যাটি ৫ দিয়ে বিভাজ্য কি না, তা জানতে হলে আপনাকে এমনিতে ৫ দিয়ে ওই সংখ্যাটিকে ভাগ করে দেখতে হবে। আপনার যদি এই কৌশল না জানা থাকে এবং হাতে ক্যালকুলেটর না থাকে, তাহলে সমাধান করতে বেশ বিপাকেই পড়তে হবে আপনাকে। তবে এ কৌশলগুলো জানলে আপনি মাত্র কয়েক সেকেন্ডে বলে দিতে পারবেন, সংখ্যাটি ৫ দিয়ে ভাগ করা যাবে কি না। চলুন, কৌশলগুলো জেনে নেওয়া যাক।
২ দিয়ে ভাগ
কোনো সংখ্যার শেষ অঙ্কটি ২ দিয়ে বিভাজ্য হলে বা শেষে ০ থাকলে ওই সংখ্যাটিকে ২ দিয়ে ভাগ করা যায়। যেমন ১৪২ বা ১২০। ১৪২ সংখ্যাটিতে শেষে ২ আছে। সুতরাং সংখ্যাটি অবশ্যই ২ দিয়ে ভাগ করা যাবে। ভাগফল হবে ৭১। আবার ১২০ সংখ্যাটির শেষে আছে ০। সুতরাং এই সংখ্যাটিও অবশ্যই ২ দিয়ে ভাগ করা যাবে। এ ক্ষেত্রে ভাগফল হবে ৬০। যাঁরা এখনো বোঝেননি, তাঁদের জন্য বলি, যেকোনো জোড় সংখ্যাই আসলে ২ দিয়ে বিভাজ্য।
৩ দিয়ে ভাগ
কোনো সংখ্যার অঙ্কগুলোর যোগফলকে ৩ দিয়ে ভাগ করা গেলে ওই সংখ্যাটি নিঃসন্দেহে ৩ দিয়ে বিভাজ্য। যেমন ৫২২। এখানে ৫ + ২ + ২ = ৯। ৯-কে ৩ দিয়ে ভাগ করা যায়। সুতরাং ৫২২ সংখ্যাটি ৩ দিয়ে বিভাজ্য।
৪ দিয়ে ভাগ
কোনো সংখ্যার শেষ অঙ্ক দুটি ৪ দিয়ে ভাগ করা গেলে ওই সংখ্যাটি ৪ দিয়ে বিভাজ্য। যেমন ২৫৪০ সংখ্যাটির শেষ অঙ্ক দুটি হলো ৪০। ৪০-কে ৪ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল হয় ১০। সুতরাং ২৫৪০ সংখ্যাটি ৪ দিয়ে বিভাজ্য। ভাগফল হবে ৬৩৫।
৫ দিয়ে ভাগ
কোনো সংখ্যার শেষ অঙ্ক ০ বা ৫ হলে ওই সংখ্যাটি অবশ্যই ৫ দিয়ে বিভাজ্য হবে। যেমন ৫২০ বা ৪৫৫। ৫২০-কে ৫ দিয়ে ভাগ করলে হবে ১০৪ এবং ৪৫৫-কে ৫ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল হবে ৯১। আর একদম শুরুতে যে বড় সংখ্যাটি লিখেছিলাম, ওটাও ৫ দিয়ে বিভাজ্য। কারণ সংখ্যাটির শেষে ০ আছে। বিশ্বাস না হলে নিজেরা মিলিয়ে দেখতে পারেন।
৬ দিয়ে ভাগ
কোনো সংখ্যার শেষ অঙ্ক ২ দিয়ে বিভাজ্য হলে এবং সংখ্যাটির যোগফল ৩ দিয়ে বিভাজ্য হলে ওই সংখ্যাটি ৬ দিয়ে ভাগ করা যায়। যেমন ৪০৮। এখানে শেষ অঙ্কটি ৮। মানে ২ দিয়ে বিভাজ্য। আবার সংখ্যাটির অঙ্কগুলো যোগ করলে পাব ৪ + ০ + ৮ = ১২—এটা ৩ দিয়ে বিভাজ্য। অর্থাৎ, সংখ্যাটি ৬ দিয়ে বিভাজ্য। সংখ্যাটিকে ৬ দিয়ে ভাগ করলে হবে ৬৮। তবে মনে রাখবেন, দুটি শর্তই কিন্তু মানতে হবে। যেকোনো একটা মানলে ৬ দিয়ে বিভাজ্য হবে না। যেমন ধরুন ৪১২। শেষ অঙ্কটি ২। অবশ্যই এটি ২ দিয়ে ভাগ করা যাবে। একটি শর্ত ঠিক আছে। কিন্ত দ্বিতীয় শর্ত মানছে না। মানে অঙ্কগুলোর যোগফল ৪ + ১ + ২ = ৭, যা ৩ দিয়ে বিভাজ্য নয়। সুতরাং, ৪১২ সংখ্যাটিকে ৬ দিয়ে ভাগ করা যাবে না।
৯ দিয়ে ভাগ
কোনো সংখ্যার অঙ্কগুলোর যোগফল ৯ দিয়ে ভাগ করা গেলে ওই সংখ্যাটি ৯ দিয়ে বিভাজ্য হবে। যেমন ৬৩৯০। এখানে ৬ + ৩ + ৯ + ০ = ১৮, যা ৯ দিয়ে ভাগ করা যায়। সুতরাং ৬৩৯০ সংখ্যাটিকেও ৯ দিয়ে ভাগ করা যাবে। এক্ষেত্রে ভাগফল হবে ৭১০।
১০ দিয়ে ভাগ
কোনো সংখ্যার শেষে ০ থাকলে সংখ্যাটি নিঃসন্দেহে ১০ দিয়ে ভাগ করা যাবে। যেমন ৪৮০ বা ৯৬০। দশ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল হবে যথাক্রমে ৪৮ ও ৯৬। মানে শুধু ০টি বাদ দিলেই পাওয়া যাবে উত্তর।
১২ দিয়ে ভাগ
কোনো সংখ্যার অঙ্কগুলোর যোগফল ৩ দিয়ে ভাগ করা গেলে এবং সংখ্যাটির শেষ অঙ্ক দুটি ৪ দিয়ে ভাগ করা গেলে ওই সংখ্যাটি ১২ দিয়ে বিভাজ্য হবে। যেমন ১৫১২ সংখ্যাটির শেষ অঙ্ক দুটি ১২। যা ৪ দিয়ে বিভাজ্য। আবার সংখ্যাটির অঙ্কগুলোর যোগফল ১ + ৫ + ১ + ২ = ৯, যা ৩ দিয়ে বিভাজ্য। তাই ১৫১২ সংখ্যাটিকে ১২ দিয়ে ভাগ করা যাবে। ভাগফল হবে ১২৬।
এ কৌশলগুলো জানা থাকলে সহজেই বোঝা যায়, কোন সংখ্যাকে কত দিয়ে ভাগ করা যায়। একবার যদি আপনি বুঝতে পারেন সংখ্যাটি কত দিয়ে ভাগ করা যায়, তাহলে সহজেই উত্তর বের করে ফেলতে পারবেন ভাগ করে। কিন্তু জানা না থাকলে আপনাকে বারবার বিভিন্ন অঙ্ক দিয়ে সংখ্যাটিকে ভাগ করে দেখতে হবে, ঠিক কোন অঙ্ক বা সংখ্যা দিয়ে ওটাকে ভাগ করা যায়।
যেমন ধরুন, ৫৯৬ সংখ্যাটি কত দিয়ে ভাগ করা যায়, আপনি তা জানতে চান। ধরুন, প্রথমে ৩ দিয়ে ভাগ করতে চাই আমরা। আসলেই এই ভাগ করা যায় কি না, তা এখন সহজেই বোঝা যাবে। ৫ + ৯ + ৬ = ২০, যা ৩ দিয়ে বিভাজ্য নয়। সুতরাং ৫৯৬ সংখ্যাটিকে ৩ দিয়ে ভাগ করা যাবে না।
আবার আপনি অন্যভাবে চিন্তা করতে পারেন। ৫৯৬ সংখ্যাটি কোন কোন সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা যায়, তা খুঁজে বের করতে পারেন। ওপরের কৌশলগুলো দেখে নিজেই খুঁজে বের করুন, ৫৯৬ সংখ্যাটি কোন কোন অঙ্ক বা সংখ্যা দিয়ে বিভাজ্য। দেখুন তো, পারেন কি না!
লেখক: সদস্য, সম্পাদনা দল, বিজ্ঞানচিন্তা
সূত্র: থটকো ডট কম অবলম্বনে