সাক্ষাৎকার
অভিনব পরিস্থিতিতে নতুন সম্ভাবনা খুঁজে পাওয়ার ক্ষমতা তৈরি করাই শিক্ষা—আর্নো রুবিক, রুবিকস কিউবের উদ্ভাবক
আর্নো রুবিক স্থাপত্যের অধ্যাপক। হাঙ্গেরিয়ান এই উদ্ভাবক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ত্রিমাত্রিক জ্যামিতি বোঝাতে একটা ধাঁধা বা পাজল তৈরি করেন। ১৯৮০ সালের পর সে পাজল ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। পাজলটির নাম রুবিকস কিউব। এই রুবিকস কিউব আজ ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় খেলাগুলোর একটি। ২০২০ সাল পর্যন্ত ৩৫ কোটির বেশি বিক্রি হয়েছে এই ত্রিমাত্রিক পাজল। সবাইকে নেতৃত্ব দিতে, অর্থাৎ লিডারশিপে উৎসাহ দেন তিনি। তাঁর প্রথম বই কিউবড: দ্য পাজল অব আস অল। ‘হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ’তে তাঁর একটা সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞানচিন্তার পাঠকদের জন্য তা অনুবাদ করেছেন জাহিদ হোসাইন খান।
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: আপনার বাবা ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। কীভাবে তিনি আপনার ক্যারিয়ার প্রভাবিত করেছেন?
রুবিক: বাবা-মা ও শিশু—আমরা সবাই সবাইকে নিয়েই বাঁচি। বাবা-মা যা করেন, তা দেখে আমরা বড় হই। অবশ্য জিনের কারণেও বাবা-মার কিছু বৈশিষ্ট্য পাই। বাবা আমাকে জোর করে কোনো দিকে ঠেলে দেননি। আমি আসলে মায়ের সঙ্গে বেশি সময় কাটিয়েছি। মায়ের কাছাকাছি ছিলাম। বাবা গ্রামাঞ্চলে কাজ করতেন। কিন্তু আমি তাঁর কাজ দেখেছি। আমার কাছে তাঁর কাজ বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বুদাপেস্টের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে বাবা আরও কিছু তরুণ প্রকৌশলীকে নিয়ে কাজ শুরু করেন। তাঁরা বিমান, গ্লাইডার ও অন্য কিছু পণ্য তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। ঋণের জন্য আবেদন করে কারখানা তৈরির কাজ চালিয়ে যান বাবা। আমি সেই কারখানা দেখতে গিয়েছিলাম।
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: আপনি কি অনেক কিছু পরীক্ষা করে করে বড় হয়েছেন?
রুবিক: আমি সাধারণ কিশোর ছিলাম। সম্ভব, অসম্ভব—সব করতে চাইতাম। শৈশবে গাছে চড়েছি। যতভাবে আনন্দ উপভোগ করা যায়, তা করার চেষ্টা করেছি। তবে সবকিছু করার অনুমতি ছিল না। সেগুলো ছিল আরও উত্তেজনাপূর্ণ। কৌতূহলী ছিলাম আমি। নানা জিনিস তৈরির চেষ্টা করতাম। যদিও বিশেষ কিছু তৈরি করতে পারিনি।
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: আপনার কর্মজীবনে আর কে আপনাকে অনুপ্রাণিত বা প্রভাবিত করেছে?
রুবিক: অন্য মানুষ দ্বারা আমি প্রভাবিত নই। কিন্তু অন্যরা যা করেছেন বা এখন করছেন, তা দিয়ে আমি প্রভাবিত। সাহিত্য, শিল্প ও প্রকৌশলের প্রশংসা করি আমি—এসবের সাহায্যে নানা কাজ হচ্ছে। আমি মানুষের নাম বলতে পারি না, কিন্তু তাঁরা যা তৈরি করেছেন, তা বলতে পারি। আমার খ্যাতি অন্যদের চেয়ে আলাদা হওয়ার কারণে হয়নি। বরং কিউবের কারণে আমি খ্যাতি পেয়েছি।
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: আপনি আর্ট নিয়ে পড়ার পরে স্থাপত্যে গেলেন কেন?
রুবিক: মাধ্যমিক স্কুলে পেইন্টিং, ভাস্কর্য ইত্যাদি নিয়ে শুরু করেছিলাম। পরে স্থাপত্য নিয়ে পড়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। আমার দৃষ্টিতে স্থাপত্যও একটা শিল্প। ব্যবহারিক কাজের সঙ্গে এখানে রয়েছে নান্দনিকতা।
সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তাদের ক্ষমতা আবিষ্কার করা। তারা কারা ও কী করতে পারে, তা খুঁজে বের করতে হবে। তাদের সাহায্য করা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: তারপর অধ্যাপক হলেন। আমাদের বলুন, কীভাবে ভালো শিক্ষক হওয়া যায়?
রুবিক: আপনি যা জানেন, তা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শেয়ার করা গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তাদের ক্ষমতা আবিষ্কার করা। তারা কারা ও কী করতে পারে, তা খুঁজে বের করতে হবে। তাদের সাহায্য করা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা আসলে জ্ঞান আহরণ নয়। অভিনব পরিস্থিতিতে নতুন সম্ভাবনা খুঁজে পাওয়ার ক্ষমতা তৈরি করাই শিক্ষা।
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: রুবিকস কিউবের ধারণা কোথায় পেলেন?
রুবিক: জ্যামিতি, নির্মাণশিল্প এবং ত্রিমাত্রিক কাজ করতে আগ্রহী ছিলাম। ত্রিমাত্রিক রূপান্তর ব্যাখ্যা করতে একটা টুল খুঁজছিলাম। এটাই আমাকে কিউব আবিষ্কারের পথ দেখায়। উদ্ভাবন শব্দটা পছন্দ করি না আমি। উদ্ভাবন আসলে এমন কিছু, যা আছে কিন্তু অন্যদের কাছে দৃশ্যমান বা বাস্তব নয়। আপনি জানেন, অন্য একজন আপনার রাস্তায় হাঁটতে পারেন। তিনিও পাথর দেখতে পাবেন। আপনি হয়তো একজনের লুকানো গুণাবলী দেখতে পাচ্ছেন।
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: তাহলে, কিউবের শুরুটা করেছিলেন কীভাবে?
রুবিক: প্রথমে বস্তুর প্রকৃতি ও তা কীভাবে কাজ করে, তা বুঝতে চেষ্টা করি। আমার হাতসহ অনেক সাধারণ সরঞ্জাম ব্যবহার করেছি। মাঝেমধ্যে খাবার খেতে খেতে কাজ করতাম। এভাবে কাজ করা সহজ। এ কাজ করতে করতে কয়েক মাস লেগে যায়। তারপরে তা পণ্যে রূপান্তর করে বাজারে আনার একটা প্রক্রিয়া ছিল। সব মিলিয়ে তিন বছর লেগেছিল। ১৯৭৪ সালে শুরু করেছিলাম। আর ১৯৭৭ সালে হাঙ্গেরিতে প্রথম ম্যাজিক কিউব উত্পাদন করা হয়। তারপর বিশ্ব বাজারে কিউব পৌঁছাতে আরও তিন বছর লেগে যায়। এখন আমরা কিউবের ৪০তম বার্ষিকী উদযাপন করছি।
কিউব নিয়ে নিউইয়র্ক সিটির বড় খেলনা মেলায় গিয়েছিলাম। ম্যাজিক কিউব নামে কপিরাইটবিষয়ক সমস্যা থাকায় আমাদের নাম পরিবর্তন করে রাখতে হলো ‘রুবিকস কিউব’। তারপর একটা উন্মাদনা দেখতে পেলাম
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কিউব প্রচারের সময় কোনো বাধার সম্মুখীন হয়েছেন?
রুবিক: আপনি যখন কিছু তৈরি করবেন, তার মূল্য আপনাকে অন্যদের কাছে প্রমাণ করতে হবে। আপনার সঙ্গে একমত ব্যক্তিদের খুঁজে পেতে সময় লাগে। ভাগ্যের সহায়তাও লাগে কিছুটা। দক্ষ ও পরীক্ষা করার মানসিকতা আছে, এমন কিছু সহকর্মীও প্রয়োজন। আবার টিমওয়ার্কও করতে হবে। তাহলেই আপনি একসঙ্গে এগিয়ে যেতে পারবেন। আমাদের প্রথম রুবিকস কিউব প্রস্তুতকারক ছিল ছোট একটা হাঙ্গেরিয়ান কোম্পানি। সেই কোম্পানির সাহায্যে আমার কিউব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তার ওপর ভিত্তি করে বিদেশ থেকে ক্রমবর্ধমান চাহিদা আসতে থাকে। বিশেষ করে গণিতবিদদের কাছ থেকে চাহিদা আসে। আমরা আয়রন কার্টেনের কারণে (ইউরোপে তখন সমাজতন্ত্রের জন্য ব্যবসা করা কঠিন ছিল, যেন অদৃশ্য পর্দা দিয়ে ওই অংশটা আড়াল করা, এটাকেই বলা হতো আয়রন কার্টেন বা লোহার পর্দা) বদ্ধ অর্থনীতির বাইরে বিক্রির সুযোগ খুঁজছিলাম। তখন একটি মার্কিন খেলনা কোম্পানির খোঁজ পাই। তখন একটা চুক্তি করেছিলাম। কিউব নিয়ে নিউইয়র্ক সিটির বড় খেলনা মেলায় গিয়েছিলাম। ম্যাজিক কিউব নামে কপিরাইটবিষয়ক সমস্যা থাকায় আমাদের নাম পরিবর্তন করে রাখতে হলো ‘রুবিকস কিউব’। তারপর একটা উন্মাদনা দেখতে পেলাম। পরের তিন বছরে আমরা ১০০ মিলিয়ন কিউব বিক্রি করেছিলাম!
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: আপনি কি জিনিসটার সঙ্গে আপনার নাম যুক্ত করার সিদ্ধান্তে খুশি ছিলেন?
রুবিক: খুশি বা অখুশি ছিলাম না। আইনগত কারণে মার্কিন কোম্পানি আমাদের এ পরামর্শ দেয়। আমি মেনে নিয়েছি। আর নির্মাতার নামে অনেক পণ্য আছে। আমি নিশ্চিত যে আপনি যখন বাড়ি পরিষ্কারের জন্য হুভার (ভ্যাকুয়াম ক্লিনার) ব্যবহার করেন বা পোর্শে গাড়ি চালান, তখন এসবের পেছনের মানুষটির কথা ভাবেন না।
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: খেলনা বাজারে রুবিকস কিউব এমন প্রভাব ফেলবে, তা কখন বুঝতে পারলেন?
রুবিক: এটা যখন ঘটছিল, তখন আমি বুঝতে পারিনি। পরে জেনেছি। আমরা যখন শুরু করি, খেলনা ব্যবসার দুনিয়ায় পাজল বা ধাঁধা মূলধারায় ছিল না। আমি জিগস পাজলের (টুকরো টুকরো অংশ দিয়ে ছবি তৈরির পাজল) কথা বলছি না। ওটা মেলানো হয়ে গেলেই খেলা শেষ হয়ে যায়। আপনি সেটা ফ্রেম করে রাখতে পারেন বা বাক্সে রেখে দিতে পারেন। কিন্তু আমার বানানো ধাঁধাটা আরও জটিল। শেষ করলেও শেষ হয় না। আপনি ওটা আবার ভিন্নভাবে বা দ্রুত এলোমেলো করে নিতে পারেন। এই পাজল তাই এখন বেশি জনপ্রিয়। সবাই নতুনত্বের সন্ধান করছে। আমার নিজের বইটি লেখার সময় আমি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিউবের প্রভাব নিয়েও জানার চেষ্টা করেছি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, এই পাজল নিয়ে ৩ হাজারের বেশি অ্যাপ আছে। অনেক বই আছে। কয়েকটি বই তো কয়েক মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে। অন্য অনেক বই আছে, যা সমস্যা সমাধান বা সৃজনশীলতা কিংবা জটিলতার নানা বিষয় উপস্থাপন করে; এটা বোঝানোর জন্য প্রচ্ছদে রুবিকস কিউবের চিত্র আছে, এমন বই আছে পাঁচ শর বেশি।
অধিকাংশ মানুষের বিভিন্ন ধারণা আছে। আমি মনে করি, আমাকে যা আলাদা করে তা হলো, বিশেষভাবে ভালো বুদ্ধি মূল্যায়ন করি আমি
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: কীভাবে রুবিকস কিউব সমাধান করা যায়, তা ব্যাখ্যা করে অনেকেই বই লিখেছেন। আপনি কি এ নিয়ে বিরক্ত?
রুবিক: মোটেই না। আমাদের খেলনাটা অন্যদের দেখানো দরকার ছিল। এটা যে সমাধান করা যায়, তা বোঝাতে হতো। এটা সমাধান অনেক কঠিন বলে অনেকেই আপাতদৃষ্টিতে অমীমাংসিত বলে মনে করেন। আমি মনে করি, যেকোনো ধাঁধার মতো এটারও আপনার নিজেরই সমাধান খুঁজে বের করা উচিৎ।
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: আপনি পরে অন্যান্য রুবিক পণ্য তৈরি করেছেন। এসব উদ্ভাবন কীভাবে চালিয়ে গিয়েছিলেন? কোনো নির্দিষ্ট ধারণা ভালো মনে করেছিলেন?
রুবিক: অধিকাংশ মানুষের বিভিন্ন ধারণা আছে। আমি মনে করি, আমাকে যা আলাদা করে তা হলো, বিশেষভাবে ভালো বুদ্ধি মূল্যায়ন করি আমি। যদি কোনো আইডিয়া মূল্যবান মনে করি, যতক্ষণ তা নিখুঁত করা না যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত হাল ছেড়ে দিই না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা করি, তা আমি ভালোবাসি। লক্ষ্য অর্জনের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ।
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: এমন একটি আলোচিত পণ্য আপনার হাতে, সব সময় কি সাফল্য ধরে রাখার চাপ অনুভব করেন?
রুবিক: আমি কখনোই এই সাফল্যের শিখরে আসার বিষয়টি পরিকল্পনা করিনি। আমার কোনো ধারণা ছিল না যে আমি পারব। এর পরে আমি এরকম কোনো চিন্তা করিনি যে আমার ভালো করতে হবে। আমার একমাত্র লক্ষ্য ভালো করা। মানুষ এটা পছন্দ করবে কি না, তা নিয়ে ভাবিনি কখনো। আমি এটা করতে ভালোবাসি। আমার লক্ষ্য পূরণ করতে হবে। অন্য কিছুতে আগ্রহ নেই আমার। এর পরে কী হবে, তা আমার হাতে নেই। এটা আসলে অন্যদের ওপর নির্ভর করে।
কিউব মানুষের সঙ্গে শক্তিশালী একধরনের সংযোগ তৈরি করেছে। এটা আসলে জনপ্রিয় হওয়ার চেয়ে কঠিন। কিউব হয়তো তাদের শিখিয়েছে যে তারা কঠিন সমস্যা সমাধান করতে পারে। সফল হওয়ার জন্য অন্য কারও ওপর নির্ভর করা যায় না। কিউবের একটা অর্থ আছে। এসবই আমার জন্য যথেষ্ট।
আমি এটাকে এসটিইএএম (STEAM—বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, আর্ট ও গণিত) বলতে পছন্দ করি। আমি মনে করি, আর্ট বা কলা শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মূল বিষয় হলো, এসবই আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করতে হবে
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: আপনি নিজের স্টুডিও তৈরি করেছেন। কেন?
রুবিক: আমার আর্থিক সামর্থ্য ছিল। একটা দল তৈরির চেষ্টা করেছি। একসঙ্গে কাজ করার চেষ্টার একটা ধারণা ছিল আমার। আগে এমনটা করিনি। যাহোক, এই পরিকল্পনা সফল ছিল। যদিও আমার মনে হয়েছে, এটা আমার জন্য সঠিক নয়। স্টুডিওটি এখনও চলমান। ওটা এখন এককভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে রুবিক ব্র্যান্ড নিয়ে একটি ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানের দারুণ একটি দল কাজ করছে। আমি পরিচালনা পর্ষদে আছি ও পরামর্শ দিতে পারি। আমার ভূমিকা আছে, যদিও আমি এ কোম্পানির দৈনন্দিন কার্যক্রমের অংশ নই।
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউ: স্টেম (STEM—বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত) শিক্ষার একজন সমর্থক হিসাবে আপনি কোন ধরনের উন্নতি দেখতে চান? প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাহায্য করার জন্য কী করা উচিত?
রুবিক: আমি এটাকে এসটিইএএম (STEAM—বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, আর্ট ও গণিত) বলতে পছন্দ করি। আমি মনে করি, আর্ট বা কলা শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মূল বিষয় হলো, এসবই আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করতে হবে। এবং এটা চালিয়ে যেতে হবে। এই ছোট নীল গ্রহ ও তার জনসংখ্যা ভবিষ্যত প্রজন্মের এসব বিষয় সম্পর্কে শেখার ওপর নির্ভরশীল। আমি ও আমার কোম্পানি সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। কিউব যেন সবকিছুর একটি সর্বজনীন প্রতীক হয়ে উঠেছে।
আমি বিশ্বাস করি, শিক্ষার বিষয় হওয়া উচিত কৌতূহল বাড়ানো। একই সঙ্গে সমস্যা সমাধানে প্রাপ্তি এবং সেই সমাধান খুঁজে পাওয়ার আনন্দটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ‘ইউ ক্যান ডু দ্য রুবিকস কিউব কারিকুলাম’ নামের পাঠ্যক্রম প্রবর্তন করেছি যুক্তরাষ্ট্রের শত শত স্কুলে। গণিত শিক্ষকদের অ্যালগরিদম, জ্যামিতি, অনুপাত ও সমানুপাতিক গাণিতিক ক্রিয়াকলাপ, বীজগণিত, কম্বিনেটরিকস, এমনকি পদার্থবিদ্যা সম্পর্কে শিখতে সাহায্য করার জন্য একে অন্য অনেক জায়গায় বিস্তৃতও করছি। এই পাঠ্যক্রম বেশ আকর্ষণীয় ও ইন্টার্যাকটিভ।