বৃত্ত ৩৬০ ডিগ্রি, এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু কেন ৩৬০ ডিগ্রিই হয়? ১০° বা ১০০° হয় না কেন? চলুন, জানা যাক।
ব্যাবিলনীয় সভ্যতায় ৬০ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতির ব্যবহার ছিল বহুল প্রচলিত। ১৯৫০ সালে ব্যাবিলনে (বর্তমান ইরাকে) একটি কাদামাটির ফলক পাওয়া যায়। সেই ফলকে বৃত্তের পরিধি ও এর মাঝে একটা সুষম ষড়ভুজ আঁকা দেখা গেছে। ওই সুষম ষড়ভুজকে ৬টি সমবাহু ত্রিভুজে ভাগ করা যায়। সমবাহু ত্রিভুজের প্রতিটি কোণ ৬০ ডিগ্রি। এই মান অবশ্য ব্যাবিলনীয়রা ধরে নিয়েছিল কোণ পরিমাপের একক হিসেবে। যাহোক, ৬টি সমবাহু ত্রিভুজের কেন্দ্রের সবগুলো কোণ মিলে হবে ৬×৬০°= ৩৬০°।
এ ছাড়া বৃত্ত ৩৬০ ডিগ্রি হওয়ার আরেকটি ব্যাখাও আছে। মাসের ইংরেজি নাম মান্থ (Month)। আবার Monday বা সোম শব্দটিও চাঁদের সঙ্গে সম্পর্কিত। সোম মানেও চাঁদ। ব্যাবিলনের জ্যোতির্বিদেরা লক্ষ করেছিলেন, চাঁদের এক দশা থেকে অন্য দশায় ফিরে আসতে প্রায় ৩০ দিন সময় লাগে। তাঁরা ৩০ দিনকে এক মাস ধরে নেন। যদিও এখন আমরা জানি, এক চান্দ্রমাস হতে সম্পূর্ণ ৩০ দিন লাগে না। ২৯ দিন থেকে কিছুটা বেশি সময় লাগে। তাঁরা এটাও লক্ষ করেছিলেন, এক ঋতু থেকে আরেক ঋতু ফিরে আসতে সময় লাগে প্রায় ১২ মাস।
ব্যাবিলনীয়দের এ সময় একটা ভুল ধারণা ছিল। তাঁরা মনে করত, পৃথিবীর চারপাশে সূর্য ঘোরে। মানে পৃথিবীর চারপাশে সূর্যের ঘুরে আসতে সময় লাগে ১২ মাস। তাহলে এক বছর হয় ১২×৩০=৩৬০ দিনে। যদিও এখন আমরা জানি, এক বছরে প্রায় ৩৬৫ দিন। ব্যাবিলনীয়দের সূর্যকেন্দ্রিক ধারণা ভুল ছিল, তবে তাঁদের হিসেবটা প্রায় ঠিকই ছিল। এ ভাবনাকে তাঁরা বৃত্তের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছিলেন। মূলত ওপরের এ দুই ধারণা থেকে বৃত্তের ৩৬০ ডিগ্রির ধারণা আসে।
লেখক: শিক্ষার্থী, ঝিনাইদহ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
সূত্র: অঙ্ক ভাইয়া ও সায়েন্স এবিসি