এর উত্তর জানার আগে কয়েকটি জিনিস জানা প্রয়োজন। প্রথমত, বিশুদ্ধ পানিকে ক্রমাগত ঠান্ডা করতে থাকলে তার ঘনত্বও সেই হারে বাড়তে থাকে। এভাবে ঠান্ডা করতে থাকলে দেখা যায়, তাপমাত্রা কমে ৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা সেলসিয়াসে নেমে এলে পানির ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি হয়। অর্থাৎ পানির সর্বোচ্চ ঘনত্ব দেখা যায় এই তাপমাত্রায়।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এরপর এই পানিকে ঠান্ডা করলেও তার ঘনত্ব আর বাড়ে না। উল্টো পানির ঘনত্ব ধীরে ধীরে কমতে থাকে। শূন্য (০) ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার কম তাপমাত্রায় পৌঁছালে পানি জমে বরফে পরিণত হয়। বুঝতেই পারছেন, এ কারণেই বরফের ঘনত্ব পানির চেয়ে কম। তাই কোনো বরফখণ্ড সমপরিমাণ পানির চেয়ে হালকা হয়।
পরীক্ষা করে দেখা গেছে, শূন্য ডিগ্রি তাপমাত্রায় বরফের আপেক্ষিক ঘনত্ব ০ দশমিক ৯২৬৮। কিন্তু একই তাপমাত্রায় পানির আপেক্ষিক ঘনত্ব ০ দশমিক ৯৯৯৮। এ কারণে সমআকারের (যদি কোনো পাত্রে রেখে পানি ও বরফকে আকার দেওয়া হয়) পানি ও বরফের মধ্যে বরফ পানির তুলনায় ওজনে হালকা হয়। আর পানির চেয়ে হালকা হলে তা তো পানিতে ভাসবেই!
পানির এই বিশেষ গুণের কারণেই শীতপ্রধান দেশের নদী, নালা, পুকুর বা হ্রদের পানি জমে বরফ হয়ে গেলেও মাছ মরে না। পানিতে যেটুকু বরফ জমে, তা পানির চেয়ে হালকা হওয়ায় পানির উপরের স্তরে ভেসে ওঠে। এ কারণে এসব দেশে নদী বা হ্রদের ওপরে বরফ দেখা গেলেও নিচে পানি থাকে তরল অবস্থায়। ফলে নিচের স্তরে মাছ বা অন্যান্য জলজ প্রাণী দিব্যি সাঁতার কেটে ঘুরে বেড়াতে পারে।
লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, বিজ্ঞানচিন্তা