পরমাণু শব্দটি কিভাবে এলো

খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৬০০ বছর আগে (অনেকের মতে ২০০ খ্রিষ্টাব্দে) ভারতীয় দার্শনিক কণাদ বলেছিলেন, সব পদার্থই অতি ক্ষুদ্র আর অবিভাজ্য কণা দিয়ে তৈরি। এদিকে খ্রিষ্টপূর্ব ৪৫০ সালে গ্রিসের এক দার্শনিক লিউসিপ্পাসও একই কথা বলেছিলেন। কোনো বস্তুকে অবিরামভাবে ভেঙে যেতে থাকলে কী হবে, সেটি তিনি কিছুতেই বুঝতে পারছিলেন না।

এ প্রক্রিয়ার নিশ্চয়ই একটি শেষ আছে। পাশাপাশি এভাবে বারবার একটি বস্তুকে ভাঙতে ভাঙতে এমন একটি পর্যায়ে আসবে, যখন সেই বস্তুকে আর ভাঙা যাবে না। লিউসিপ্পাসের ছাত্র ছিলেন আরেক দার্শনিক ডেমোক্রিটাস (খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬০-৩৭০)। ডেমোক্রিটাসও এভাবে চিন্তা করেছিলেন। শোনা যায়, তিনি বিশ্বজগৎ সম্পর্কিত তত্ত্ব নিয়ে প্রায় ৭২টি বই লিখেছিলেন।

এসব বইয়ের এখন কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না। তাঁর তত্ত্বগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে, এই বিশ্বজগত্ অতি ক্ষুদ্র কণা দিয়ে তৈরি। এই কণাগুলো এতই ছোট যে সেগুলোকে আর ভাঙা সম্ভব নয়। ডেমোক্রিটাস এসব অতি ক্ষুদ্র কণার নাম দিয়েছিলেন অ্যাটমস (Atomos)। গ্রিক এই শব্দের অর্থ অবিভাজ্য বা অভঙ্গুর, যাকে আর ভাঙা যায় না।

এখান থেকে ইংরেজিতে অ্যাটম (Atom) শব্দটি এসেছে। এই শব্দটির বাংলা করা হয়েছে পরমাণু। শব্দটি ভাঙলে পাওয়া যায় পরম ও অণু। পরম অর্থ প্রথম বা চূড়ান্ত। অর্থাৎ যে অণুর পর আর কিছু নেই।

*লেখাটি ২০১৭ সালে বিজ্ঞানচিন্তার জুন সংখ্যায় প্রকাশিত