ঘনত্বের ব্যাপারস্যাপার

যদি প্রশ্ন করা হয়, এক চামচ বস্তুর ভর সর্বোচ্চ কত হতে পারে? খুব বেশি হলে কয়েক গ্রাম। কয়েক গ্রামই হবে, তবে সেটা সাধারণ বস্তুর ক্ষেত্রে। আসলে সব সময় তা নয়। পরমাণুর সাধারণ বস্তু না নিয়ে এক চামচ পরমাণুর নিউক্লিয়াস ওজন করা হয়। তাহলে সেটার ভর হবে ২x১০১১ বা ২,০০,০০,০০,০০,০০০ কেজি। ভাবা যায়! আসলে এটি হয়েছে ঘনত্বের কারণে। গড় ঘনত্ব যত বেশি, তার ভরও তত বেশি। আমাদের চিরচেনা পানির ঘনত্ব যেখানে 1000 kg/m3, সেখানে নিউক্লিয়াসের ঘনত্ব 0.204x1018 kg/m3|

কোনো বস্তুর একক আয়তনের ভরকেই ঘনত্ব বলে। ঘনত্বটা বিজ্ঞানে এল কখন? আর্কিমিডিসের ইউরেকা কাণ্ডের কথা সবার কমবেশি জানা। তারপর থেকেই ঘনত্বের ব্যাপারটা বিজ্ঞানে শক্তপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে। ঘনত্বের সংকেত ρ এবং এর একক kg/m3। ঘনত্ব নির্ণয়ের সাধারণ সূত্র হচ্ছে ρ=m/V। এখানে m হলো ভর এবং V আয়তন। যেকোনো বস্তুর ঘনত্ব তার তাপমাত্রার ও চাপের ওপর নির্ভরশীল।

গ্রহ, নক্ষত্র, উপগ্রহের মতো মহাজাগতিক বস্তুরও ঘনত্ব আছে। এদের ঘনত্ব নির্ণয়ের সহজ সূত্র হলো C=m/r2; অর্থাৎ ভরকে ব্যাসার্ধের বর্গ দিয়ে ভাগ করতে হবে।

প্রতিটি পদার্থের জন্য একটি নির্দিষ্ট ঘনত্ব রয়েছে। এর সঙ্গে যদি অন্য কোনো পদার্থ যুক্ত হয়, তবে এর ঘনত্ব পরিবর্তন হতে পারে। এই নীতির মাধ্যমেই অনেক পদার্থের বিশুদ্ধতা যাচাই করা হয়।

দৈনন্দিন জীবনেও ঘনত্বের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পানি গরম করা থেকে বেলুন ওড়ানো, ফানুস ওড়ানো থেকে ডিম পচা নাকি ভালো নির্ণয় করা সব জায়গাতেই ঘনত্বের ব্যবহার আছে।

সূত্র: ব্রিটানিকা ডট কম