পদার্থবিজ্ঞানে এশিয়ার প্রথম নোবেল পুরস্কার বিজয়ী স্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন প্রকৃতির রং, রূপ, শব্দ ও আলো নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করেছেন। তাঁর কাজকর্ম ও জীবনযাপনপদ্ধতি খেয়াল করলে দেখা যায়, জীবনের প্রতিটি সেকেন্ড যেন তিনি ব্যয় করেছেন বিজ্ঞানের পেছনে, বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসায়। ১১ বছর বয়সে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেছেন, ১৩ বছর বয়সে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ভর্তি হন মাদ্রাজের প্রেসিডেন্সি কলেজের বিএ ক্লাসে। ১৫ বছর বয়সে বিএ এবং ১৭ বছর বয়সে এমএ পাস করে ফেলেন। ১৮ বছর বয়সে কর্মজীবন এবং সংসারজীবন শুরু করেন। মনে হয় যেন প্রচণ্ড তাড়া নিয়ে এসেছিলেন এই পৃথিবীতে। একেবারে শৈশবের কয়েকটি বছর বাদ দিলে ৮২ বছরের দীর্ঘ জীবনের পুরোটাই তিনি বিজ্ঞানচর্চায় মেতে ছিলেন। ব্রিটিশ-ভারতীয় সরকারের অর্থ বিভাগে উচ্চতর পদে পূর্ণকালীন চাকরি করতেন। সে সময় গবেষণা করেছেন কলকাতার ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্সে। এই অ্যাসোসিয়েশনের একেবারে সাদামাটা গবেষণাগারে বসে তিনি আবিষ্কার করেছেন যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক রহস্য। মাত্র দুই শ রুপির যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে আবিষ্কার করেছেন রমন ইফেক্ট। পরীক্ষণ পদার্থবিজ্ঞানীর আর কোনো আবিষ্কার এত কম দামের যন্ত্রপাতি দিয়ে করা সম্ভব হয়নি। তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এ রকম ঘটনা ঘটা সম্ভব ছিল আগে। আইনস্টাইন তাঁর পৃথিবী বদলে দেওয়া তত্ত্বগুলো আবিষ্কার করেছিলেন চিঠিপত্রের ফেলে দেওয়া খামের ওপর পেনসিল দিয়ে লিখে লিখে। কিন্তু বর্তমান কম্পিউটারের যুগে তত্ত্বীয় গবেষণায়ও লাখ লাখ টাকার গবেষণা সরঞ্জাম লাগে। ১৯২৮ সালের আবিষ্কারের জন্য ১৯৩০ সালেই স্যার রমন পেয়েছেন নোবেল পুরস্কার। সমগ্র এশিয়ায় সেটাই ছিল প্রথম পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কার।
১৯২০ থেকে ১৯২৮ সালে রমন ইফেক্ট আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত আলোর ধর্ম নিয়ে পৃথিবীব্যাপী অনেকেই গবেষণা করছিলেন। ইংল্যান্ডে লর্ড র্যালে, প্যারিসে জাঁ ক্যাবানিস, নিউইয়র্কে রবার্ট উড, মস্কোর ইনস্টিটিউট অব ফিজিকসে গ্রেগরি ল্যান্ডসবার্গ, লিওনিদ ম্যান্ডেলেস্ট্যাম আলোর বিক্ষেপণ বা স্ক্যাটারিং ও বিচ্ছুরণের ধর্ম নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করছিলেন। আর কলকাতায় বসে জোরেশোরে কাজ করছিলেন অধ্যাপক রমন। লর্ড র্যালে ইলাস্টিক স্ক্যাটারিংয়ের ধর্ম ব্যাখ্যা করেছিলেন। যদি কোনো আলোর কণা (ফোটন) কোনো বস্তুকণার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে গতিপথ পরিবর্তন করে, এবং যদি সেই পরিবর্তিত ফোটনের শক্তি আগের ফোটনের শক্তির সমান থাকে, তাহলে সেই স্ক্যাটারিংকে ইলাস্টিক স্ক্যাটারিং বলা হবে।
১৯০৫ সালে আইনস্টাইন আলোর তরঙ্গের কম্পাঙ্ক ও শক্তির সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। কম্পাঙ্ক ও শক্তির সম্পর্ক সমানুপাতিক। তরঙ্গের কম্পাঙ্ক যত বেশি হবে, শক্তিও তত বেশি হবে। আবার তরঙ্গদৈর্ঘ্য ও কম্পাঙ্কের মধ্যে সম্পর্ক বিপরীতানুপাতিক। তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত বেশি হবে, কম্পাঙ্ক তত কম হবে। আবার কম্পাঙ্ক যত বেশি হবে, তরঙ্গদৈর্ঘ্য তত কম হবে। আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চেয়ে ছোট মাপের কোনো বস্তুকণার সঙ্গে যদি আলোর ধাক্কা লাগে, সে ক্ষেত্রে যে ইলাস্টিক স্ক্যাটারিং হয়, তার নাম র্যালে স্ক্যাটারিং। এ ধরনের বিক্ষেপণে মোট শক্তির পরিমাণের কোনো তারতম্য হয় না। অর্থাৎ বিক্ষেপণ হওয়ার আগে আলোর যে শক্তি ছিল, বিক্ষিপ্ত হওয়ার পরও সেই একই পরিমাণ শক্তি থাকবে। ফলে তাদের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কিংবা কম্পাঙ্কের কোনো পরিবর্তন হবে না।
রমন যে স্ক্যাটারিং পর্যবেক্ষণ করেন (যা পরে রমন স্ক্যাটারিং হিসেবে আমরা জানি), তা হলো ইনইলাস্টিক স্ক্যাটারিং। ইনইলাস্টিক স্ক্যাটারিংয়ে ফোটনের শক্তির পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তন পরিমাণে খুব কম হলেও পদার্থবিজ্ঞানের পরিমাপে সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কোনো পদার্থের কণার সঙ্গে যখন আলোর কণা বা ফোটনের ধাক্কা লাগে, তখন সেই ফোটনের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তন দুভাবে হতে পারে। ধাক্কার পরে তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেড়েও যেতে পারে আবার কমেও যেতে পারে। তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ার অর্থ হলো শক্তি কমে যাওয়া, আবার তরঙ্গদৈর্ঘ্য কমে যাওয়ার অর্থ হলো শক্তি বেড়ে যাওয়া। এই কমা-বাড়ার পরিমাণটা খুবই ছোট। ফলে আলোর বেশির ভাগ কণার শক্তির কোনো পরিবর্তন হয় না, খুব সামান্য অংশেরই পরিবর্তন হয়। এই খুব সামান্য পরিবর্তনটা রমন আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন বলেই এই ঘটনাকে রমন ইফেক্ট বলা হয়। কঠিন, তরল, বায়বীয় যেকোনো অবস্থার পদার্থের মধ্যে আলো প্রবেশ করলে এই ব্যাপারটা ঘটে। এবং কোন পদার্থে কী পরিমাণ শক্তির পরিবর্তন হবে, তা নির্দিষ্ট। অর্থাৎ হাইড্রোজেনে যে পরিবর্তন হবে, নাইট্রোজেনে পরিবর্তন হবে তার চেয়ে ভিন্ন, বাতাসে হবে এক রকম, পানিতে হবে আরেক রকম ইত্যাদি। তার মানে রমন ইফেক্ট কাজে লাগিয়ে পদার্থের রাসায়নিক পরিচয় শনাক্ত করা যায়।
বিক্ষেপণের ফলে শক্তির বাড়া-কমার ব্যাপারটা আরেকটু ব্যাখ্যা করা যাক। দুই ধরনের রমন ইফেক্ট হতে পারে।
(১) বস্তুর ভেতর দিয়ে আলো যাওয়ার সময় বস্তুকণা আলোর ফোটনের কিছু শক্তি শোষণ করে নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে যে ফোটন বেরিয়ে আসবে, তার শক্তি হবে যে ফোটন ঢুকেছিল তার চেয়ে কম। অর্থাৎ তার তরঙ্গদৈর্ঘ্য হবে আগের তুলনায় বেশি। এ রকম ঘটনা ঘটলে তাকে বলা হয় স্টোকস রমন স্ক্যাটারিং। ১৮৫২ সালে বিজ্ঞানী জর্জ স্টোকস এ রকম ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। জর্জ স্টোকসকে সম্মান জানিয়ে এ রকম ঘটনার নাম দেওয়া হয়েছে স্টোকস রমন স্ক্যাটারিং।
(২) স্টোকস রমন ইফেক্টে যা ঘটে, তার উল্টোটাও ঘটতে পারে। আলো কোনো মাধ্যমের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় সেই মাধ্যম থেকে কিছু শক্তি শোষণ করে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে যেতে পারে। তখন যে ফোটন বের হবে তার শক্তি, যে ফোটন ঢুকেছিল তার শক্তির চেয়ে বেশি হবে। অর্থাৎ তার তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম হবে। এ রকম ঘটনাকে বলে বিপরীত স্টোকস বা অ্যান্টি-স্টোকস রমন স্ক্যাটারিং।
রমন ইফেক্টের ফলে আলোর যে পরিবর্তিত বর্ণালি দেখা যায়, তাকে রমন স্পেকট্রা (Raman Spectra) আর যে পরিবর্তিত রেখা দেখা যায়, তাকে রমনরেখা বা রমন লাইন (Raman Line) বলা হয়।
পর্যায় সারণির মৌলিক পদার্থগুলোর নিউক্লিয়াসে প্রোটনের সংখ্যা দিয়ে যেমন পদার্থটি কী তা চেনা যায়, যেমন ছয়টি প্রোটন থাকলে কার্বন, আটটি থাকলে অক্সিজেন ইত্যাদি। সে রকম রমন স্পেকট্রামও পদার্থের মধ্যে নির্দিষ্ট। এক পদার্থের রমন স্পেকট্রাম অন্য পদার্থের রমন স্পেকট্রামের চেয়ে ভিন্ন। ফলে রমন স্পেকট্রামকে বলা চলে পদার্থের সুনির্দিষ্ট পরিচয়পত্র। বর্তমানে রমন স্পেকট্রোস্কোপ হলো রাসায়নিক পদার্থের উপাদান বিশ্লেষণের একটি প্রধান নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি।
বর্তমানে উন্নত যন্ত্রপাতির সাহায্যে আলোর অতি সূক্ষ্ম পরিবর্তনও রেকর্ড করা যায়। কম্পিউটার প্রোগ্রামের সাহায্যে নিখুঁতভাবে ডেটা বিশ্লেষণ করা যায়। অথচ সেই সময়ে রমন অনেক বুদ্ধি খাটিয়ে খুবই সহজ কিছু যন্ত্রপাতির সাহায্যে এই আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন। রমন পরবর্তী সময়ে অনেকবার উল্লেখ করেছেন যে মাত্র দুই শ রুপির যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে তিনি নোবেল পুরস্কার নিয়ে এসেছেন।
রমন ইফেক্ট আবিষ্কারের সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল বিক্ষিপ্ত আলো চিহ্নিত করা। বিক্ষিপ্ত আলোর তীব্রতা এত কম যে কোনোভাবেই সেই আলো ধরা যাচ্ছিল না। সূর্যের আলো তরল পদার্থে প্রবেশ করানোর জন্য তিনি শুরুতে যন্ত্রনিয়ন্ত্রিত আয়না ব্যবহার করেছিলেন। এ আয়নাটি সূর্যের আলো যেদিক থেকে আসে, সেদিকে ঘুরে যায়, ফলে পুরো দিনের বেলার সূর্যের আলো পাওয়া যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই কাজ করতে হয়েছে। কিন্তু রমন বুঝতে পারেন যে সূর্যের আলোর যেটুকু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে পৃথিবীতে আসে, সেগুলোর তীব্রতা এই পরীক্ষার জন্য যথেষ্ট নয়। তিনি ভাবলেন দূরবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করে সূর্যের আরও কাছ থেকে আলো নিয়ে আসা যায়, যেগুলোর তীব্রতা স্বাভাবিক আলোর চেয়ে বেশি হবে।
১৯২৭ সালে তিনি সাত ইঞ্চি ব্যাসের রিফ্র্যাক্টিং টেলিস্কোপ ব্যবহার করতে শুরু করলেন। টেলিস্কোপের লেন্সের সঙ্গে একটি কম ফোকাস দূরত্বের লেন্স জুড়ে দিলেন রমন। তাতে সূর্যের আলো কেন্দ্রীভূত হয়ে সরু ও তীব্র আলোকরশ্মিতে পরিণত হলো। সেই তীব্র আলোকরশ্মি ব্যবহার করা হলো আলোর উৎস হিসেবে। ১৯২৮ সালের শুরুতে মার্কারি-আর্ক ল্যাম্প ব্যবহার করে আরও তীব্র আলোকরশ্মি তৈরি করেন রমন। সেটাতে তিনি কোবাল্ট-গ্লাস ফিল্টার ব্যবহার করেন। মাঝেমধ্যে তরল ফিল্টারও ব্যবহার করেছেন। মিশ্র বর্ণের আলোকে এক বর্ণের আলোতে পরিণত করার জন্য এসব অপটিক্যাল ফিল্টার ব্যবহার করা হয়।
একটা বেগুনি ফিল্টার ব্যবহার করে বেগুনি বর্ণের আলো তরলের ওপর ফেলা হলো। সেই আলোর কিছুটা তরলে বিক্ষিপ্ত হলো, কিছুটা শোষিত হলো এবং কিছুটা তরলের ভেতর দিয়ে চলে গেল। রমন ইফেক্ট দেখার জন্য দরকার বিক্ষিপ্ত আলো। আপতিত আলোর সঙ্গে সমকোণে আরেকটি বেগুনি ফিল্টার রাখা হলো। সেদিকে চোখ রেখে বিক্ষিপ্ত আলোর রেখা পাওয়া গেল। এভাবে বিক্ষিপ্ত আলো হচ্ছে ইলাস্টিক স্ক্যাটারিং বা র্যালে স্ক্যাটারিং। বেগুনি আলো ঢুকল তরলে, বেগুনি আলো বের হলো। অর্থাৎ শক্তির কোনো পরিবর্তন হলো না। যদি আলোর শক্তির পরিবর্তন ঘটে, তবে আলোর বর্ণ পরিবর্তিত হয়ে যাবে। তরল পদার্থ যদি আলো থেকে কিছু শক্তি শোষণ করে ফেলে, তাহলে দেখা যাবে স্টোকস–রমনরেখা। এই রেখার রং বদলে যাবে। আলোর যেসব রং আমরা দেখি, তার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হচ্ছে বেগুনি। এখন বেগুনির শক্তি চলে গেলে কী পরিমাণ শক্তি চলে গেছে, তার ওপর নির্ভর করে আলোর বর্ণ নীল, সবুজ, হলুদ, কমলা কিংবা লাল, যেকোনোটাই হতে পারে। এই রঙের রমনরেখা খালি চোখে দেখা যায়। কিন্তু এর বাইরেও আরও অনেক রং হতে পারে, যেমন অবলোহিত রেখা। সেগুলো আমরা খালি চোখে দেখতে পাব না।
আবার যদি আপতিত আলো যে তরলের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে সেই তরলের কাছ থেকে শক্তি শোষণ করে, তাহলে দেখা যাবে অ্যান্টি–স্টোকস রমনরেখা। অর্থাৎ বেগুনি রঙের আলোর শক্তি বেড়ে সেই আলো অতিবেগুনি হয়ে যাবে। এই অতিবেগুনি রশ্মি আমাদের চোখে পড়লে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
রমন ইফেক্ট দেখার জন্য রমন দ্বিতীয় বেগুনি ফিল্টারটা বদলে যেই সবুজ ফিল্টার দিয়েছেন, সেখানে সবুজ রমনরেখা দেখা গেল। এই রেখাটি স্টোকস-রমন স্ক্যাটারিংয়ের ফলে সৃষ্টি হয়েছে।
রমন শুরুতে এই রেখাগুলো খালি চোখেই দেখেছেন অন্ধকার ঘরে। মানুষের চোখ অনেক সূক্ষ্ম আলোর রেখা দেখতে পায়। খালি চোখে দেখে নিশ্চিত হওয়ার পর রমন বর্ণালিবীক্ষণ যন্ত্র বা স্পেকট্রোমিটার ব্যবহার করেছেন। সেই সময়ের বেবি কোয়ার্টজ স্পেকট্রোগ্রাফের ক্ষমতা খুব বেশি ছিল না। রমন ফটোগ্রাফিক প্লেটে এই রমনরেখার ছবি তুলেছিলেন। যেহেতু এই বিক্ষিপ্ত আলোর শক্তি খুবই কম, তাই তাদের ফটো তুলতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগত। অনেক সময় প্রায় তিন-চার দিন ধরে আলো প্রবেশ করানোর পর রমনরেখার ছবি পাওয়া যেত।
সেই সময়ের সঙ্গে বর্তমান সময়ের তুলনা করলে অবাক হতে হয়। বর্তমানে আলোর উৎস হিসেবে শক্তিশালী মনোক্রমিক বা এক বর্ণের লেজার রশ্মি ব্যবহার করা হয়। অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে সেই লেজার রশ্মি পদার্থের ভেতর প্রবেশ করানো হয়। সেখানে আলোর যে বিক্ষেপণ হয়, সেই আলো অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে গিয়ে ঢোকে আধুনিক ইলেকট্রনিক স্পেকট্রোগ্রাফের ভেতর। তার সঙ্গে লাগানো থাকে খুবই সংবেদী চার্জ কাপলড ডিভাইস, যা একেবারে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আলোর কণাও ধরে ফেলতে পারে। সেই তথ্যকে কম্পিউটারে প্রবেশ করানো হয়। কম্পিউটারের সফটওয়্যার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সব তথ্য দিয়ে দেয়।
লেখক: শিক্ষক ও গবেষক, স্কুল অব বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস, আরএমআইটি, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া