ডায়োডের ব্যবহার ও রিভার্স পোলারিটি প্রটেকশন

সাইকেল চালানো শিখতে হলে কেবল তত্ত্ব শিখলেই হয় না, সত্যিকারে চালিয়েই শিখতে হয়। একইভাবে ইলেকট্রনিকস শিখতে হলে তত্ত্বের পাশাপাশি হাতে-কলমে সার্কিট তৈরি করতে হয়। সার্কিটের বিভিন্ন বিন্দুতে পরিমাপ করে তত্ত্বের সঙ্গে তার মিল-অমিলের কারণ চিন্তা করে খুঁজে বের করতে হয়। আবার কেবল সার্কিট তৈরিই নয়, কীভাবে তাকে খোলসবন্দী করে অন্য সবার ব্যবহারের উপযোগী করা যায়, তা-ও শিখতে হয়। নইলে ওই সার্কিট কোনো কাজে আসবে না। এই পাঠশালায় তাই কিছু কাজের সার্কিট বানানো শেখানো হবে। সেই সঙ্গে তার প্রয়োগ ও প্রয়োজনীয় তত্ত্বও ধাপে ধাপে আলোচনা করা হবে। তাতে একসঙ্গে সব কটি দিকই শেখা হয়ে যাবে...

ছবি: লাইফওয়ার ডট কম

ডায়োডের ব্যবহার ও রিভার্স পোলারিটি প্রটেকশন

গত সংখ্যার পর

আগের পর্বে আমরা জেনেছি কীভাবে একটি সেমিকন্ডাক্টর ডায়োড একদিকে কারেন্ট চলতে দেয়, কিন্তু উল্টো দিকে দেয় না। এবার সার্কিটে সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে এর ব্যবহার দেখব আমরা। ১ নম্বর ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি ব্যাটারি ও রেজিস্টরের সার্কিটে একটি ডায়োডকে ফরোয়ার্ড বায়াস-সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ফরোয়ার্ড বায়াসে ডায়োডের দুই প্রান্তে ভোল্টেজের পার্থক্য খুবই কম থাকে, সাধারণত ১ ভোল্টেরও কম। তাই এটিকে একটি ‘অন’ করা সুইচ হিসেবে দেখতে পারি। ফলে ডায়োড ও রেজিস্টরের মধ্য দিয়ে কারেন্ট চলছে, যেটি অ্যামিটারে ডান দিকে ঘোরানো কাঁটা দিয়ে দেখানো হয়েছে। রেজিস্টরের মধ্য দিয়ে কারেন্ট চলার ফলে ওহমের সূত্র অনুযায়ী এর দুই প্রান্তে একটি ভোল্টেজ পার্থক্য থাকবে। রেজিস্টরের নিচের প্রান্তের সাপেক্ষে ওপরের প্রান্তের ভোল্টেজের মান হবে পজিটিভ, যাকে ছবিতে V0 দিয়ে দেখানো হয়েছে। ভোল্টমিটারেও ডান দিকে ঘোরানো কাঁটা দিয়ে বিষয়টি দেখানো হয়েছে।

এবার ২ নম্বর ছবির দিকে তাকাই। খেয়াল করলে দেখা যাবে, এখানে ব্যাটারিটি উল্টিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে ডায়োডটির সংযোগ হয়েছে রিভার্স বায়াসে। বলতে গেলে ডায়োডটি একটি ‘অফ’ করা সুইচ হিসেবে কাজ করছে। এ জন্য সার্কিটের কারেন্ট শূন্য। ওহমের সূত্র অনুযায়ী, রেজিস্টরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট শূন্য হলে তার দুই প্রান্তে ভোল্টেজ পার্থক্যও হবে শূন্য। তাই এ ক্ষেত্রে V0-এর মান হবে শূন্য। ২ নম্বর ছবিতে অ্যামিটার ও ভোল্টমিটার—দুটোতেই কাঁটা শূন্যে দাঁড়িয়ে আছে। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে রেজিস্টরটির মধ্য দিয়ে কোনো কারেন্ট প্রবাহিত হচ্ছে না এবং এর দুই প্রান্তে কোনো আউটপুট ভোল্টেজও থাকছে না।

ওপরে ওহমের সূত্রের কথা বলা হয়েছে। এখানে ছোট একটি বিষয় পরিষ্কার করা দরকার। যদি কোনো সার্কিটে কারেন্ট হয় I, ভোল্টেজ হয় V, আর রেজিস্ট্যান্স হয় R, তাহলে আমরা অনেক সময় V=IR কে ওহমের সূত্রের গাণিতিক রূপ বলে থাকি, যার ওপর ভিত্তি করে ওপরের দুটি সার্কিটে রেজিস্টরের দুই প্রান্তে ভোল্টেজ থাকা বা না থাকার কথা বলা হয়েছে। আসলে V=IR সমীকরণটি ওহমের সূত্রের মূল গাণিতিক রূপ নয়, এটি মূল সূত্র থেকে তৈরি হওয়া বা মূল সূত্রের অনুগত একটি রূপ। ওহমের সূত্রের মূল কথা হচ্ছে যে তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকলে যেকোনো পরিবাহী পদার্থের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট তার দুই প্রান্তের ভোল্টেজ পার্থক্যের সঙ্গে সমানুপাতিক। অর্থাৎ, কারেন্ট নির্ভর করবে ভোল্টেজের ওপর। যেকোনো সমানুপাতিককে সমীকরণে রূপান্তর করতে হলে একটি ধ্রুবক দিয়ে গুণ করতে হয়। এখানে ধ্রুবকটি হচ্ছে পদার্থটির কন্ডাক্ট্যান্স বা বিদ্যুৎ পরিবহনের ক্ষমতা, যাকে আমরা G দিয়ে দেখিয়ে থাকি। তাই ওহমের সূত্রের গাণিতিক মূল রূপ হচ্ছে I=G×V।

ছবি ১: ফরোয়ার্ড বায়াস, কারেন্ট চলছে, রেজিস্টরের দুই প্রান্তে আউটপুট ভোল্টেজ আছে
ছবি ২: রিভার্স বায়াস, কারেন্ট নেই, রেজিস্টরের দুই পাশে আউটপুট ভোল্টেজও নেই

আবার রেজিস্ট্যান্স হচ্ছে কন্ডাক্ট্যান্সের বিপরীত, অর্থাৎ, G=1/R, তাই ওহমের সূত্রের আরেকটি গাণিতিক মূল রূপ হচ্ছে I=V/R; এটিই বহুল পরিচিত। এ সমীকরণটিকে একটু ঘুরিয়েই ওপরে আলোচনা করা V=IR বের করা হয়। যেহেতু ২ নম্বর ছবিতে ও এর মান শূন্য, তাই জ-এর মান যা-ই হোক না কেন, এর গুণফল সব সময়েই শূন্য হবে। তাই এ ক্ষেত্রে V0-এর মান হচ্ছে শূন্য। আরেকটি বিষয়, ১ নম্বর ছবিতে নিচের লাইনটিকে ‘গ্রাউন্ড’ নামে চিহ্নিত করেছি, এর অর্থ কী?

বিদ্যুতের ভোল্টেজ বা বিভব বা পটেনশিয়াল (Potential) এমন একটি পরিমাপ, যেটি কেবল দুটি বিন্দুর মানের পার্থক্য হিসেবে প্রকাশ করা যায়। অর্থাৎ সঠিকভাবে বলতে হলে দুটি বিন্দুর ভোল্টেজ পার্থক্য কত, তা বলতে হবে। যেমন ১ নম্বর ছবিতে রেজিস্টরের ওপরের প্রান্তের ভোল্টেজ কত, তা বলতে হলে আমাদের বলতে হবে, ‘ক বিন্দুর ভোল্টেজ খ বিন্দুর ভোল্টেজের তুলনায় V0 পরিমাণ বেশি। তাহলে একটি সার্কিটে বিভিন্ন অংশে ভোল্টেজের পরিমাণ বলতে গেলে আমাদের বারবার অপর একটি বিন্দুর সঙ্গে তুলনা করে পার্থক্যটি বলতে হবে। বোঝা যাচ্ছে এটি একটি ঝামেলা। এ ঝামেলা এড়ানোর জন্য আমরা কোনো একটি ইলেকট্রনিক সার্কিটে একটিমাত্র বিন্দুর ভোল্টেজকে ‘শূন্য’ ধরে এটির সাপেক্ষে সার্কিটের বাকি সব বিন্দুর ভোল্টেজকে বর্ণনা করে থাকি। তাহলে একটি মান দিয়েই যেকোনো বিন্দুর ভোল্টেজকে বর্ণনা করতে পারব। এ শূন্য ভোল্টেজ ধরা বিন্দুটিকেই আমরা ‘গ্রাউন্ড’ বলে থাকি। যেমন ১ নম্বর ছবিতে যে গ্রাউন্ড দেখানো হয়েছে, তার ভোল্টেজ হচ্ছে 0 (শূন্য)। সে অনুসারে ‘ক’ বিন্দুর ভোল্টেজ হচ্ছে V0 - 0 = V0 এবং আমরা বলব, রেজিস্টরের ওপর প্রান্তের ‘ক’ বিন্দুর ভোল্টেজ হচ্ছে V0। এভাবে ১ নম্বর ছবিতে ব্যাটারির ওপর প্রান্তের ভোল্টেজ হচ্ছে VS, যার মান পজিটিভ হবে। ২ নম্বর ছবিতে ব্যাটারির ওপর প্রান্তের ভোল্টেজও VS, তবে এর মান নেগেটিভ হবে। তাহলে আমরা একটি সার্কিটে যেকোনো বিন্দুর ভোল্টেজকে যখন একটি মাত্র মান দিয়ে প্রকাশ করি, তখন বুঝতে হবে যে ভোল্টেজটি আসলে ‘গ্রাউন্ড’ বিন্দুর সাপেক্ষে ভোল্টেজের পার্থক্যের পরিমাণ।

ছবি ৩: ডিসি যন্ত্রের পাওয়ার ইনপুট প্রান্ত

বিদ্যুতের ভোল্টেজ বিষয়টির সঙ্গে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের অনেক মিল আছে। ভোল্টেজ হচ্ছে বিদ্যুতের বিভব বা পটেনশিয়াল। মাধ্যাকর্ষণেও বিভব বা পটেনশিয়াল কথাটি ব্যবহার করা হয়। ভূপৃষ্ঠকে ইংরজিতে আমরা বলি ‘গ্রাউন্ড’ (Ground)। গ্রাউন্ড থেকে যত ওপরে ওঠা যাবে, মাধ্যাকর্ষণজনিত বিভব তত বাড়বে। এখানেও ‘কোনো একটি বিন্দুর বিভব এত’-এ কথাটির কোনো অর্থ নেই, দুটি বিন্দুর মধ্যে বিভব পার্থক্য হিসেবে প্রকাশ করতে হয়। তবে সবাই সাধারণত গ্রহণ করে নিই যে ভূপৃষ্ঠ বা গ্রাউন্ডের বিভব বা Potential হচ্ছে শূন্য। তাহলে এ শূন্যের সাপেক্ষে অন্য যেকোনো বিন্দুর বিভব পার্থক্যকে ওই বিন্দুর বিভবের একটি মান দিয়েই প্রকাশ করা যাবে। তবে কেউ চাইলে এটি না মেনে অন্য যেকোনো উচ্চতার বিভবকে শূন্য বলতে পারে। যেমন যদি আমি চাই, তাহলে একতলা বাড়ির ছাদ বা দোতলা বাড়ির ছাদ বা এভারেস্টের চূড়ার বিভবকে শূন্য ধরতে পারি। কিন্তু সেটি পরিষ্কার জানিয়ে দিতে হবে এবং সব বিশ্লেষণে ওই উচ্চতার বিভবকে শূন্য হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। একই বিশ্লেষণে অন্য কোনো উচ্চতার বিভবকে শূন্য বলা যাবে না। একটি বিষয় বোধ হয় বোঝা যাচ্ছে, ইলেকট্রনিক সার্কিটের ‘গ্রাউন্ড’ কথাটি মাধ্যাকর্ষণের তুলনা থেকেই নেওয়া। মাধ্যাকর্ষণের বিষয়ের মতো একটি ইলেকট্রনিক সার্কিটেরও যেকোনো বিন্দুকেই আমরা কিন্তু ‘গ্রাউন্ড’ হিসেবে বিবেচনা করতে পারি। তবে সাধারণত ব্যাটারির যেকোনো একটি প্রান্তকে গ্রাউন্ড হিসেবে ধরলে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। ১ নম্বর ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে আমরা ব্যাটারির নেগেটিভ প্রান্তকে ‘গ্রাউন্ড’ হিসেবে ধরেছি। আর ২ নম্বর ছবিতে ধরেছি ব্যাটারির পজিটিভ প্রান্তকে। তবে একবার একটি সার্কিটে বিষয়টি ঠিক করে ফেললে ওই সার্কিটে তা আর বদলানো যাবে না। এ সার্কিট নিয়ে যত আলোচনা, গাণিতিক বিশ্লেষণ, সব ওই একটি গ্রাউন্ডকে বিবেচনায় রেখেই করতে হবে। আমরা রেজিস্টরের ওপরের প্রান্তের ভোল্টেজকে V0 আর ব্যাটারির ওপরের প্রান্তের ভোল্টেজকে VS নাম দিয়েছি। দেখা যাচ্ছে, ১ নম্বর ছবিতে VS ও V0 দুটোরই মান পজিটিভ, ২ নম্বর ছবিতে দুটোই নেগেটিভ। তবে ওপরের দুটি সার্কিট সম্পূর্ণ আলাদা, একটির সঙ্গে অন্যটির কোনো যোগাযোগ নেই। খেয়াল রাখতে হবে, একই সার্কিটের দুটো আলাদা ভোল্টেজের বিন্দুকে কখনোই দুটি পৃথক ‘গ্রাউন্ড’ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। যত বড় বা জটিল সার্কিটই হোক না কেন, একটি সার্কিটে কেবল একটিই ‘গ্রাউন্ড’ থাকতে পারে, যার সাপেক্ষে বাকি সব বিন্দুর ভোল্টেজের মান প্রকাশ করতে হবে।

ছবি ৪: ডায়োড দিয়ে রিভার্স পোলারিটি প্রটেকশন। ব্যাটারি-সংযোগ সঠিক, তাই যন্ত্র চলছে
ছবি ৫: ব্যাটারি-সংযোগ উল্টো। যন্ত্র চলছে না, কিন্তু যন্ত্র নষ্ট হবে না

রিভার্স পোলারিটি প্রটেকশন

ওপরের ১ ও ২ নম্বর ছবির সার্কিটের জ্ঞান নিয়ে আমরা খুব দরকারি একটি প্রযুক্তি তৈরি করতে পারি। এর নাম হচ্ছে, ‘রিভার্স পোলারিটি প্রটেকশন’। ডিসি পাওয়ার নেওয়া বা ব্যাটারিচালিত কোনো যন্ত্রের সঙ্গে আমরা যখন ব্যাটারি-সংযোগ দিতে চাই, তখন যদি ভুলে পজিটিভ ও নেগেটিভ প্রান্ত উল্টিয়ে যায় তাহলে যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যেমন ৩ নম্বর ছবিতে ব্যাটারিচালিত একটি ডিসি যন্ত্রের দুটো পাওয়ার ইনপুট প্রান্ত দেখানো হয়েছে, পজিটিভ ‘ক’ প্রান্ত আর নেগেটিভ ‘খ’ প্রান্ত। ব্যাটারি-সংযোগ দেওয়ার সময় যদি ভুলে পজিটিভ ও নেগেটিভ প্রান্ত উল্টে যায়, তাহলে যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ থেকে বাঁচার জন্য ‘রিভার্স পোলারিটি প্রটেকশন’ সার্কিট ব্যবহার করা যায়। ১ নম্বর ও ২ নম্বর ছবির দিকে তাকালে আপনি নিজেই বুদ্ধি করে বের করতে পারবেন কীভাবে, তা করা যাবে। তারপরও সহজ করার জন্য ৩ থেকে ৫ নম্বর ছবিতে এর একটি ধারণা দেওয়া হলো। ৩ নম্বর ছবির ‘ক’ প্রান্তে ৪ নম্বর ছবির মতো একটি ডায়োড লাগিয়ে এমনভাবে ব্যবস্থা করুন, যেন কেউ ‘ক’ বিন্দুতে আর সংযোগ দিতে না পারে। ইনসুলেটিংয়ে পেঁচিয়ে বা কোনো একটি ঢাকনা দিয়ে এ ব্যবস্থা করতে পারবেন। এর ফলে বাইরে থেকে যে কেউ কেবল ‘গ’ ও ‘খ’ বিন্দুতেই সংযোগ দিতে পারবে। হয়ে গেল আপনার ‘রিভার্স’ পোলারিটি প্রটেকশন। কীভাবে তা হচ্ছে? কেউ যদি ৪ নম্বর ছবির মতো করে ‘গ’ ও ‘খ’ বিন্দুতে ব্যাটারির সঠিক সংযোগ দেয়, তবে আপনার যন্ত্র চলবে, কারণ ডায়োডটি ফরোয়ার্ড বায়াসে থাকবে। আর কেউ যদি ৫ নম্বর ছবির মতো উল্টো করে ব্যাটারির সংযোগ দেয়, তবে ডায়োডটি রিভার্স বায়াসে থাকবে, কোনো কারেন্ট প্রবাহিত হবে না। ফলে আপনার যন্ত্র চলবে না, কিন্তু নষ্টও হবে না। আগামী পর্বে কীভাবে এসি পাওয়ারকে ডিসি পাওয়ারে পরিণত করা যায়, তা নিয়ে আলাপ করব।

লেখক: অধ্যাপক, বায়োমেডিকেল ফিজিকস অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

* লেখাটি ২০১৭ সালে বিজ্ঞানচিন্তার আগস্ট সংখ্যায় প্রকাশিত