পরমাণুর গহিনে

মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম এককের নাম পরমাণু। পরমাণু আকারে খুবই ক্ষুদ্র। তাই একে সবচেয়ে শক্তিশালী অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়েও দেখা যায় না। প্রতিটি পরমাণু প্রোটন, নিউট্রন আর ইলেকট্রন নামে আরও তিন রকম ক্ষুদ্র কণা দিয়ে তৈরি। প্রতিটি পরমাণুতে প্রোটনের সংখ্যা নির্দিষ্ট থাকে। নিচের ছবিটি বোরের পরমাণু মডেল অনুযায়ী তৈরি।

পারমাণবিক সংখ্যা

কোনো মৌলিক পদার্থের একটি পরমাণুতে যত প্রোটন থাকে, সেই সংখ্যাকে ওই মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা বলে। কোনো মৌলের পরমাণুতে প্রোটন সংখ্যা জানতে পারলে সেই মৌলটিকে শনাক্ত করা যায়। একটি পরমাণুতে যতটি প্রোটন থাকে, ঠিক ততটি ইলেকট্রনও থাকে। প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া মৌলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম পারমাণবিক সংখ্যা হাইড্রোজেনের (১) আর সবচেয়ে বেশি ইউরেনিয়ামের (৯২)।

নিউট্রন

নিউট্রন হলো পরমাণুর চার্জ নিরপেক্ষ কণা। এটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসে থাকে প্রোটনের সঙ্গী হয়ে। এর ভর প্রোটনের প্রায় সমান হলেও ইলেকট্রনের তুলনায় এর ভর অনেক গুণ বেশি।

ইলেকট্রন

পরমাণুর অতি ক্ষুদ্র কণা হলো ইলেকট্রন। এদের চার্জ ঋণাত্মক। একাধিক পরমাণু যুক্ত হয়ে অণু গঠন করলে তাদের ভেতর বন্ধন তৈরিতে মূল ভূমিকা পালন করে ইলেকট্রন ও এর বৈদ্যুতিক চার্জ।

প্রোটন

প্রোটন ধনাত্মক চার্জযুক্ত একপ্রকার কণা। এরা ঋণাত্মক চার্জের ইলেকট্রনকে আকর্ষণ করে। প্রোটনের মোট ধনাত্মক চার্জ সমানসংখ্যক ইলেকট্রনের ঋণাত্মক চার্জ দিয়ে সমতা সৃষ্টি করে। তাই একটি পরমাণুতে মোট চার্জ শূন্য হয়।

শক্তি স্তর

পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসের চারপাশে প্রদক্ষিণ করে। ইলেকট্রনগুলো স্তরে স্তরে বিন্যস্ত থাকে। এই স্তরগুলোকে বলা হয় শেল বা শক্তি স্তর। বন্ধন গঠনের সময় সাধারণত পরমাণুর শেষ শক্তি স্তর তার ইলেকট্রন দিয়ে পূর্ণ হয়ে যায়।

নিউক্লিয়াস

একটি পরমাণুর কেন্দ্র হলো তার নিউক্লিয়াস। এটি প্রোটন ও নিউট্রনের সমন্বয়ে গঠিত। একটি পরমাণুর মোট ভরের প্রায় পুরোটাই নিউক্লিয়াসে থাকে।

*লেখাটি ২০১৭ সালে বিজ্ঞানচিন্তার আগস্ট সংখ্যায় প্রকাশিত