ড্রেক সমীকরণে ফ্র্যাঙ্ক ড্রেক দেখিয়েছেন, আমাদের ছায়াপথেই ১০ লাখ প্রাণ আছে, এমন পৃথিবী থাকা সম্ভব। বিজ্ঞানী ফার্মি বলেছেন, তা–ই যদি থাকবে, তবে তারা কেন যোগাযোগ করছে না? নাকি তারা আগেই এসে চলে গেছে...তারা কোথায়?
ফার্মির এই ‘তারা কোথায়?’ বাক্যটি পরবর্তী সময়ে একটি বিখ্যাত প্যারাডক্সের মতো হয়ে যায়।
একদিন ফার্মি কম বয়সী বিজ্ঞানীদের এক পার্টিতে গেলেন। তিনিই সবার আগে পৌঁছান। অন্যরা তখনো এসে পৌঁছাননি। এক-দুজন হয়তো এসেছেন। তখন অন্যরা কোথায় জানতে ফার্মি বললেন ‘তারা কোথায়?...’ আশপাশে সবাই হেসে উঠল। ফার্মি নিজেও জানেন না তাঁর প্যারাডক্স তখন মোটামুটি সবাই জেনে গেছে।
আসলেই তারা কোথায়? তারা আসে না কেন? বরং একটা ছোট্ট গল্প শোনা যাক—প্রব্যাবিলিটির সূত্রানুযায়ী, একটি বানরের হাতে যদি কি–বোর্ড ধরিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে বলা যায় না কোনো একসময় সে শেক্সপিয়ারের হ্যামলেট নাটকের একটা লাইন শুদ্ধ করে লিখে ফেলতেও পারে। ধরা যাক, সেই বানরের হাতে এবার ভয়াবহ একটা হাইটেক এক্সপ্লোসিভ। সে অপেক্ষা করছে প্রতিবেশীরা কেউ এলে সে একটা মজা করবে। কিন্তু কেউ আসছে না কেন (তারা কোথায়?)? প্রতিবেশীরা যে ওই বানরের থেকে অনেক বুদ্ধিমান, তারা কেন আসবে?
সত্যি তারা কোথায়?
তারা কেন আসে না?
হ্যাঁ, তারা আমাদের চেয়ে বুদ্ধিমান বলেই আসে না। ‘তারা আসে না’ এটাই যেন তারা আছের প্রমাণ!
ফার্মির প্যারাডক্স থাক। এবার একটু কল্পনার আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে। ধরা যাক, সেই পার্টিতে কম বয়সী বিজ্ঞানীদের আসতে আরও একটু দেরি হচ্ছে। ওই ফাঁকে একজন বিদ্ঘুটে চেহারার এলিয়েন এসে উপস্থিত। সে বলল—
- এই তো এসেছি।
প্রথমে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলেন বিজ্ঞানী ফার্মি, তারপর সামলে নিয়ে বললেন—
- তুমি তাহলে সত্যিই একজন এলিয়েন? অন্য কোনো গ্রহ থেকে এসেছ?
-হ্যাঁ।
- কেন এসেছ?
- আমি এসেছি তোমাদের এখানকার জ্ঞান–বিজ্ঞানের সর্বশেষ আপগ্রেড জানতে আমি প্রথম একজন বিজ্ঞানীর কাছে যেতে চাই। ফার্মি দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।
- আমার মনে হয় প্রথম তুমি বরং একজন প্লাস্টিক সার্জনের কাছে যাও। বিদ্ঘুটে চেহারার এলিয়েনের দিকে তাকিয়ে ফার্মি বললেন। সুপুরুষ এনরিকো ফার্মি এটা বলতেই পারেন।
লেখক: কার্টুনিস্ট, সম্পাদক, উন্মাদ