গ্যালিলিও গ্যালিলির মিউজিয়াম

কিউরেটর গলা আরও নামিয়ে ফেললেন, বললেন, ‘আপনি দিয়েছেন মাত্র ৫ ডলার আর এই বিদেশি ভদ্রলোক দিয়েছেন ৫০ ডলার। টেলিস্কোপের পাওয়ার বাড়বে না তো কী?’

মহান জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি যে বাসায় থাকতেন, এখন সেটা একটা মিউজিয়াম। তাঁর ব্যবহৃত জিনিসপত্র দর্শনার্থীরা টিকিট কেটে ভিড় করে দেখেন। সেখানে একজন কিউরেটরও আছেন। তিনি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব দেখান। সুন্দর করে ব্যাখ্যা করেন। অনেকে খুশি হয়ে তাঁকে ৫–১০ ডলার দেন। একদিন তিনি এ রকম একজন বিদেশিকে গ্যালিলিওর টেলিস্কোপ দেখাচ্ছিলেন।

এই যে টেলিস্কোপটা দেখছেন, এটা গ্যালিলিওর তৈরি প্রথম টেলিস্কোপ।

আচ্ছা, এটা দিয়ে তিনি কত দূর দেখতে পেতেন?

এটা দিয়ে তিনি সুদূর এন্ড্রমিডা গ্যালাক্সি দেখতে পেতেন।

বলেন কী! এত আগেও তিনি এই টেলিস্কোপে এন্ড্রমিডা দেখতেন?

তবেই বুঝুন, কত বড় জ্যোতির্বিজ্ঞানী ছিলেন তিনি। এ সময় আরেকজন লোক এগিয়ে এসে কিউরেটরকে ফিসফিস করে বললেন, ‘আপনি তখন আমাকে বললেন এটা দিয়ে গ্যালিলিও শনির বলয় দেখতেন। আর এখন বলছেন তিনি এটা দিয়ে এন্ড্রমিডা গ্যালাক্সি দেখতেন! এর মানে কী?’ কিউরেটর গলা আরও নামিয়ে ফেললেন, বললেন, ‘আপনি দিয়েছেন মাত্র ৫ ডলার আর এই বিদেশি ভদ্রলোক দিয়েছেন ৫০ ডলার। টেলিস্কোপের পাওয়ার বাড়বে না তো কী?’

আরেক দিন। ওই গ্যালারিতে এক দর্শক কিউরেটরের কাছে জানতে চাইলেন। এবার অবশ্য ডিউটিতে অন্য কিউরেটর।

আচ্ছা, গ্যালিলিওর দাম্পত্য জীবন নিয়ে জানতে চাই। তাঁদের স্বামী–স্ত্রীর সম্পর্ক কেমন ছিল? স্বামী হিসেবে গ্যালিলিও কেমন ছিলেন? তাঁদের সাংসারিক জীবনের কিছু কী আছে?

অবশ্যই আছে। তার আগে বুঝতে হবে, তাঁরা সাংসারিক জীবনে কেমন ছিলেন। তিনি কিন্তু বিয়ে করেননি। তবে মারিয়া গ্যাম্বার সঙ্গে তাঁর সাংসারিক জীবন ছিল, তাঁরা স্বামী–স্ত্রীর মতোই বাস করতেন একসঙ্গে। তাঁর দুই মেয়ে আর এক ছেলে ছিল। তাঁরা যখন কেনাকাটা করতেন, তখন আলোচনার মাধ্যমে সেটা সেটেল করতেন। যেমন একবার তাঁরা একটা বালতি কিনতে গেলেন বাজারে; স্ত্রী মারিয়ার পছন্দ নীল বালতি আর গ্যালিলিওর পছন্দ লাল বালতি। তখন দুজন কোনটা কেনা হবে, এই নিয়ে আলোচনায় বসলেন।

নীল বালতিটা কি এখানে আছে? বুদ্ধিমান দর্শক জানতে চান।

আছে, ওই পাশে। বললেন কিউরেটর।

লেখক: কার্টুনিস্ট, সম্পাদক, উন্মাদ