তিনপেয়ে মুরগি...

এক জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার মুরগির জীবনের ওপর ব্যাপক গবেষণা করে অবশেষে তিনপেয়ে এক মুরগি আবিষ্কার করতে সমর্থ হলেন। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা গিয়ে হাজির হলো তার কাছে।

‘আচ্ছা আপনি এত প্রাণী থাকতে ঠিক মুরগির জিন নিয়ে কেন কাজ করতে গেলেন?’

‘কারণ একমাত্র মুরগিই আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সবচেয়ে পরিচিত পাখি।’

‘কিন্তু বার্ড ফ্লু?’

‘দেখুন, বার্ড ফ্লু আমার বিষয় না... আমি নতুন ধরনের একটি মুরগি এই জাতিকে উপহার দিতে চেয়েছি।...’

‘কি রকম?’

‘তিনপেয়ে মুরগি।'

‘আচ্ছা তিনপেয়ে মুরগি কেন তৈরি করতে গেলেন? ‘দেখুন, বাঙালি ভোজনবিলাসী জাতি। খেতে পছন্দ করে। বিশেষ করে মুরগির রান খেতে সবাই পছন্দ করে, রোস্ট হলে তো কথাই নেই। তা ছাড়া ডাক্তাররা মনে করেন মুরগির বুকের মাংস থেকে রান খাওয়া ভালো।’

‘কেন, রান খাওয়া ভালো কেন?’

‘কারণ মুরগির পা সবসময় দৌড়ের ওপর থাকে বলে ওখানে চর্বি জমে না। কোলেস্টেরল ফ্রি’

‘তিন পা বানালেন, তিন পাখা নয় কেন? ওই মুরগির মাথা কি একটাই?’

যাহোক, এরকম নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত জিনবিজ্ঞানীকে সবাই শেষ প্রশ্নটা করল-

‘এবার বলুন, আপনার এই মুরগির রান খেতে কেমন?’

এই সময় একটা গুঞ্জন উঠল, কেউ কেউ বলল, ‘কাজটা করা ঠিক হয়নি; যেখানে দু পেয়ে মুরগিই পাওয়া যাচ্ছে বাজারে হরদম। সেখানে তিন পেয়ে মুরগির দরকার কী?’

প্রশ্ন শুনে আবিষ্কারককে একটু বিষণ্ণ মনে হলো। মিনমিন করে বললেন,

‘আমার ধারণা খেতে অসাধারণ হবে।’

‘আপনি এখনো খাননি?’

‘না।’

‘সেকি, কেন?’

‘ধরতে পারলাম কই? তিন পা পেয়ে ব্যাটার সাথে দৌড়ে কি পারি, বলেন?’

এই সময় একটা গুঞ্জন উঠল, কেউ কেউ বলল, ‘কাজটা করা ঠিক হয়নি; যেখানে দু পেয়ে মুরগিই পাওয়া যাচ্ছে বাজারে হরদম। সেখানে তিন পেয়ে মুরগির দরকার কী?’

কেউ কেউ ছিঃ ছিঃ পর্যন্ত করল। একপর্যায়ে সাংবাদিকরা চলে গেলে মন খারাপ করে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার (নাকি বিজ্ঞানী?) গালে হাত দিয়ে বসে রইলেন। আর ঠিক এই সময়ে ঢুকল তার ছেলেবেলার বন্ধু। কাঁধে ব্যাগ, সে এইমাত্র বিদেশ থেকে এলো।

‘কিরে, তোর মন খারাপ?’

আরও পড়ুন
মানুষের যদি ওড়ার দরকারই হতো, তাহলে আমাদের পাখির মতো ডানা থাকত। লোকটার কথাটা কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগল...

তিনপেয়ে মুরগির আবিষ্কারক একটু আগের ঘটনা সব খুলে বললেন। বন্ধু তখন বলে উঠল, ‘কী আশ্চর্য, আমিও এটা নিয়েই ভাবছিলাম!’

‘কী ভাবছিলি?’

‘মানে, আসলে আজকে প্লেনে আসার সময় এক বিদেশি বলছিল-এই যে আমারা প্লেনে করে আকাশে উড়ছি, এটা ঠিক নয়। প্রকৃতির বিরুদ্ধে যাওয়া কখনোই ঠিক নয়। মানুষের যদি ওড়ার দরকারই হতো, তাহলে আমাদের পাখির মতো ডানা থাকত। লোকটার কথাটা কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগল...। ওটা নিয়ে ভাবতে ভাবতেই তোর বাসায় আসছিলাম...।’

‘তা ওই বিদেশি লোকটা কে ছিল?’

‘কে আবার, আমি যে প্লেনে আসছিলাম তার পাইলট।’ বিজ্ঞ বন্ধুর উত্তর।