জুতা পলিশের যন্ত্র

ইউরোপের এক দেশ। সেই দেশের রেলস্টেশনে একটা অত্যাধুনিক জুতা পলিশের মেশিন বসানো হলো। এই মেশিনের সিস্টেম হচ্ছে প্রথমে এক পা (ধরা যাক, ডান পা) মেশিনে ঢোকানো হবে, পাঁচ সেকেন্ডে জুতা পলিশ হয়ে যাবে। একেবারে চকচকে আয়নার মতো। তখন প্রথম পা বের করে নিতে হবে। তখন মেশিন কথা বলে উঠবে, ‘আপনার মূল্য পরিশোধ করুন এবং দ্বিতীয় পা ঢোকান।’ তারপর মূল্য পরিশোধ করে দ্বিতীয় পা ঢোকানো হবে (বাঁ পা)। সেটাও পলিশ হয়ে যাবে পাঁচ সেকেন্ডে। আবারও সেই চকচকে আয়না। আপনি যদি মূল্য পরিশোধ না করে দ্বিতীয় পা ঢোকান তাহলেও পলিশ হবে, কিন্তু আপনার পা আটকে যাবে। তখন ডাবল মূল্য দিয়ে পা ছোটাতে হবে।

এক বাঙালি ব্যাপারটা খেয়াল করল। তারপর এগিয়ে গেল জুতা পলিশের মেশিনের কাছে। প্রথমে ডান পা ঢোকাল। পলিশ হয়ে গেল। তারপর পা বের করে চলে গেল রেলস্টেশনের আরেক মাথায়, সেখানে আরেকটা মেশিন। সেখানে এবার পলিশ না হওয়া পা–টা ঢোকাল। পলিশ হওয়ার পর পা বের করে হাঁটা দিল তার গন্তব্যের উদ্দেশে।

কিছুদিন পর আবার সেই বাঙালি এল জুতা পলিশ করতে। সে আগের মতোই এক পা পলিশ করে, পা বের করে স্টেশনের অন্য মাথায় গেল সেখানে দ্বিতীয় পা পলিশ করতে। দ্বিতীয় পা ঢোকাল। দ্বিতীয় পা পলিশ হলো। পা বের করতে যাবে, দেখে পা আটকে গেছে। তখন মেশিন যান্ত্রিক গলায় কথা বলে উঠল, ‘তুমি যদি রোবট হয়ে থাকো, তাহলে হাঁটুর নিচ থেকে পা–টা খুলে রেখে যাও। ওটা স্টক মার্কেটে সেল করে আমাদের কোম্পানি তোমার ২৬ জুনের বকেয়া মূল্য ও আজকের জুতা পলিশের মূল্য অ্যাডজাস্ট করে নেবে। আর যদি মানুষ হয়ে থাকো, তাহলে ওপরে ডান দিকের সবুজ বাটনে চাপ দাও। তোমার জন্য একটা বিজনেস কার্ড বের হয়ে আসবে, যেটা তোমার কাজে লাগতে পারে।’

লোকটা পুরো নার্ভাস হয়ে গেল। জুলফি বেয়ে চিকন ঘাম ঝরতে শুরু করেছে...। কোনোমতে সবুজ বাটনে চাপ দিল। তখন আরেকটা কার্ড বের হয়ে এল। সেখানে লেখা—

‘আমাদের নকল পা সেল সেন্টারে তোমাকে সুস্বাগত, ধন্যবাদ। আজই এসে তোমার হারানো পায়ের বিকল্প বেছে নাও, স্পেশাল করোনা ডিসকাউন্ট চলছে...ধন্যবাদ!’

লেখক: কার্টুনিস্ট, সম্পাদক, উন্মাদ