কে ঘোরে?

বাংলার এক শিক্ষকের দায়িত্ব পড়ল বিজ্ঞান পরীক্ষার গার্ডের। তিনি একটু নার্ভাস ফিল করলেন যেন। এক বিজ্ঞানের শিক্ষককে বলেই ফেললেন—

—স্যার, আমি বাংলার শিক্ষক, সব সময় আর্টসের সাবজেক্টের পরীক্ষায় গার্ড দিয়েছি। হঠাৎ করে বিজ্ঞান পরীক্ষায় গার্ডের দায়িত্ব পড়েছে...

—আরে পরীক্ষা তো পরীক্ষাই, গার্ড দিলেই হলো।

—তারপরও কোনো আলাদা পর্যবেক্ষণ কি আছে বিজ্ঞান পরীক্ষায়?

—অ্যাঁ...এক কাজ করেন, পরীক্ষা শুরু হলে মাঝেমধ্যে চেঁচিয়ে বলবেন, ‘কে ঘোরে? কে ঘোরে?’

—এটা বলব কেন!

—দেখছেন না এই পরীক্ষা হলের প্যাটার্ন; প্রত্যেকের আলাদা আলাদা চেয়ার-টেবিল, পাশে তাকানোর কোনো বুদ্ধি নেই। তবে মাথা ঘুরিয়ে পেছনে তাকানোর সুবিধা আছে। তাই একটু পরপর চেঁচিয়ে উঠবেন, কে ঘোরে? কে ঘোরে?...তাহলে দেখবেন ছাত্ররা সতর্ক থাকবে।

—বেশ তো, ভালো বুদ্ধি।

যাহোক, পরীক্ষা শুরু হলো। বাংলার শিক্ষক বিজ্ঞান পরীক্ষায় গার্ড দিচ্ছেন। এ–পাশ থেকে ও–পাশে হাঁটছেন আর মাঝেমধ্যে চেঁচিয়ে উঠছেন—‘কে ঘোরে? কে ঘোরে?’

হঠাৎ কেউ একজন চেঁচিয়ে উঠল—‘পৃথিবী ঘোরে!’

হকচকিয়ে উঠলেন বাংলার শিক্ষক। তিনিও চেঁচিয়ে উঠলেন—‘কে বলল?’

এবার দ্বিতীয় কেউ চেঁচিয়ে উঠল—‘গ্যালিলিও গ্যালিলি।’

আসলে এই মহান বিজ্ঞানীকে নিয়ে ফান করা মোটেই মানায় না; বরং তাঁকে নিয়ে একটু নির্দোষ কল্পনা করা যাক।

হঠাৎ একদিন দেখা গেল, মহান বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি ঢাকার সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিংয়ের ছাদে। খবর পেয়ে ঢাকার সব সাংবাদিক ছুটে গেলেন ওই বিল্ডিংয়ের ছাদে।

—মহান গ্যালিলিও গ্যালিলি, আপনি এখানে?

—আমি আসলে আমার সেই বিখ্যাত এক্সপেরিমেন্ট—লোহা আর পাখির পালক বাতাসের সংঘর্ষ না থাকলে একই সঙ্গে ভূমি স্পর্শ করে, সেটা তোমাদের একটু দেখাতে চাই।

—ওহ্ সত্যি! আমাদের পরম সৌভাগ্য। আমরা কি ভিডিও করতে পারি?

—পারো, তবে তার আগে জলদি একটি বায়ুশূন্য সিলিন্ডার, এক টুকরা লোহা আর পাখির পালক জোগাড় করো।

—জি জি, এক্ষুনি করছি। সবাই ছুটল।

আরও পড়ুন

একটু পর একজন এসে জানাল, ‘মহামান্য গ্যলিলিও, বায়ুশূন্য সিলিন্ডার ও লোহার টুকরা জোগাড় হয়েছে; কিন্তু পাখির পালক জোগাড় করা সম্ভব হয়নি।’

—সেকি, তাহলে আমি আমার এক্সপেরিমেন্ট করব কীভাবে? তোমার হাতে ওটা কী?

—আপনার জন্য সামান্য খাবার, সকাল থেকে নিশ্চয়ই কিছু খাননি।

—দেখি ওটা। খাবার হাতে নিলেন গ্যালিলিও, ‘আরে, এটা তো পালকের মতোই হালকা, এটা দিয়েই চলবে।’

তারপর পৃথিবীর বিখ্যাত সেই এক্সপেরিমেন্ট করা হলো। বায়ুশূন্য সিলিন্ডারে সেই লোহার টুকরা আর মহান গ্যালিলিওর জন্য আনা খাবার (পালকের বিকল্প) ছেড়ে দেওয়া হলো। কিন্তু কী আশ্চর্য, লোহা নয়, গ্যালিলিওর খাবার সবার আগে ঝপ করে এসে ভূমি স্পর্শ করল।

—এটা কী করে সম্ভব! গ্যালিলিও আর্তনাদ করে উঠলেন।

—মহামান্য গ্যালিলিও, এটা সম্ভব। কারণ, আপনার খাবারটা যে ফাস্ট ফুড! পাশ থেকে এক সাংবাদিক বললেন।

লেখক: কার্টুনিস্ট, সম্পাদক, উন্মাদ