ড্যামন নাইট

শেষ বিমানটাও মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার দশ মাস পর রলফ স্মিথ নিশ্চিত হলো, পৃথিবীতে আর মাত্র একজন মানুষ ছাড়া আর কেউ বেঁচে নেই! সেই মেয়েটির নাম লুইস অলিভার। এ মুহূর্তে সল্ট লেক সিটির একটা মুদিদোকানের ক্যাফেতে মুখোমুখি বসে আছে ওরা। খাচ্ছে ভিয়েনা সসেজ আর গলায় ঢালছে কফি, সসেজটা ক্যান থেকে বের করা!

তেরছাভাবে সূর্যের আলো এসে পড়ছে ওদের ওপর। ভেতরে বা বাইরে...কোথাও কোনো আওয়াজ নেই। আছে শুধু নিঃসঙ্গতার নিস্তব্ধতা। অবশ্য আর কখনো হয়তো হবেও না এই আওয়াজ। রান্নাঘরের তৈজসপত্রের আওয়াজ? নেই। রাস্তা দিয়ে ছুটে যাওয়া গাড়ির গর্জন? সেটাও নেই। পৃথিবীর বুকে এখন আছে কেবল সূর্যের আলো আর নীরবতা এবং পানি। লুইস অলিভারের বিস্মিত চোখের দিকে তাকাল রলফ। সামনে ঝুঁকে নিজের দিকে আকর্ষণ করতে চাইল মেয়েটির মনোযোগ।

‘দেখো, প্রিয়,’ বলল যুবক, ‘তোমার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি পূর্ণ সম্মান আছে আমার। কিন্তু বুঝতেই পারছ, ব্যাপারটা একদম অযৌক্তিক।’

বিস্ময়ের সঙ্গে সঙ্গীকে দেখল মেয়েটা, তারপর তাকাল অন্যদিকে। আলতো করে মাথা না নেড়ে বলল, ‘নাহ, রলফ। অসম্ভব...একদম না। বিয়ে ছাড়া আমি তোমার সঙ্গে থাকতে পারব না।’

ফ্রান্স, রাশিয়া, মেক্সিকো আর দক্ষিণের সব মেয়ের কথা একবার ভাবল স্মিথ। মাস তিনেক কাটিয়েছে রচেস্টারের একটা রেডিও স্টেশনে, থেমে যাওয়ার আগপর্যন্ত শুনে গিয়েছে বেতারে ভেসে আসা কথা। সুইডেনে একটা বিশাল কলোনির খবর পেয়েছিল, ইংরেজ এক নারী মন্ত্রীও ছিল ওতে। ইউরোপ মানবমুক্ত, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের স্রোতে ধুয়েমুছে গেছে সব।

দুটি কর্মক্ষম বিমান ছিল ওই কলোনির কাছে। তেল যা ছিল, তাতে মহাদেশের যেকোনো স্থানে যেতে পারত, কিন্তু যেতটা কোথায়? প্রথমে তিনজন মারা গেল সংক্রামক রোগে, এরপর এগারো জন...এরপর সবাই। ফিলিস্তিনে নেমেছিল এক বোমারু বিমানের পাইলট। কিন্তু সে বেশিক্ষণ বাঁচেনি, ক্র্যাশের কারণে ভেঙে গিয়েছিল কয়েকটা হাড়। ওয়াশিংটনের কোনো খবর পায়নি রলফ। পায়নি নিউইয়র্ক, লন্ডন, প্যারিস, মস্কো বা সিডনিরও। ওগুলো যে নেই আর, সে কথা স্পষ্ট। কিন্তু না থাকার কারণ রোগ, নাকি বিকিরণ...নাকি বোমা, তা কেউ জানে না।

স্মিথ পেশায় ছিল ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট; যে রোগটা মেরে ফেলছিল একের পর এক মানুষকে, সেটার প্রতিষেধক আবিষ্কারে ব্যস্ত দলের সদস্য। একটা ওষুধ পেয়েও গিয়েছিল, মাঝেমধ্যে কাজ করত ওটা। কিন্তু তত দিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

সঙ্গে করে চল্লিশটা ভায়ালের সব কটি নিয়ে এসেছে স্মিথ, ব্যবহার করার জন্য আর কেউ অবশিষ্ট নেই বলে। এদিকে লুইস ছিল ডেনভারের একটি হাসপাতালের সেবিকা। আক্রমণের দিন সকালে নাকি অদ্ভুত একটা ভাগ্য জুটেছিল হাসপাতালটার। কথাটা বলার সময় যথেষ্ট শান্ত ছিল মেয়েটা, কিন্তু চোখের অস্থিরতায় রলফ বুঝে নিয়েছিল যে এখানে কোনো কিন্তু আছে। তবে চাপ দেয়নি শুধু শুধু।

ওর মতো মেয়েটিও কর্মক্ষম একটা রেডিও স্টেশন খুঁজে বের করে তাতে আস্তানা গেড়ে বসে। রলফ যখন জানতে পারল যে প্লেগে আক্রান্ত হয়নি লুইস, তখন দেখা করতে রাজি হলো। কথাবার্তা বলে বোঝা গেল যে জন্মগতভাবেই রোগটার বিরুদ্ধে বাড়তি প্রতিরোধক্ষমতা নিয়ে জন্মেছে মেয়েটি। হয়তো এমন মানুষ ছিল আরও কয়েকজন, কিন্তু বিকিরণ আর বোমা তাদের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।

তবে লুইসকে অবাক করে দিয়েছে একটা বিষয়। আর তা হলো কোনো প্রটেস্ট্যান্ট যাজক আর বেঁচে নেই!

প্রথমে রলফ বিশ্বাসই করতে পারেনি যে লুইস এই ব্যাপারকে এত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে! মেয়েটা ওর সঙ্গে এক হোটেলেও ঘুমাতে চায় না। ভদ্রতা এবং সম্মান আশা করে সে, রলফ দিয়েও এসেছে। একেবারে খালি রাস্তাতেও ফুটপাতের বাইরের ধার দিয়ে হাঁটে ও, হোটেলে ঢুকে দরজা খুলে ধরে লুইসের জন্য; চেয়ার টেনে দেয়, গালাগালি করে না একদম।

লুইসের বয়স চল্লিশের ঘরে হবে, কমপক্ষে পাঁচ বছরের বড় রলফের চেয়ে। যদিও নিজেকে সম্ভবত অনেক ছোট মনে করে মেয়েটি। হাসপাতালের দৃশ্যটা দেখার পর মানসিকভাবে একেবারে ভেঙে পড়েছে বেচারি; ঠারেঠোরে মেনে নিয়েছে যে বিশ্বের কেউ বেঁচে নেই, কিন্তু ইচ্ছা করে সেই প্রসঙ্গ তোলে না। গত তিন সপ্তাহে কমসে কম শতবার সব ছেড়েছুড়ে চলে যেতে চেয়েছে রলফ। কিন্তু কিচ্ছু যে করার নেই...পৃথিবীতে বেঁচেই আছে কেবল ওরা দুজন। লুইসকে দরকার ওর...নিজের বেঁচে থাকার জন্যই।

‘লুইস, প্রিয়া,’ নম্র কণ্ঠে বলল যুবক, ‘তোমার ইচ্ছার প্রতি আমার পূর্ণ সম্মান আছে, আশা করি তা জানো?’

‘হ্যাঁ, রলফ,’ বলল মেয়েটি, এমনভাবে তাকিয়ে রইল ওর চেহারার দিকে, যেন সম্মোহিত হয়ে আছে।

জোর করে বলে চলল স্মিথ, ‘বাস্তবতা যতই রুক্ষ হোক না কেন, সেটার মুখোমুখি তো হতেই হবে। পৃথিবীতে আমি এখন একমাত্র পুরুষ, তুমি একমাত্র নারী। বলতে পারি তুমি-আমি হলাম স্বর্গের বাগানের ইভ আর আদম!’

বিকৃত হয়ে গেল লুইসের চেহারা, নিশ্চয়ই পাতা দিয়ে গুপ্তাঙ্গ ঢাকার কথা কল্পনা করছে!

‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে দেখো,’ বলল স্মিথ, কাঁপছে ওর গলা। মনে মনে ভাবল, আমার কথাও একটু ভাবো, বড়জোর আর বছর দশেক পারবে কাজে আসতে...কমও হতে পারে।

মেয়েটাকে ছাড়া ওর কী হবে তা ভাবতেই কেঁপে উঠল বেচারা। রোগটা ওকেও স্পর্শ করেছে। ওষুধ দিয়ে ঠেকিয়ে রেখেছে বটে, কিন্তু উপসর্গ পুরোপুরি মেলায়নি। পূর্বাভিজ্ঞতা থেকে জানে, রোগাক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে দ্রুত হঠাৎ দেয় অদ্ভুত এক উপসর্গ—দেহ শক্ত হয়ে যায় পুরোপুরি, রোগী এমনকি একটা আঙুল পর্যন্ত নাড়াতে পারে না। এমনটা যে হবে, সেটা বোঝাও যায় না আগে থেকে।

এই কদিন আগে ওর মধ্যেও দেখা দেয় এই উপসর্গ। লুইস না থাকলে ওভাবেই পড়ে থাকত মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত। অথচ হাতের এক ইঞ্চির মধ্যে পড়ে ছিল ওষুধভরা ইনজেকশন! পাগলের মতো ভাবল একবার, কপাল ভালো থাকলে এই বছর দশেকের মধ্যে দুটো বাচ্চা পাব তোমার কাছ থেকে। তাহলে অন্তত কষ্টের মৃত্যু মরতে হবে না।

বলে চলল রলফ, ‘ঈশ্বর নিশ্চয়ই চান না যে এভাবে মানবজাতির ইতি ঘটুক। নইলে তোমাকে আর আমাকে বাঁচিয়ে রাখলেন কেন? তিনি চান যে আমরা...’ পরের শব্দটা সাবধানে বেছে নিতে হবে, নইলে লুইস খেপে যেতে পারে। ‘...পরবর্তী প্রজন্মকে পৃথিবীতে নিয়ে আসি।’

স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল ও কথাটা বলে।

যুবকের কাঁধের ওপর দিয়ে দিগন্তের দিকে তাকাল লুইস। পিটপিট করছে চোখ, ঠোঁটজোড়া নড়ছে অদ্ভুত ভঙ্গিমায়।

টেবিলের নিচের দিকে তাকাল স্মিথ, নিজের সরু ঊরু দেখে ভাবল, জোর করেও লাভ হবে না, শক্তি নেই আমার। হায় ঈশ্বর, যদি একটু শক্তিশালী হতাম...

ক্রোধে ফেটে পড়তে চাইছে ভেতর থেকে, কিন্তু সেটাকে চাপা দিল ও। মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে, তিন সপ্তাহ পর সহজভাবে কথা বলতে শুরু করেছে মেয়েটা। বলছে, প্রার্থনা করার জন্য পাহাড়ে যেতে হবে ওদের।

‘ওদের’...‘ওর’ না। ব্যাপারটাকে মন্দের ভালো হিসেবে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে রলফের। কিন্তু রওনা দেওয়ার আগেই থামাতে হবে মেয়েটাকে, ওখানে একবার পৌঁছালে যে মানসিকভাবে ‘অসুস্থ’ মেয়েটার মনের হাল কী হয়, তা আন্দাজ করা মুশকিল। আরেকবার চেষ্টা করার সিদ্ধান্ত নিল ও।

লুইস শত চেষ্টা করেও মন দিয়ে শুনতে পারছে না রলফের কথা। টুকরো টুকরো কিছু শব্দ আসছে শুধু কানে। ‘মানবজাতির প্রতি আমাদের কর্তব্য...’ মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে আজ ওর। অসুস্থ হওয়ার আগে তিনি বললেন, ‘বাছা, তোমার কর্তব্য হলো পরিষ্কার, সুস্থ থাকা...ঈশ্বরকে ভয় করা। সৌন্দর্যে কিছু যায়–আসে না। সাধারণ দর্শন অনেক মহিলাই কিন্তু ভালো, খ্রিষ্টান স্বামী পেয়েছে।’

স্বামী...যাকে ভালোবাসা যায়, সম্মান করা যায়...ফুলের তোড়া, অর্গানের সুর, নিতকনে।

রলফের শুকনো নেকড়ের মতো চেহারাটা দেখল লুইস। ভালোমতোই জানে যে স্বামী হওয়ার মতো এই একটা পুরুষই অবশিষ্ট আছে দুনিয়ায়। এদিকে ওর বয়সও হয়ে গেছে ‘২৫’, তাই ভিক্ষার চাল...কাড়া আর আকাড়া!

কিন্তু মানুষ হিসেবে লোকটা কেমন? ভাবল ও।

‘...ঈশ্বরের কাছে আমাদের মিলন...’ গির্জার রংবেরঙা কাচের কথা মনে পড়ে গেল লুইসের। সব সময় ভেবে এসেছে, ঈশ্বর ওর দিকে এমন কাচের আড়াল থেকে তাকান। হয়তো এখনো দেখছেন, যদিও মাঝেমধ্যে মনে হয় যেন ভুলে গেছেন তিনি মানবজাতির কথা। বিয়ের প্রথা একেবারে অলঙ্ঘনীয় নয়। যদি যাজক না পাওয়া যায় তাহলে...কিন্তু না। নিতকনে, ফুলের তোড়া, অর্গানের সুর...সব বাদ দেওয়া যায়; এমনকি উপহারসামগ্রীর কথাও না হয় মাথায় না আনল...কিন্তু যাজক ছাড়া বিয়ে?

রলফের দিকে আবার তাকাল লুইস। সরু, কালো চোখজোড়া জান্তব আশায় তাকিয়ে আছে ওর দিকে। সরু মুখের একটা অংশ কেঁপে উঠছে থেকে থেকে, কালো চুলের আড়াল থেকে ঝুলছে কানের লতি।

চুল এত বড় করা উচিত হয়নি রলফের, ভাবল লুইস। খুব একটা ভালো দেখাচ্ছে না। অবশ্য একবার বিয়ে হয়ে গেলে এসব পাল্টানো সহজ হয়ে যাবে।

শুধু তা–ই না, কাজটা খুশিমনে দায়িত্ব হিসেবেই নেবে লুইস...

...বিয়ে হয়ে গেলে...

শহরের বাইরে একটা খামারবাড়ি দেখার কথা বলছে এখন রলফ। ভেতরে কিছু নেই বটে, তবে সেগুলোর ব্যবস্থা পরে করা যাবে। নিজ হাতে বুনবে ফসল, তখন আর খাবারের জন্য রেস্তোরাঁয় যেতে হবে না।

হাতে রলফের বাদামি মোটা আঙুলের স্পর্শ পেল আচমকা। কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিল এক মুহূর্তের জন্য, কিন্তু এখন আবার শুরু করেছে। হাত সরিয়ে নিল লুইস।

রলফ বলছে, ‘...সবচেয়ে সুন্দর বিয়ের পোশাক এনে দেব তোমাকে, ফুলের তোড়াও থাকবে। যা চাও তুমি, সব দেব...’

বিয়ের পোশাক! সেই সঙ্গে ফুল...যদিও যাজক থাকবে না! তাতে কী? এসব কথা আগে বললেই তো হতো। ‘ঠিক আছে, রলফ, বিয়ে করব তোমাকে।’

হতবাক হয়ে গেল যুবক, নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। ‘আমাকে বিয়ে করবে?’ দমবন্ধ করে যোগ করল, ‘আজকেই, লুইস?’

‘ঠিক আছে, আজকেই...যদিও এত অল্প সময়ে সব ব্যবস্থা কীভাবে করবে, জানি না! তবে তুমি যখন বলছ...’

বিজয়ের আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল যেন স্মিথ। যা করার তা এখনই করতে হবে। ‘কোনো অসুবিধে হবে না, প্রিয়। তুমি হ্যাঁ বলে আমাকে...’ বিশ্বের সবচেয়ে সুখী পুরুষ বলতে চাচ্ছিল, কিন্তু কথা শেষ করল না।

‘তুমি যা ভালো মনে করো, রলফ।’

উঠে দাঁড়াল যুবক, গাল এগিয়ে দিল লুইস। ‘আমরা এখনই রওনা দেব,’ জানাল রলফ। ‘তবে এক মিনিট সময় দাও, প্লিজ।’

ভাবী বধূর অনুমতির জন্য কয়েক মুহূর্ত অপেক্ষা করল রলফ স্মিথ, তারপর দ্রুতপায়ে হেঁটে গেল বাথরুমের দিকে। আর মাত্র কয়েকটা ঘণ্টা, তারপরই অভিনয়ের দরকার পড়বে না। ইচ্ছামতো ব্যবহার করতে পারবে মেয়েটাকে, চাইলে মারতেও বাধা নেই। নাহ, খারাপ নয়, বিশ্বের শেষ পুরুষ হওয়া ব্যাপারটা খারাপ নয়।

বাথরুমে পা রাখল রলফ, এগিয়ে গেল কমোডের দিকে। পরক্ষণেই একেবারে জমে গেল জায়গায়। উপসর্গটা আবার ফিরে আসছে! ঘুরে দাঁড়াতে চাইল, কিন্তু নড়তেও পারছে না। চিৎকার করে ডাকল লুইসকে, কিন্তু গলা দিয়ে বেরোচ্ছে না একটা শব্দও।

এদিকে ওর পেছনে, বাথরুমের দরজা হালকা শব্দ করে বন্ধ হয়ে গেল। চিরকালের জন্য, সেই সঙ্গে পাথরে খোদাই করা লেখা হলো রলফ স্মিথের ভাগ্য। একটু আগেও মানসিকভাবে অসুস্থ, সব ধরনের নিয়মনীতি মেনে চলে বিশ্বের শেষ মহিলাকে বিয়ে করার কথা ছিল ওর মনে; এখন তাতে শুধুই হতাশা। জানে, এখান থেকে আর বেরোতে পারবে না। নাহ, দরজা লক করা বলে নয়; বেরোতে পারবে না কারণ বাথরুমের দরজার সামনে বড় বড় করে লেখা ‘পুরুষ’।