ক্যালসিয়াম শব্দটি কীভাবে পেলাম?

নতুন কিছু আলাদাভাবে চিহ্নিত করাসহ নানা কারণেই নাম দিতে হয়। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও কথাটি সত্য। এসব নামের পেছনেও লুকিয়ে থাকে মজার ইতিহাস। আজ দেখা যাক, ক্যালসিয়াম শব্দটি কী করে আমাদের হলো?

অনেকের ধারণা, ক্যালসিয়ামের রং সাদা। কিন্তু বিশুদ্ধ ক্যালসিয়াম আসলে রুপালি ধূসর ধাতব মৃৎক্ষারীয় পদার্থ। প্রকৃতিতে বিশুদ্ধ অবস্থায় ক্যালসিয়ামের দেখা পাওয়া ভার। কারণ, এই মৌলটি অতিমাত্রায় সক্রিয়।

মৌলটি খুব সহজেই বাতাসের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ক্যালসিয়াম অক্সাইড গঠন করে। মানুষসহ প্রাণীদের জন্য মৌলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মেরুদণ্ডী প্রাণীদের হাড় (ক্যালসিয়াম ফসফেট) আর দাঁত এবং মোলাস্কা (শামুক ও ঝিনুক) ও খোলসজাতীয় (কাঁকড়া, চিংড়ি) প্রাণীদের খোলস (ক্যালসিয়াম কার্বনেট হিসেবে) গঠনে এটি গুরুত্বপূর্ণ।

প্রাচীনকাল থেকেই ক্যালসিয়াম যৌগের ব্যবহার জানা ছিল মানুষের। সে যুগে মিসর, রোমসহ অনেক দেশে ভবন নির্মাণে ক্যালসিয়াম অক্সাইড বা চুনাপাথর এবং জিপসাম ব্যবহার করা হতো। আবার চুনাপাথর পুড়িয়ে চুন (Lime) বানানো হতো। এই চুনের সঙ্গে বালু আর পানি মিশিয়ে সিমেন্টের মতো একধরনের মিশ্রণ তৈরি করা হতো।

ইটের ফাঁকে এই মিশ্রণ দিলে আস্তে আস্তে সেই গাঁথুনি শক্ত হয়ে যেত। কারণ, বাতাসের কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে সিমেন্টের ক্যালসিয়াম অক্সাইড পরিণত হতো ক্যালসিয়াম কার্বনেটে। ক্যালসিয়াম নামের সঙ্গেও এই ইতিহাস জড়িয়ে আছে। লাতিন শব্দ ক্যালক্স (Calx) থেকে ক্যালসিয়াম নামটি এসেছে, যার অর্থ চুন বা চুনাপাথর।

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, বিজ্ঞানচিন্তা