ক্রোমোজম শব্দটি যেভাবে এলো

BlackJack3D

১৮৫০ সালের দিকে কাপড়ে রং দিতে কৃত্রিম রাসায়নিক রঙের ব্যবহার শুরু হয়েছিল। সে সময় জীববিজ্ঞানীরা এই রঞ্জক পদার্থ জীবকোষে ব্যবহারের চিন্তা করেছিলেন। কারণ রঙিন হলে কোষের বিভিন্ন অংশ অণুবীক্ষণ যন্ত্রে ভালোভাবে বোঝা সম্ভব।

জীববিজ্ঞানীরা ভাবলেন, কোষের ভেতরের উপাদানগুলোর গঠন যদি ভিন্ন ভিন্ন হয়, তাহলে সেগুলোর রাসায়নিক গঠনও নিশ্চয়ই ভিন্ন হবে। তাতে রঞ্জক পদার্থে কোষের কিছু অংশ রঙিন হলেও অন্য অংশ নাও হতে পারে। বাস্তবেও তাই হতে দেখা গেল।

১৮৭০ সালে জার্মান জীববিজ্ঞানী ওয়ালথার ফ্লেমিং কোষে রঞ্জক পদার্থ ব্যবহার করলেন। তিনি দেখলেন, নিউক্লিয়াসের কিছু অংশ রঙিন হয়ে উঠেছে, কিন্তু কোষের অন্যান্য অংশে কিছুই হলো না। নিউক্লিয়াসের যে অংশটি রঞ্জক পদার্থ শোষণ করেছিল, তার নাম ক্রোমাটিন (Chromatin) দিলেন ফ্লেমিং। শব্দটির উত্পত্তি গ্রিক ভাষা, যার অর্থ রং। পরে গবেষণায় তিনি কোষ বিভাজনের বিভিন্ন পর্যায়গুলো আলাদাভাবে দেখতে পেরেছিলেন। তিনি দেখলেন, কোষ বিভাজনের শুরুতে নিউক্লিয়াসের ভেতরের ক্রোমাটিনগুলো একত্র হয়ে ক্ষুদ্র দণ্ডের মতো গঠিত হয়। অনেকটা খাটো ও মোটা আণুবীক্ষণিক সেমাইয়ের মতো।

১৮৮৮ সালে জার্মান বিজ্ঞানী ওয়ালডেয়ার হার্জ প্রথম ক্রোমোজম (Chromosome) শব্দটি ব্যবহার করেন। গ্রিক chroma অর্থ রং, আর soma অর্থ দেহ বা অঙ্গ। তাই ক্রোমোজমের অর্থ দাঁড়ায় ‘রঞ্জিত অঙ্গ’। এমন নাম দেওয়ার কারণ হচ্ছে কোষের এই অঙ্গাণুটি কয়েকটি মৌলিক রং ধারণ করে রঙিন হতে পারে।