হিমোগ্লোবিন শব্দটা কীভাবে এল?

হিমোগ্লোবিনের কারণেই রক্ত লাল দেখায়। লাল রক্তকণিকায় থাকা আয়রন বা লোহার আয়নবাহী (ফেরাস) প্রোটিনকে বলে হিমোগ্ল্লোবিন (Hemoglobin)| ১৮৪০ সালে অক্সিজেন বহনে সক্ষম এই প্রোটিন প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন জার্মান বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক লুডভিগ হুনফেল্ড। গ্রিক ভাষায় হিম (Heme) অর্থ রক্ত। আর লোহিত কণিকায় থাকা প্রোটিনের নাম গ্লোবিন (globin)। অর্থাৎ এটি গ্লোবিউলার শ্রেণির প্রোটিন। তাই হিমোগ্লোবিনের অর্থ রক্তের প্রোটিন।

মানুষের রক্তের একটি হিমোগ্লোবিন অণু একসঙ্গে চারটি অক্সিজেন অণু বহন করতে পারে। রক্ত যখন ফুসফুসের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে গাঢ় রঙের হিমোগ্লোবিন মিলেমিশে উজ্জ্বল লাল অক্সিহিমোগ্লোবিনে পরিণত হয়। তবে রক্তের সঙ্গে অক্সিজেন খুব দুর্বলভাবে যুক্ত থাকে।

ফলে রক্ত যখন কৌশিক নালিতে যায় এবং দেহের সব কোষে ছড়িয়ে পড়ে, তখন দেহকোষ অক্সিহিমোগ্লোবিন থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করে। আর তারপরই অক্সিহিমোগ্লোবিন আবারও হিমোগ্লোবিনে পরিণত হতে পারে। এরপর তা কোষের বর্জ্য কার্বন ডাই-অক্সাইডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কার্বামিনোহিমোগ্লোবিনে পরিণত হয়।

এটি কোষ থেকে শিরার মধ্য দিয়ে রক্তের মাধ্যমে ফুসফুসে চলে যায়। কার্বামিনোহিমোগ্লোবিনের রং নীলচে। সে কারণেই দেহের বাইরে থেকে শিরা দেখতে নীল দেখায়। ফুসফুসে পৌঁছে কার্বামিনোহিমোগ্লোবিনে বিশেষ প্রক্রিয়ায় এই কার্বন ডাই-অক্সাইড অণু মুক্ত করে। এভাবেই হিমোগ্লোবিন প্রতি মুহূর্তে দেহে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড বিনিময় করে।

লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, বিজ্ঞানচিন্তা