সম্প্রতি আপনি ওরিয়ন নেবুলার ছবি তুলেছেন। কীভাবে ছবিটা তুললেন?
জুবায়ের কেওলিন: আমি সবসময় টেলিস্কোপ দিয়ে ছবি তুলি। বছরের এই সময়ে সাধারণত ওরিয়ন নেবুলা ভালো দেখা যায়। প্রতি বছরের মতো এ বছরও ওরিয়ন নেবুলার ছবি তুলেছি। অন্যান্য সাধারণ দিনেই মতোই গত ২৮ অক্টোবর ছবি তুলতে যাই। সেদিন আকাশ বেশ পরিষ্কার ছিল। সে কারণেই ওইদিন ছবি তোলার কথা ভাবি। টেলিস্কোপের প্রয়োজনীয় সবকিছু নিয়ে যাই ছাদে। প্রায় ৩ ঘণ্টার এক্সপোজার নিয়েছিলাম সে রাতে। সারা রাত ছাদেই ছিলাম। ওরিয়ন নেবুলা ছাড়াও আরও কয়েকটা ছবি তুলি। শুধু এই ছবিটার জন্য আলাদাভাবে কোনো আয়োজন করিনি। ছবিটি প্রকাশ করার পরেও প্রায় ১০ ঘণ্টা এই ছবি নিয়ে কাজ করেছি। সম্প্রতি আরও একটা ওরিয়ন নেবুলার ছবি তুলেছি। ওটায় প্রায় ১১ ঘণ্টার এক্সপোজার আছে। আর যে ছবিটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ওটায় ছিল সাড়ে ৪ ঘণ্টার এক্সপোজার।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে আপনাকে নিয়ে লেখা হয়েছে। ব্যাপারটা কেমন লাগছে?
জুবায়ের কেওলিন: আমি খুব খুশি এবং কৃতজ্ঞ। এ জন্য সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। মানুষ আমার প্রশংসার পাশাপাশি এগুলো নিয়ে জানতে চাইছে, আগ্রহী হচ্ছে—এটাও আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া। তবে আলাদাভাবে এসব গায়ে লাগাতে চাই না। তাতে সমস্যাই হয়। মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি, এটাই আমার কাছে অনেক বেশি।
এর আগেও কি আপনার কোনো ছবি এমন জনপ্রিয়তা পেয়েছিল?
জুবায়ের কেওলিন: স্থানীয় পর্যায়ে হয়নি। আগেও আমি এসব ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছি। সেগুলো মিলিয়ন মিলিয়ন শেয়ার হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এমন জনপ্রিয়তা আগে পাইনি। অন্যসব ছবির মতো এটাও ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলাম। সেটা দেশের মানুষ শেয়ার করেছেন। আমার মনে হয় যখন মানুষ জেনেছে যে ছবি তোলার পাশাপাশি এই টেলিস্কোপটাও আমার তৈরি, তখন তাঁরা দুটি বিষয় কানেক্ট করতে পেরেছেন। আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
আপনি নিজেই অনেক টেলিস্কোপ বানিয়েছেন। বাজারেও এ ধরণের টেলিস্কোপ কিনতে পাওয়া যায়। আপনার টেলিস্কোপের সঙ্গে বাজারের টেলিস্কোপের পার্থক্য কী?
জুবায়ের কেওলিন: শৈশব থেকেই আমার টেলিস্কোপ বানানোর ইচ্ছা। ছোটবেলায় একটা বানিয়েছিলাম। তারপর বড় হয়ে আরও ভালো টেলিস্কোপ বানানোর ইচ্ছা ছিল। ২০১৮ সালে একটা প্রজেক্ট করতে চাইছিলাম। অনেক কিছু নিয়ে তখন এক্সপেরিমেন্ট করি। তখন শৈশবের সেই ইচ্ছাটা আবার মাথায় আসে। তারপর আমি ফটোগ্রাফিক টেলিস্কোপ বানানোর চেষ্টা করি। এর সাহায্যে মহাকাশ দেখার পাশাপাশি ছবিও তোলা যায়। প্রথম ৫০০ মিলিমিটারের একটা টেলিস্কোপ বানাই। ওটা দিয়েই প্রথম ছবি তুলি। সূর্যগ্রহণের ছবি তুলেছিলাম প্রথমে। আমি ভাগ্যবান ছিলাম যে তখন সূর্যগ্রহণ হচ্ছিল। ওই সময়েই আমার টেলিস্কোপ বানানোর কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল।
এখন পর্যন্ত আমি দুটি ইমেজিং টেলিস্কোপ বানিয়েছি। তৃতীয়টার কাজ এখনো চলছে। দুটি টেলিস্কোপের সামনে অবজেক্টিভ লেন্স ব্যবহার করেছি। আর তৃতীয়টায় ব্যবহার করব মিরর লেন্স। ওটার ডিজাইনের কাজ এখনো শেষ হয়নি। আমি আমার পছন্দ মতো যখন যে টেলিস্কোপ লাগে, সেটা বানিয়ে নিই। লেন্সগুলো শুধু বিদেশ থেকে কিনে আনি। দেশে ওভাবে অপটিক্যাল লেন্স পাওয়া যায় না। ওগুলো বানানো যায় কিন্তু তাতে কালার ভালো আসবে না। এখানে আমাদের কিছু বাঁধা আছে। তবে আমার ইচ্ছা আছে বড় রিফ্লেক্টিং মিরর নিজের হাতে বানানোর।
আপনি যেসব ছবি তোলেন, সেগুলো কি এভাবেই তোলেন, নাকি পরে এডিট করে রং বা অন্যান্য কিছু পরিবর্তন করেন?
জুবায়ের কেওলিন: প্রথম কাজ টেলিস্কোপ অ্যালাইন করা। পৃথিবীর অক্ষের সঙ্গে একটা মাউন্ট অ্যালাইন করে নিলে আকাশ ভালোভাবে ট্র্যাক করা যায়। পৃথিবীর গতির উল্টো গতিতে ঘোরে মাউন্ট। পৃথিবীর অক্ষের সঙ্গে প্যারালালভাবে আমাদের মাউন্ট রাখা গেলে আকাশ ট্র্যাক করা যায়। আমার কাছে ছোট একটা গাইড টেলিস্কোপ আছে। ওটা দিয়ে কোনো নক্ষত্রকে ট্র্যাক করে রাখি। ট্র্যাক করা নক্ষত্র যদি একটু সরে যায়, তাহলে আবার মাউন্ট সে অনুসারে ডানে বা বাঁয়ে সরানোর নির্দেশ দেয়। এভাবে ৫ বা ১০ মিনিটের মধ্যে আকাশের সঙ্গে টেলিস্কোপ অ্যালাইন করা যায়।
এরপর ধরুন, আমরা ওরিয়ন নেবুলার ছবি তুলব। তখন ওই নেবুলার দিকে টেলিস্কোপ সেট করি। তারপর ঠিক করতে হয় যে আমি কয়টা ছবি নিব। আরও কিছু ক্যামেরার সেটিংস আছে, সেগুলো দিতে হয়। অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সিগন্যাল টু নয়েজ রেশিও। এর সাহায্যে নয়েজের তুলনায় কতটুকু সিগন্যাল সংগ্রহ করছি, তা বোঝা যায়। সিগন্যাল বেশি সংগ্রহ করতে চাইলে বেশি সময় এক্সপোজ করতে হবে। অথবা একসঙ্গে ধারণ করতে হবে অনেক আলো। প্রত্যেক টেলিস্কোপের একটা নির্দিষ্ট মাত্রা আছে। সেই মাত্রা অনুসারে টেলিস্কোপ আলো ধারণ করতে পারে। মূল কথা হলো, আমাদের হিসেব করতে হয় যে কতক্ষণ এক্সপোজার নিলে একটা ভালো ছবি পাওয়া যাবে। ২৮ অক্টোবর আমি ৫ মিনিটের এক্সপোজার নিয়ে ৩৬টা ছবি তুলেছিলাম। এই পাঁচ মিনিটের এক্সপোজার নিতে সময় লাগে প্রায় ৩ ঘণ্টা। এগুলো পরে সফটওয়্যারে কম্বাইন করতে হয়। এমন অনেক সফটওয়্যার আছে যেগুলো নক্ষত্র ডিটেক্ট করে একটার সঙ্গে অন্যটা অ্যালাইন করতে পারে। এই ৩৬টা ছবি অ্যালাইন করার পরে নয়েজ রেশিও আরও বেড়ে যায়। এরপর ব্রাইটনেস কনটেক্স মিলিয়ে নিই। তারপর ডেটাগুলো প্রসেস করি।
রঙের ব্যাপারেও জিজ্ঞেস করেছেন। রং আসলে বসানো হয় না। কিন্তু আমরা গ্যাস নির্ধারণ করতে পারি। সেগুলো অনুসারে ছবি রঙিন হয়। যেমন ধরুন, আমরা সালফার, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন গ্যাস নির্ধারণ করলাম। এই তিন গ্যাসের জন্য তিন ধরণের ফিল্টার ব্যবহার করা হয়। তিনটা আলো আলাদাভাবে ক্যাপচার করা হয়। তাখন তিনটা গ্রে স্কেল ছবি দেখা যায়। এরপর কম্পিউটার এটা আরজিবি-তে কালার ডিসপ্লে করে। এখন আমরা যদি লাল চ্যানেলে সালফার, সবুজ চ্যানেলে হাইড্রোজেন ও নীল চ্যানেলে অক্সিজেন বসাই, তাহলে একটা রঙিন ছবি দেখতে পাবো। এটাকে বলে ফলস কালার। ফলে আমরা কালার বসিয়ে দেই না, বরং অ্যাসাইন করি। ছবি যখন দেখবেন, তখন বুঝতে পারবেন যে এই লাল অংশগুলো আসলে সালফার, হলুদ অংশ হাইড্রোজেন ইত্যাদি। তবে পরে ফলস কালার ব্যবহার করলেও তার একটা অর্থ আছে।
আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে একটু জানতে চাই। আপনি কোন পেশায় আছেন? পাশাপাশি অবসর সময়ে কী করেন?
জুবায়ের কেওলিন: আমি একজন অ্যানিমেটর এবং ফিল্মমেকার। অডিও ভিজ্যুয়াল তৈরি করি ও অ্যাডভেটাইসমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করি। এছাড়া কর্পোরেট ভিডিও বানাই। আর অবসরে আমি ইমেজ প্রসেসিং করি। মাঝেমধ্যে বিড়ালের সঙ্গে খেলি। আমার স্ত্রীও অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার। তার সঙ্গেও অবসরে গল্প করি। মাঝেমধ্যে রান্নাও করি।
অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফি নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
জুবায়ের কেওলিন: আমার মনে হয়, অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফিকে মজার প্ল্যাটফর্মে রুপান্তর করা প্রয়োজন। গৎবাঁধা শিক্ষায় অ্যাস্ট্রোনমি সম্পর্কিত সবকিছু কেমন যেন বোরিংভাবে চিন্তা করে। কিন্তু আমরা যদি ভিজ্যুয়াল কিছু মানুষের সামনে দেখাতে পারি, তাহলে তাঁদের এই ভীতি দূর হতে পারে। ফলে আমি এরকম আরও ভালো ভালো ছবি তুলতে চাই। মানুষের জানার আগ্রহ বাড়াতে চাই। সেজন্য হয়তো কিছু বই প্রকাশ করতে পারি। অনেক ছবি নিয়ে কয়েকটা বই তৈরি করা যেতে পারে। ভবিষ্যতে আমার ছবিগুলো নিয়ে ওয়ার্কশপ করার ইচ্ছা আছে। আর আমাকে অনেকে জিজ্ঞেস করেন যে কীভাবে টেলিস্কোপ বানানো যায়। ফলে ভবিষ্যতে হয়তো এটা নিয়েও কাজ করতে পারি। কীভাবে আরও সহজে টেলিস্কোপ বানানো যায়, সে ব্যাপারে কোনো আয়োজন বা ওয়ার্কশপ হতে পারে।
আপনার পড়াশোনা কোথায়? কী বিষয়ে পড়ালেখা করেছেন?
জুবায়ের কেওলিন: আমি হাইস্কুলের পরে আর কোনো পড়াশোনা করিনি। ইউনিভার্সিটি বা হায়ার এডুকেশন করিনি। কারণ আমি বিশ্বাস করি, আপনার জ্ঞান অর্জনের ইচ্ছা থাকলে তা কেউ থামাতে পারবে না। এখন ১৮ শতাব্দী হলে আপনাকে স্কুলে যেতে হতো না। একটা লাইব্রেরিতে গিয়ে বসে থাকতেন, সেখান থেকে নিজের মতো পড়াশোনা করে জ্ঞান অর্জন করতে পারতেন। আসলে ইচ্ছাটাই বড়। আমরা এখন জ্ঞান অর্জনের জন্য চাপের সম্মুখীন হই। এটা না হলে হয়তো আরও বেশি জ্ঞান অর্জন করতাম আমরা।
আমাদের দেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে একাডেমিকভাবে বাংলাদেশে পড়াশোনাও কম। এই বিষয়ে মানুষকে আগ্রহী করে তুলতে করা যেতে পারে বলে মনে করেন?
জুবায়ের কেওলিন: আমি বলবো না যে সবাইকে খুব আগ্রহী হতে হবে। সবার অ্যাস্ট্রোনমিতে আসার প্রয়োজনও নেই। কারণ, পেট তো চালাতে হবে। কিন্তু অ্যাকাডেমিকভাবে কিন্তু অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে অনেক দূর যাওয়া যায়। ফলে দুইভাবে এদিকে মানুষ আগ্রহী হতে পারে। প্রথমত, একাডেমিকভাবে অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে পড়ে এদিকে নিজের ক্যারিয়ার গড়া এবং দ্বিতীয়ত, আমার মতো অন্য কোনো পেশায় থেকেও অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে কাজ করা।
আপনি নিজে অন্য পেশার মানুষ হয়েও কীভাবে অ্যাস্ট্রোনমিতে আগ্রহী হলেন?
জুবায়ের কেওলিন: শৈশবেই আমার এই আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আমি নক্ষত্র দেখলেই মনে করতাম, ওটার পাশে হয়তো কোনো গ্রহ আছে। হয়তো থাকতে পারে মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণী। সায়েন্স ফিকশন পড়ে পড়ে এগুলো কল্পনা করতাম। কল্পনা করতেও খুব ভালো লাগত। এরপর ইন্টারনেটের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর সেগুলো খুঁজে খুঁজে দেখতাম। পাশাপাশি অ্যানেমেশন, ফিল্মোগ্রাফি নিয়েও কাজ করেছি। যা যা করতে চেয়েছি তা এখন করছি। আমার মনে হয়, পৃথিবীতে অনেক কিছু জানার আছে। একটা জীবন তা জানার জন্য যথেষ্ট নয়। কিন্তু তারপরেও যতটা সম্ভব, জানতে হবে। এখনো চেষ্টা করি নতুন নতুন ব্যাপারে জানতে।
সুন্দরভাবে আকাশের ছবি তোলার জন্য আমাদের পরিবেশ হয়তো একদম উপযোগী নয়। কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এ ধরনের ছবি তুলতে?
জুবায়ের কেওলিন: আলোকদূষণ ও বায়ুদূষণ সবচেয়ে বড় সমস্যা। আলোকদূষণ মোটামুটি ফিল্টার ব্যবহার করে সমাধান করা যায়। কিন্তু বায়ুদূষণের হাত থেকে রক্ষা নেই। নীল ফোটন প্রায় খাড়াভাবে পড়ে বায়ুমণ্ডলে। কিন্তু দূষণের কারণে তা আমরা ধরতেই পারি না। এ ছবি তোলা খুব কষ্ট। বায়ুদূষণ কমাতে পারলে আমরা আরও ভালোভাবে ছবি তুলতে পারতাম। অনেক দূর্গম জায়গা ছিল, যেখানে গিয়ে আলোকদূষণমুক্ত পরিবেশে ছবি তোলা যেত। কিন্তু সেসব জায়গায় রিসোর্ট হয়ে আলোকদূষণ বেড়ে গেছে। ফলে এখন আর সুন্দরভাবে ছবি তোলা যায় না। সেন্ট মার্টিনে আগে সন্ধায় খালি চোখে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি দেখা যেত। কিন্তু এখন বাল্বের জন্য তা দেখতে পারবেন না। এগুলো নিয়ে আমাদের সবার সচেতন হওয়া প্রয়োজন। মানুষকে সচেতন হতে হবে এবং অন্যকে সচেতন করতে হবে।
একনজরে
নাম: জুবায়ের কেওলিন
জন্ম: ১ নভেম্বর, ১৯৮৮
প্রিয় বই: দ্য মার্শিয়ান
প্রিয় সিনেমা: দ্য লর্ড অব দ্য রিংস, ম্যাট্রিক্স ট্রিলজি
অবসর: নতুন কিছু শিখি
প্রিয় অ্যাস্ট্রোনমার: গ্যালেলিওসহ অনেকে
প্রিয় রং: বর্ণালির ৪০০-৭০০ ন্যানোমিটার
কেউ নিজেই টেলিস্কোপ বানিয়ে আকাশ দেখতে চাইলে তাঁকে কি পরামর্শ দেবেন?
জুবায়ের কেওলিন: টেলিস্কোপ খুব সাধারণ একটা যন্ত্র। দুটি লেন্স ব্যবহার করতে হয়। চশমার দোকানে ৮০ মিলিমিটার অ্যাপাচারের লেন্স পাওয়া যায়, ওটা কিনেই টেলিস্কোপ বানাতে পারেন। আগে নির্ধারণ করতে হবে যে কত মিলিমিটার ফোকাল লেন্থের টেলিস্কোপ বানাতে চান। আপনি যদি ১-কে ফোকাল লেন্থ দিয়ে ভাগ করবেন তাহলে হিসেবটা পেয়ে যাবেন। তারপর সেই লেন্থের একটা লেন্স কিনে বানাতে পারবেন একটা টেলিস্কোপ। এছাড়া ইউটিউবে ভিডিও দেখেও আরও সহজে টেলিস্কোপ বানানো যায়। আমি একটা ছবি তুলে জনপ্রিয় হয়েছি বলে যে আমার কাছ থেকেই জানতে হবে, এমন না ব্যাপারটা। গুগলে সার্চ করলেও সব তথ্য পাওয়া যায়। ভবিষ্যতে হয়তো আমিই এমন একটা ভিডিও বানাবো যেখানে বিস্তারিত হাতে করে দেখাবো। একটা ওয়ার্কশপও করা যেতে পারে।
আমাদের বেশিরভাগ পাঠক কিশোর ও তরুণ, তাদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলেন।
জুবায়ের কেওলিন: আমাদের সামনের সব বাঁধাই কাল্পনিক। শেখার বা কাজ করার কোনো শেষ নেই। আমি দেখতে চাই, বাংলাদেশের কেউ একজন চাঁদে বা অন্যগ্রহে পৌঁছে গেছে। এটা যদি আমরা বিশ্বাস করতে শুরু করি, তাহলে একদিন সত্যিই বাংলাদেশের কেউ ভিনগ্রহে পাড়ি দিতে পারবে।
অনুলিখন: অনিক রয়