আবারও চাঁদে নভোযান পাঠাবে ভারত 

চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করেছে সদ্যই। এরই মধ্যে চন্দ্রযান-৪ নামের নভোযান চাঁদে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে ভারত।

চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করেছে সদ্যই। এরই মধ্যে চন্দ্রযান-৪ নামের নভোযান চাঁদে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে ভারত।

ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যেই চাঁদে পাঠাতে চায় চন্দ্রযান-৪। তবে এবার হয়তো ভারতের সঙ্গে যুগ্মভাবে কাজ করবে জাপান। জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সার সঙ্গে ইতিমধ্যে এ বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছে ইসরোর। তবে ভারত ও জাপানের যৌথভাবে চালানো এ অভিযানের নাম চন্দ্রযান-৪ না হয়ে হতে পারে লুপেক্স (লুনার পোলার এক্সপ্লোরেশন)। 

নাম যা-ই হোক, অভিযান চালানো হবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে। সত্যিই চাঁদে পানি আছে কি না বা অতীতে কোনোদিন পানি ছিল কি না, তাই খুঁজে দেখা হবে এ অভিযানে।

এর আগে, গত ২৩ আগস্ট, বুধবার বাংলাদেশ সময় ৬টা ৩৪ মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে ভারতের চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। চন্দ্রযান-৩ অভিযানের উদ্দেশ্যও চাঁদের পানি খুঁজে দেখা। সঙ্গে পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখা হবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর বায়ুমণ্ডল। এক চন্দ্র দিবস বা পৃথিবীর ১৪ দিন চাঁদে সচল থাকবে চন্দ্রযান-৩ মিশনের ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ ও রোভার ‘প্রজ্ঞান’। এরপর দুটোই অকেজো হয়ে যাবে। এখন দেখার বিষয়, এ মিশন থেকে চাঁদের দক্ষিণ মেরু সম্পর্কে কতটা জানা যায়।

আরও পড়ুন

চাঁদের দক্ষিণ মেরু নিয়ে আগ্রহ আছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসারও। ২০২৫ সালের শেষে বা ২০২৬ সালের শুরুর দিকে আর্টেমিস মিশনে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মানুষ পাঠাতে চাচ্ছে নাসা। ইতিমধ্যে আর্টেমিস প্রোগ্রামের প্রথম মিশন আর্টেমিস-১ সফলভাবে চাঁদের কক্ষপথে ঘুরে ফিরে এসেছে। এরপর ২০২৪ সালের নভেম্বরে আর্টেমিস-২ মিশনে চার নভোচারী চাঁদের কক্ষপথে ঘুরে আসবেন। আর আর্টেমিস-৩ অভিযানে চাঁদে মানুষ পাঠাবে নাসা। 

রাশিয়াও চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নভোযান পাঠানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত গত ২১ আগস্ট নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চাঁদের বুকে আছড়ে পড়ে রুশ নভোযান লুনা ২৫। একটুর জন্য এ মিশন ব্যর্থ হয়। 

আরও পড়ুন

চাঁদে এ পর্যন্ত চারটি দেশ নভোযান পাঠাতে সক্ষম হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে ভারত। তবে ভারত এই প্রথমবারের মতো সরাসরি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নভোযান পাঠাল।

এর আগে, ২০০৮ সালে ভারত চাঁদের উদ্দেশ্যে প্রথম নভোযান চন্দ্রযান-১ পাঠায়। কিন্তু সেবার ইচ্ছে করেই হার্ড ল্যান্ডিং করানো হয় নভোযানটিকে। তবে চাঁদের বুকে যে পানির অস্তিত্ব আছে, এ বিষয়টা নিশ্চিত করেছিল নভোযানটি। এরপর ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ পাঠালে তা চন্দ্রপৃষ্ঠে নামার আগেই ধ্বংস হয়ে যায়। সেসব সমস্যা কাটিয়ে সফলভাবে চন্দ্রযান-৩ চাঁদে অবতরণ করিয়েছে ভারত। এজন্যই ভারতের পরবর্তী চন্দ্রাভিযানগুলো  আশা দেখাচ্ছে।

লেখক: সদস্য, সম্পাদনা দল, বিজ্ঞানচিন্তা

সূত্র: ইসরো, আনন্দবাজার পত্রিকা