আবার পেছাল জেমস ওয়েবের উৎক্ষেপণ

পপুলার সায়েন্স ডট কম
আরও কিছু বাড়তি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সব ঠিক আছে কি না, নিশ্চিত হতে চাইছে নাসা। তাই জেমস ওয়েবের উৎক্ষেপণ পিছিয়ে গেল আরও অন্তত চারদিন।

ছোট্ট একটা ভুল নষ্ট করে দিতে পারে গত প্রায় পঁচিশ বছরের পরিশ্রম। নিমেষে শেষ হয়ে যেতে পারে এতদিনের সব কষ্ট, বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। সে কারণেই জেমস ওয়েব উৎক্ষেপণের আগে বারবার পরীক্ষা করে দেখছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা, সব ঠিক আছে কি না। সেরকম এক পরীক্ষাতেই ধরা পড়ল ছোট্ট এক গড়মিল। ফলে জেমস ওয়েবের উৎক্ষেপণ পিছিয়ে গেল আরও অন্তত চারদিন।

জেমস ওয়েব নভোটেলিস্কোপ বর্তমানে অবস্থান করছে ফ্রেঞ্চ গায়ানার ইউরোপিয়ান স্পেসপোর্টে। সেখান থেকেই ১৮ ডিসেম্বর সব ঠিকঠাক থাকলে এরিয়ান ৫ রকেটে চড়ে যাত্রা করার কথা জেমস ওয়েবের। এ মুহূর্তে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা। সমস্যাটা হয়েছে এই পরীক্ষা করতে গিয়েই। এক প্রযুক্তিকর্মী ওয়েবকে রকেটের লঞ্চ ভেহিকল অ্যাডাপ্টারের সঙ্গে যুক্ত করছিল। পরে এই অ্যাডাপ্টর ব্যবহার করে রকেটের ঘাড়ে জেমস ওয়েবকে ঠিকঠাক করে বসানোর কথা। কিন্তু যুক্ত করার সময় হঠাৎ খুলে যায় ক্ল্যাম্প ব্যান্ড। সহজ করে বললে, এই ক্ল্যাম্প ব্যান্ড-ই জেমস ওয়েবকে রকেটের মাথায় ধরে রাখবে। আবার দরকারের সময় খুলে গিয়ে জেমস ওয়েবকে ছেড়ে দেবে নির্দিষ্ট কক্ষপথে। কিন্তু হঠাৎ এভাবে খুলে যাওয়ার ফলে সব ঠিক আছে কি না, তা আবার পরীক্ষা করা প্রয়োজন বলে মনে করছে নাসা।

তাছাড়া, ব্যান্ডটি এভাবে খুলে যাওয়ায় কেঁপে উঠেছিল পুরো জেমস ওয়েব। এই কম্পন ছড়িয়ে গেছে পুরো টেলিস্কোপে। তাই পরীক্ষা করে দেখতে হবে, কোথাও সূক্ষ্ম কোনো ফাটল ধরেছে কি না বা কোনো ধরনের সমস্যা হয়েছে কি না। কিংবা নড়ে গেছে কি না ভেতরের কিছু।

জেমস ওয়েবকে পাঠানো হচ্ছে ভাঁজ করে। যাত্রা পথে এই ভাঁজ ধীরে ধীরে খুলে যাবে, কাজের জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠবে জেমস ওয়েব। ভেতরের কিছু সামান্য নড়ে গেলেও বিঘ্ন ঘটতে পারে ওয়েব খোলার সময়। তখন মাঠে মারা পড়বে পুরো মিশন।

সেজন্য আরও কিছু বাড়তি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সব ঠিক আছে কি না, নিশ্চিত হতে চাইছে নাসা। এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হলেই যাত্রা করবে জেমস ওয়েব। তবে সেটা ২২ ডিসেম্বরের আগে যে হচ্ছে না, এটুকু মোটামুটি নিশ্চিত।

সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান