জেমস ওয়েবে গ্রহাণুর আঘাত!

মে মাসের শেষ দিকে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে আঘাত করেছে একটি মাইক্রো গ্রহাণু বা মহাকাশের পাথর কণা। তাতে টেলিস্কোপটির একটি আয়না কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে ৮ জুন বৃহস্পতিবার নাসার পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই আঘাতের পরও স্বাভাবিকভাবে কাজ করবে জেমস ওয়েব। তাই, আপাতত দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।

নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার পল গেইথনার বলেন, ‘আমরা জানতাম, জেমস ওয়েবকে মহাকাশের নানারকম প্রতিকূল পরিবেশের মুখোমুখি হতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে সূর্যের শক্তিশালী অতিবেগুনি রশ্মি এবং চার্জযুক্ত কণা কিংবা গ্যালাক্সির বাইরে থেকে আসা মহাজাগতিক রশ্মি। তেমনি সৌরজগতের অতি ক্ষুদ্র গ্রহাণুর সাথে সংঘর্ষের আশঙ্কাও ছিলো।

এ ধরনের পরিস্থিতি তাই বিজ্ঞানীদের কাছে নতুন নয়। জেমস ওয়েব তৈরির সময়ে এসব আশঙ্কা মাথায় রেখেছিলেন তাঁরা। নানা ধরনের প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা করেও এটা দীর্ঘদিন কাজ করে যেতে পারবে।

জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ পৃথিবী থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরের কক্ষপথে L2 ল্যাগ্রেঞ্জ বিন্দুতে স্থাপন করা হয়েছে। এখানে স্পেস জাংকের উপস্থিতি নেই। কিন্তু রয়েছে ক্ষুদ্র গ্রহাণুর বিচরণ। সেগুলোর আকার সাধারণত বালির কণার সমান বা তাঁর চেয়েও ছোট।

আকারে ছোট হলেও মহাকাশ এই ক্ষুদ্র গ্রহাণুগুলোর আঘাত একেবারে সামান্য নয়। এরা প্রচন্ড গতিতে ঘোরে। তাই এগুলোর ভরবেগ অনেক বেশি। এগুলোর আঘাতে তাই জেমস ওয়েবের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।

বিজ্ঞানীরা তাই এসব সম্ভাবনা সিমুলেশন করে জেমস ওয়েবের ডিজাইন করেছিলেন। সময়ের সাথে জেমস ওয়েব কার্যক্ষমতা কমবে, কিন্তু এসব প্রতিকূলতার জন্য সহসাই জেমস ওয়েব বিকল হবে না।

টেলিস্কোপটির সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য বর্তমানে বিজ্ঞানীরা এর সাহায্যে কাছের এবং দূরের মহাবিশ্বকে পর্যবেক্ষণ করছেন। আগামী ১২ই জুলাই এই টেলিস্কোপের তোলা প্রথম ছবি প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিলো নাসা। ক্ষুদ্র গ্রহাণুর এই আঘাতে নির্দিষ্ট সময়ে ছবি প্রকাশ করতে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছে মার্কিন এই মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।

লেখক: শিক্ষার্থী, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা

সূত্র: স্পেস ডট কম