আকাশে কত তারা

কমবেশি সব মানুষই রাতের আকাশ দেখে মুগ্ধ হয়েছে। অনেকে মহাবিশ্বের রহস্য সমাধানের চেষ্টা করেছে, সফলও হয়েছে। মহাবিশ্বের কথা নামে এই বইয়ে সেই সেই রহস্যের কথা ছোটদের জন্য তুলে ধরা হয়েছে সহজ ভাষায়। বইটি প্রকাশিত হয়েছে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ‘রাদুগা’ প্রকাশন থেকে, ১৯৮৩ সালে। ফেলিক্‌স ক্রিভিনের লেখা বইটি রুশ থেকে অনুবাদ করেছেন অরুণ সোম। ছবি এঁকেছেন গালিনা সেমিওনভা। বিজ্ঞানচিন্তার পাঠকদের জন্য বইটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে…

আকাশে এত তারা যে গুণে শেষ করা অসম্ভব। তা সত্ত্বেও আকাশের তারা কিন্তু গোনা হয়েছে। অবশ্য সব তারা নয়; কিন্তু অন্তত পৃথিবী থেকে যেগুলো চোখে পড়ে, সেগুলো তো বটেই।

অগণিত তারা আছে, যেগুলো পৃথিবী থেকে চোখে পড়ে না। পৃথিবীর মাথার ওপর অদৃশ্য তারার সংখ্যাই বেশি, আর তাদের সম্পর্কে পৃথিবীর কিছুই জানা নেই। কিন্তু পৃথিবী থেকে তাদের দেখা যায় না বলে কি আর সেগুলো তারা নয়? চোখে দেখা যাক আর না-ই যাক, তারা তারাই থেকে যায়, থেকে যায় সত্যিকারের জ্যোতিষ্কমণ্ডলী।

এটা হলো একটি রেডিওটেলিস্কোপ। এর সাহায্যে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তারা পর্যবেক্ষণ করেন।

প্রতিটি তারাই কোথাও দেখা যায়, আবার কোথাও দেখা যায় না। কোনোটা কাছে, আবার কোনোটা দূরে। তাই যখনই তোমরা তারা দেখ, তখন যেন অবশ্যই মনে থাকে আরও সব তারার কথা, যেগুলো আমাদের এখানে কিরণ না দিলেও কোথাও না কোথাও আছে।

তারারা এত ছোট কেন

উঁচু বিল্ডিংয়ের ছাদের ওপর কখনো কোনো মানুষকে দেখেছ? নিচ থেকে বা মাটি থেকে একদম ছোট দেখায়। কিন্তু সে আসলে ছোট নয়। ছোট সে হতে পারে না, আসলে তাকে ছোট দেখায়। কারণ সে দূরে।

দূর থেকে সব জিনিসই ছোট দেখায়। এমনকি অনেক উঁচু বাড়িও দূর থেকে ছোট দেখায়। শুধু কি তাই? আমাদের গোটা পৃথিবীটাই দূর থেকে ছোট মনে হয়।

আর সূর্য? তাকে দেখলে তো আমাদের ফুটবল খেলার বলের চেয়ে বড় মনে হয় না, অথচ আসলে সে আমাদের পৃথিবীর চেয়ে বহু গুণ বড়।

আর যেসব তারা আমাদের সূর্যের চেয়ে বহু গুণ বড়, আমাদের কাছে সেগুলোকে মনে হয় এত্তটুকু, একরত্তি, কেননা আমাদের থেকে সূর্য যত দূরে, তাদের অবস্থান তার চেয়েও দূরে। সূর্যের চেয়ে অনেক অনেক দূরে।

সত্যিকারের আয়তন দূর থেকে দেখা যায় না, দেখা যায় কাছ থেকে। মানুষের আয়তন জানতে গেলে তাকে দেখতে হয় কাছাকাছি জায়গা থেকে। মানুষকে দূর থেকে দেখলে, নিচ থেকে ওপরের দিকে তাকিয়ে অথবা ওপর থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলে তার সত্যিকারের আয়তন জানা যায় না।

(চলবে…)

 

মূল: ফেলিক্‌স ক্রিভিন

অনুবাদ: অরুণ সোম

 

* পাঠকের সুবিধার্থে বইয়ের মূলভাব ঠিক রেখে বানান রীতির কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন