কোপার্নিকান শর্ত ও বহির্বিশ্বে প্রাণের সন্ধানে

ড্রেক সমীকরণ

বহির্বিশ্বে জীবনের সন্ধান মানুষের আধুনিক সময়ের এক অভিনব চ্যালেঞ্জ। অনেককাল আগে মানুষ হয়তো কল্পনায় কিংবা স্রেফ চিন্তার চ্যালেঞ্জ হিসেবে ভেবেছিল, পৃথিবীর বাইরের জীবন কেমন হতে পারে বা আদৌ পারে কি না। কেবল এটুকু ভেবেছিল বলেই অনেকের জীবনহানি ঘটেছে। কিন্তু আধুনিক জ্যোতির্বিদ্যার বিকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই প্রশ্ন আবারও ঘুরেফিরে এসেছে। বিশেষ করে রেডিও জ্যোতির্বিদ্যার আবিষ্কারের পর বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের একটা উপায় পাওয়া গেল। এই ভাবনা থেকেও বহির্বিশ্বে ধীশক্তিসম্পন্ন সভ্যতার সংখ্যা নিয়ে অনেকেই চিন্তা শুরু করেছিলেন বিশ শতকের ষাটের দশক থেকেই। তখন আশাবাদ অনেক উঁচু ছিল। কিন্তু তারপর থেকে ছায়াপথে নক্ষত্রের বিন্যাস, গ্রহের গঠন, উদ্ভবের তত্ত্ব, গ্রহের ভূতত্ত্ব, রসায়ন, গ্যাস-মিশ্রণ, নক্ষত্র থেকে তাদের দূরত্বের বিস্তার, প্রাণের উপযোগী পরিবেশ সম্পর্কে জ্ঞান, পৃথিবীর বিরলতা, মহাকাশে জৈব যৌগের সহজলভ্যতা, পানির উপস্থিতি প্রভৃতি বহু কিছু নিয়ে আমাদের জানার পরিধি বেড়েছে। এর ফলে ছায়াপথে বুদ্ধিমান সভ্যতার সম্ভাব্য সংখ্যা সম্পর্কে আমাদের ধারণা ক্রমেই সংযত হয়েছে। অনেক শাণিত হয়েছে আমাদের বিশ্লেষণ। আগে যেমন শত শত ধীমান সভ্যতা খোঁজা হতো, এখন আর তেমনটি হয় না। তবে এখনকার সংখ্যাটা অর্ধডজন থেকে অর্ধশতের মধ্যে ঘোরাফেরা করে।

অতি সম্প্রতি দুই গবেষক কিছু অভিনব শর্তের অধীনে এই ছায়াপথে যোগাযোগে সক্ষম সভ্যতার (Communicating Extra Terrestrial Intelligent, CETI) সংখ্যা নির্ধারণে ব্রতী হয়েছেন (‘The Astrobiological Copernican Weak and Strong Limits for Intelligent Life’, The Astrophysical Journal, 896: 58, June 10, 2020)। তাঁদের মূল প্রতিপাদ্য হলো জ্যোতির্জৈবনিক কোপার্নিকান শর্ত (Astrobiological Copernican limits)। এই শর্ত অনুযায়ী এই ছায়াপথে এবং সম্প্রসারিত অর্থে এই পুরো মহাবিশ্বেই, ধীমানসত্তার আবির্ভাব ঘটে পৃথিবীর অনুরূপ শর্তের অধীনে। অর্থাৎ পৃথিবীর ‘মতো’ কিংবা কাছাকাছি শর্তে অথবা একদম পৃথিবীর মতোই আরেকটি গ্রহে যোগাযোগে সক্ষম ধীমান সভ্যতা বিকশিত হতে পারে। এ ছাড়া সম্ভব নয়। এটা একটা বেশ অদ্ভুত শর্ত এবং বলা বাহুল্য, এ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। তার কারণ হলো, পৃথিবী, তার প্রাণী ও জীবসম্পদ ছাড়া আমাদের আর কোনো পর্যবেক্ষণসম্মত তথ্য নেই। তাই এই পৃথিবী এবং তার প্রাণকেই একমাত্র উদাহরণ হিসেবে ধরে নেওয়া ছাড়া আর কী উপায়? কথা উঠতে পারে, সম্পূর্ণ অন্য ধরনের ধীমানসত্তা কি সম্ভব হতে পারে না? পারে হয়তো, কিন্তু আমাদের সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ হয়নি, হবে কি না, জানা যাচ্ছে না। এখন এই একটিমাত্র ডেটা পয়েন্টকে ব্যবহার করে বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া কতখানি যুক্তিসংগত, সে প্রশ্ন থেকেই যায়। সেখানেই প্রশ্ন জাগে, জীবন কি বিরল? পৃথিবীও কি বিরল? নাকি পৃথিবী ও তার জীবন একটা গড়পড়তা ঘটনা, উপযুক্ত পরিবেশ ও সময় পেলে সে আপনা থেকেই ডালপালা মেলে। এটাই কোপার্নিকান শর্ত।

কথা উঠতে পারে, সম্পূর্ণ অন্য ধরনের ধীমানসত্তা কি সম্ভব হতে পারে না? পারে হয়তো, কিন্তু আমাদের সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ হয়নি, হবে কি না, জানা যাচ্ছে না

কিন্তু এ শর্ত এখন অনেকেই মানছেন না। তবু দুই গবেষক—টম ওয়েস্টবি ও ক্রিস্টোফার কনসেলিস এ শর্তের সঙ্গে অ্যাস্ট্রোবায়োলজির শর্তও জুড়ে দিয়ে সেসবের নিরিখে ছায়াপথে ধীমান সভ্যতার সংখ্যা নিরূপণে সচেষ্ট হয়েছেন। এই জ্যোতির্জৈবনিক কোপার্নিকান শর্তানুযায়ী কোনো গ্রহে বুদ্ধির বিকাশ এবং প্রযুক্তির উদ্ভব হতে হলে সেই গ্রহকে একদম পৃথিবীর মতো হতে হবে বলে ধরে নেওয়া হয়—এটা ‘জোরালো শর্ত’, আর শুধু পৃথিবীসদৃশ হলেই চলবে, এমনটি মেনে নিলে সে শর্তকে ‘দুর্বল শর্ত’ বলা হচ্ছে। এমন শর্ত বিবেচনায় এনে তাঁরা ড্রেক সমীকরণ পুনর্বিবেচনা করে বলেছেন, এই ছায়াপথে কোনো বামন নক্ষত্রের চারপাশে ঘূর্ণমান কোনো পৃথিবীসদৃশ পাথুরে গ্রহে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন থেকে ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন বছরের মধ্যে প্রাণের উদ্ভব হতেই হবে। কেননা পৃথিবীতে এমনটাই ঘটেছে। অতএব এটা স্বাভাবিক শর্ত। অতঃপর এই প্রাণসত্তা ধীশক্তি অর্জন করবে এবং রেডিও যোগাযোগে সক্ষমতা অর্জন করবে। এদের আয়ুষ্কালও পৃথিবীর মানবসভ্যতার মতো, ১০০ বছর। এ রকম সভ্যতার সংখ্যা এই ছায়াপথে ন্যূনতম ৩৬টি হতে পারে, আর অতীব বিরল শর্ত মানলে সেটা ৮টির বেশি নয়।

এই গণনার মূলে আছে উল্লিখিত জ্যোতির্জৈবনিক কোপার্নিকান শর্ত। এই শর্ত অনুযায়ী, কোনো উপযুক্ত গ্রহে ধীমান জীবনের উদ্ভব হতে ৫০০ কোটি বছর সময় প্রয়োজন। এর আগে তা হবে না, পৃথিবীই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। এই ধীমান সভ্যতা উন্নত প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছে, রেডিও যোগাযোগ আবিষ্কার করে ফেলেছে গত ১০০ বছরে। তাই গ্রহান্তরে যোগাযোগের সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে। ‘যোগাযোগ’ করতে সক্ষম হলেও ‘যাত্রা’ করতে সক্ষম হয়নি এখনো। এটিই অ্যাস্ট্রোবায়োলজিক্যাল কোপার্নিকান লিমিট বা জ্যোতির্জৈবনিক কোপার্নিকান মাঝারিত্বের শর্ত। ফলে এই ছায়াপথের যেকোনো বামন নক্ষত্রের (বর্ণালি F, G, K, বিশেষত M) প্রাণবান্ধব অঞ্চলে (হ্যাবিটেবল জোন) যদি পৃথিবীর মতো কোনো গ্রহ থাকে, তাহলে সেখানে উৎপত্তির ৫০০ কোটি বছরের মধ্যে যোগাযোগে সক্ষম ধীমান সভ্যতার আবির্ভাব হবে (দুর্বল শর্ত অনুযায়ী); কিংবা আরও জোরের সঙ্গে বলতে গেলে ৪৫০ থেকে ৫৫০ কোটি বছরের মধ্যে তা হবেই (জোরালো শর্ত অনুযায়ী)।

আগেই বলেছি, পৃথিবী নামের গ্রহটিতে ঘটা একটিমাত্র পর্যবেক্ষিত প্রপঞ্চ থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ জৈবনিক শর্ত সৃষ্টি করা তর্কসাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু এ গবেষকদ্বয়ের বক্তব্য, হাতে যেহেতু একটি উদাহরণ রয়েছে, সেটাকে ভিত্তি করে হিসাব-নিকাশ করতে বাধা নেই, অন্তত ক্ষতি তো নেই–ই। এই যুক্তিতে বলীয়ান হয়ে ওই দুই গবেষক ড্রেক সমীকরণে একটা ছোট পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। তাঁরা সমীকরণটিকে লিখেছেন: N=N* .fL .fSP . L/τ ́ = N* .fL .fHZ .fM .L/τ ́

maxwellcitizenkepler

এখানে N হচ্ছে ছায়াপথে যোগাযোগে সক্ষম বুদ্ধিমান সভ্যতার সংখ্যা (CETI–এর সংখ্যা), N* ছায়াপথে মোট নক্ষত্রের সংখ্যা (২৫,০০০ কোটি); সেসব নক্ষত্রের মধ্যে যাদের বয়স ৫০০ কোটি বছর, সেই ভগ্নাংশ fL; এদের মধ্যে আবার যেসব তারার চারপাশের প্রাণবান্ধব অঞ্চলে একটি পৃথিবীসদৃশ উপযুক্ত গ্রহ আছে সেই ভগ্নাংশ হলো fSP; τ′ হলো প্রাণ বিকশিত হওয়ার সময়কাল (অর্থাৎ নক্ষত্রের গড় বয়স থেকে ৫০০ কোটি বছর বিয়োগ দিলে যা থাকে)। τ′ হলো ছায়াপথের কোনো নক্ষত্র ৫০০ কোটি বছরের বেশি আর কত কাল বেঁচে থাকে, তার গড় সময়কাল। L হলো ধীমান সভ্যতার আয়ুষ্কাল কিংবা সংকেত প্রেরণের ক্ষমতা অর্জনের পর ধীমান সভ্যতা যতকাল টিকে থাকতে পারে। পৃথিবীর জন্য L = ১০০ বছর এবং আমরা সেটাই ধরে নেব। পর্যবেক্ষণ ডেটা বিশ্লেষণ করে গবেষকদ্বয় দেখিয়েছেন, আমাদের ছায়াপথে প্রায় ৯৭% নক্ষত্রই ৫০০ কোটি বছরের পুরোনো (fL =০.৯৭)। তবে জোরালো শর্ত অনুযায়ী সেই সব নক্ষত্রের ভগ্নাংশ যাদের বয়স ঠিক ঠিক ৪৫০ কোটি থেকে ৫৫০ কোটি বছরের মধ্যে পড়ে, তাদের মান fL = ০.০১৫।

fSP পদটিকে fHZ এবং fM-এ বিভক্ত করে লেখা হয়েছে। fHZ (= ০.১৯) হলো সেই সংখ্যক নক্ষত্র, যাদের প্রাণবান্ধব অঞ্চলে কোনো না কোনো উপযুক্ত গোল্ডিলকস গ্রহ আছে। পর্যবেক্ষণ থেকে দেখা যায়, প্রাণের উদ্ভব থেকে ধীমানসত্তা বিকাশের জন্য ভ্রূণনক্ষত্রের আশপাশের গ্যাস ও ধূলিকণায় (প্রোটো-নীহারিকা) ভারী মৌলের উপস্থিতি কাম্য। ফলে ধাতুর প্রাচুর্য আছে, ছায়াপথের এমন অঞ্চলেই প্রাণধারণ ও বিকাশ অধিকতর সহজ। আবার ছায়াপথের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে একটা দানবীয় ব্ল্যাকহোলের উপস্থিতির কারণে সে অঞ্চল বড়ই ঝঞ্ঝাটময়। তাই সেখানে সম্ভবত ধীমান সভ্যতা থাকবে না। থাকলেও হয় তারা পর্যাপ্ত সময় পর নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, অথবা গ্রহান্তরে সরে যায়। এ ব্যাপারটি fM -এ ধরা হয়েছে যে এটা নক্ষত্রগুলোর সেই ভগ্নাংশ, যা নির্দেশ করে সেসব তারার সংখ্যা, যাদের চারপাশে জটিল জীববিদ্যার জন্য প্রয়োজনীয় ধাতব প্রাচুর্য আছে। এ ক্ষেত্রে ধরা হয়েছে fM = ০.৪৯৮২। সংখ্যাটি অবশ্য এক রকমের ‘ওয়েটেড এভারেজ’ বা ভরযুক্ত গড় অর্থাৎ একরকমের জটিল সংখ্যায়নিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ সংখ্যা আহৃত হয়েছে। কীভাবে সেটা করা হয়েছে, সেটা জানতে অবশ্য মূল প্রবন্ধটি পাঠ করতে হবে এবং ছায়াপথে নক্ষত্র-বিন্যাস এবং স্ট্যাটিসটিক্যাল মেথডের ব্যবহার জানা থাকতে হবে। তাহলে, সব একত্রে গুণন করলে পাওয়া যায়, N=২৫,০০০ কোটি ×০.০১৫ ×০.১৯ × ০.৪৯৮২ × ১০০ বছর/১০০ কোটি বছর = ৩৬!

ছায়াপথে বুদ্ধিমান সভ্যতার সম্ভাব্য সংখ্যা সম্পর্কে আমাদের ধারণা ক্রমেই সংযত হয়েছে। অনেক শাণিত হয়েছে আমাদের বিশ্লেষণ

বলে রাখা ভালো, সংখ্যাটি ন্যূনতম। অর্থাৎ কোপার্নিকান জোরালো শর্ত ধরা হয়েছে সর্বত্র। তারপর ধরা হয়েছে M-বর্ণালির কম ভারী তারার চারপাশে পর্যাপ্ত ধাতব প্রাচুর্যে ভরপুর প্রাণবান্ধব গ্রহ পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ওই শর্ত শিথিল হলে, এ সংখ্যা আরও বাড়ে (∼৯২৮)। এমনকি জোরালো শর্তের মধ্যেও যদি সবচেয়ে কঠিনতম ব্যাপারটি চিন্তা করা হয়, তবে CETI-র সংখ্যা হয় ৮টি! এখানে যে সংখ্যাগুলোর হিসাব দেখানো হয়েছে, সেগুলো নির্ধারণ করতে অনেকগুলো পর্যবেক্ষণ থেকে প্রাপ্ত ডেটার ওপর বেশ কিছু গাণিতিক ও সংখ্যায়নিক বিশ্লেষণের প্রয়োগ ঘটিয়ে তবেই তা পাওয়া গেছে। এই মানগুলো অবশ্যই গবেষকভেদে আলাদা হবে, এদের উপস্থাপন ও ব্যাখ্যা আলাদা হবে। তাই সেসব বিবেচনায় বিভিন্ন আসন্ন মানে যে অনিশ্চয়তা আছে, সেগুলো হিসাবে নিলে N-এর ঊর্ধ্বসীমা ও নিম্নসীমা পাওয়া যায়। এই গবেষক দুজন জৈবনিক কোপার্নিকান শর্তগুলোর অপেক্ষাকৃত বেশি জোরালো কিংবা দুর্বল শর্তের বিভিন্ন সমাবেশ চিন্তা করে ১২টি ক্যাটাগরিতে হিসাব করেছেন। পর্যবেক্ষণ, গাণিতিক বিশ্লেষণ, জীববিদ্যা, আসন্নীকরণ, জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যা ও গ্রহবিজ্ঞান গবেষণার অনেকগুলো বিষয় উঠে এসেছে এই ১৮ পাতার প্রবন্ধে।

আসলেই কি প্রায় তিন ডজন ধীমান সভ্যতা বিরাজ করছে এই ছায়াপথে? এনরিকো ফার্মির মতো আমরাও প্রশ্ন করতে পারি, তাহলে তারা কই? দেখি না কেন তাদের? এই গবেষকদ্বয় দেখিয়েছেন, এই ৩৬টি সভ্যতা যদি থাকেও, তবু তাদের খুঁজতে সময় লাগবে ৩ হাজার বছর। কেননা, পৃথিবীর নিকটতম এমন সভ্যতাটির ন্যূনতম দূরত্ব হতে পারে ১৭ হাজার আলোকবর্ষ। এমনটি হলে একটা সার্থক দ্বিমুখী যোগাযোগের জন্য সময় লেগে যেতে পারে ৬ হাজার বছর। তত দিন কি আমাদের সভ্যতা বাঁচবে? বিজ্ঞানীদের হিসেব মতে, ছায়াপথে তিন ডজনের মতো বুদ্ধিমান সভ্যতা থাকার কথা। তা সত্ত্বেও আমরা এখনও একাকীই রয়ে গেছি। অন্তত আগামী ৬ সহস্রাব্দ পর্যন্ত!

লেখক: অধ্যাপক, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়