দাদুকে বা নানুকে ঘিরে ধরে রূপকথার গল্পের আবদার ছোটবেলায় অনেকেই করেছে। নানা অঙ্গভঙ্গি করে রাজ্যের দৈত্যদানোর গল্প বলতেন তাঁরা, আর মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনত শিশুরা। রূপকথার চমকপ্রদ ভুবনে যে বিচরণ করেনি, তার তো শৈশবের আট আনাই যেন মিছে। তবে কাল্পনিক হলেও এসব গল্পের কোনো না কোনো বাস্তব ভিত্তি থাকে। মানুষ কোনো না কোনো বাস্তব ঘটনাকে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য এসব রূপকথা আর উপকথার অবতারণা করে। প্রতিদিন সূর্য কেন পূর্ব দিকে ওঠে আর পশ্চিম দিকে অস্ত যায়, প্রতিবছর শীতের পর গ্রীষ্ম কেন আসে, বিশেষ একটা ঋতুতে ঝাঁকে ঝাঁকে ফুল কেন ফোটে, আকাশের তারাগুলো কেন ঝুলে আছে ইত্যাদি ঘটনার কাল্পনিক ব্যাখ্যা বিভিন্ন উপকথায় দেখা যায়।
এক দেবতা আকাশলোকে ভুল করে কিছু জ্বালানি ফেলে দিয়েছিলেন। সেই জ্বালানি জ্বলে উঠে সূর্য তৈরি করেছে। আরেক দেবতা পশ্চিম দিক থেকে তাঁর হাতের গুলতি ছুড়ে সূর্যকে নামিয়ে ফেলেছেন বলে সেখানেই অস্ত যায় প্রতিদিন। মর্ত্যের এক দেবী বসন্ত নিয়ে আসেন বলে সে সময় ফোটে অনেক অনেক ফুল। এক দেবতা তাঁর কাঁধে তারাগুলোকে ধরে রেখেছেন বলে সেগুলো আটকে আছে আকাশে, আছড়ে পড়ছে না আমাদের ওপর। গল্পগুলো কাল্পনিক, নিখাদ রূপকথা, কিন্তু তার পেছনের কারণগুলো বাস্তব।
তখনকার সময়ে বিজ্ঞান ছিল না, বেশির ভাগ ঘটনার বাস্তবিক ব্যাখ্যা মানুষ জানত না, তাই নিজেদের মতো করে ব্যাখ্যা বানিয়ে নিয়েছে সময়ে সময়ে। সেসব ব্যাখ্যাই আজকের যুগে উপকথা হয়ে বেঁচে আছে। কিন্তু জাগতিক নানা বিষয়ে পুরাণ রূপকথা–উপকথা থাকলেও বহির্বিশ্বের বুদ্ধিমান প্রাণ তথা এলিয়েন নিয়ে তেমন কোনো রূপকথা নেই। না থাকাটাই স্বাভাবিক। কারণ, পৃথিবীর বাইরেও যে পৃথিবীর চেয়ে কোটি কোটি গুণ বেশি বড় আলাদা এক জগৎ আছে, এটি সম্বন্ধে জানতই না মানুষ। ভাবনাতেই আসার কথা নয়। আকাশকে তারা শুধু তারা দিয়ে আঁকা বর্ণিল চাদর বলেই মনে করেছে। তাই এলিয়েন নিয়ে গ্রিক পুরাণ কিংবা ভারতীয় পুরাণের মতো তেমন প্রাচীন কোনো উপকথা পাওয়া যায় না।
তবে প্রাচীন উপকথা পাওয়া না গেলেও আধুনিক উপকথা ঠিকই পাওয়া যায়। এলিয়েন বা ইউএফও সম্বন্ধে মানুষ যখন জানল, তখন তাদের ব্যাখ্যা করতে নানা কাহিনির জন্ম দিয়ে দিল। যারা এসব কাহিনির জন্ম দিয়েছে, তারা শিক্ষিত ও শহুরে নাগরিক। (বহির্বিশ্বের বুদ্ধিমান প্রাণকে ‘এলিয়েন’ বলা হয় এবং এসব এলিয়েন যেসব মহাকাশযানে করে ঘুরে বেড়ায়, তাদের পৃথিবীবাসী ‘ইউএফ’ বলে থাকে।) মনগড়া ব্যাখ্যার পাশাপাশি তাদের ঘিরে নানা ধরনের কাহিনিরও জন্ম দিয়ে দেয় পৃথিবীবাসীরা।
১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ঘটনা। ‘হেভেন্স গেট’ নামে এক সম্প্রদায়ের ৩৯ জন সদস্য বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। তারা বিশ্বাস করেছিল, বহির্বিশ্বের কোনো এক ইউএফও তাদের সবার আত্মা অন্য একটি গ্রহে নিয়ে যাবে। এ জন্য পৃথিবীর জীবন শেষ করতে হবে। তাই তাদের এই আত্মহত্যা। সে সময় পৃথিবী থেকে একটি বেশ উজ্জ্বল একটা ধূমকেতু দেখা দেয়। আত্মহত্যাকারীরা মনে করে, এর পাশে কোনো ইউএফও আছে বলে এমন উজ্জ্বল দেখাচ্ছে একে। এই ধারণা তাদের দিয়েছিল, সেই সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক গুরু।
ধূমকেতুটিকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি টেলিস্কোপও কিনেছিল আত্মঘাতী সম্প্রদায়টি। কিন্তু পরে সেটা দোকানে ফেরত দিয়ে আসে। তারা অভিযোগ করে, টেলিস্কোপটি ভালো নয়, ঠিকঠাকমতো কাজ করে না। এ ধারণার কারণ, তারা টেলিস্কোপে চোখ লাগিয়ে কোনো ইউএফও দেখতে পায়নি। যারা এলিয়েন দেখার দাবি করে বা এ নিয়ে অদ্ভুত কাণ্ড ঘটায়, তাদের সবার মধ্যে একটা মিল দেখা যায়। তারা প্রায় সবাই সায়েন্স ফিকশনের ভক্ত। আত্মঘাতী ওই সম্প্রদায়ের সদস্যরা সায়েন্স ফিকশন ‘স্টার ট্রেক’ সিরিজের গভীরভাবে আচ্ছন্ন ছিল।
ভিনগ্রহের প্রাণী নিয়ে হাজার হাজার সায়েন্স ফিকশন লেখা হয়েছে, সিনেমা তৈরি হয়েছে, টিভি সিরিজের সংখ্যাও কম নয়। সায়েন্স ফিকশন মানেই যে কল্পনার ফানুস উড়িয়ে তৈরি এক অদ্ভুত কল্পজগৎ, এগুলো যাঁরা পড়েন, তাঁরা যেমন জানেন; যাঁরা এগুলো লেখেন, তাঁরাও জানেন।
এরপরও অনেকে ধারণা করে এবং মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে, এলিয়েনদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে তাদের দেখা হয়েছে। তাদের কেউ কেউ দাবি করে এলিয়েনরা তাদের অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল। অনেকে অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তাদের বিশ্বাস অনড়। নিজের দাবিকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তারা উদ্ভট যুক্তি দেয়, সাক্ষীরও অভাব হয় না।
মার্কিনদের অনেকেই বিশ্বাস করে তাদের ধরে নিয়ে গিয়েছিল এলিয়েনরা। সেসব প্রাণী অতি বুদ্ধিমান, তাদের প্রযুক্তিও মানুষের চেয়ে এগিয়ে। সেসব এলিয়েন দেখতে কেমন ছিল, তার বর্ণনাও পাওয়া যায় তাদের কাছে। বেশির ভাগই দাবি করে, অপহরণকারী এলিয়েনদের গায়ের রং নীল, মস্তিষ্ক (মাথা) বেশ বড়, চোখগুলো বড় বড়। এলিয়েন নিয়ে এ ধরনের কাহিনিগুলো যদি একত্র করা হয়, তাহলে তা অনেক রংচঙে ও রসাল আকার ধারণ করবে। এই কাহিনিগুলো হারিয়ে দেবে গ্রিক পুরাণ, মিসরীয় পুরাণ, নর্স পুরাণকেও।
তবে আশার কথা হচ্ছে, এলিয়েনের উপকথাগুলো সাম্প্রতিক। কেউ এই ব্যাপারে আগ্রহী হলে তাদের নিয়ে গবেষণা করতে পারে এবং অনুসন্ধান করে দেখতে পারে, আসলেই এর পেছনের কারণ কী ছিল। কেউ চাইলে এসব ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে তাদের অপহরণ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনেও নিতে পারবে।
কেউ যদি এ কাজটি করতে যায়, তাহলে দেখতে পাবে, একদমই সুস্থ ও স্বাভাবিক মস্তিষ্কের মানুষ এ রকম দাবিগুলো করছে। তারা নিখুঁতভাবে বর্ণনা দেবে ইউএফওর ভেতরে কীভাবে তাদের নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছিল, কীভাবে তাদের শরীর কেটে-ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল, কীভাবে এলিয়েনরা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলছিল, তার সবই।
সুসান ক্ল্যানসি নামের একজন মনোবিজ্ঞানী এ রকম মানুষদের নিয়ে অনেক গবেষণা করেছিলেন। এলিয়েন তাদের ধরে নিয়ে গিয়েছিল, এ রকম দাবিদার মানুষের অনেকেরই ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার পরিষ্কার স্মৃতি মনে নেই। কারও কারও বেলায় অল্পস্বল্প আছে, আর কারও কারও বেলায় একদমই নেই। সুসান ক্ল্যানসি দেখেছেন, অপহরণের স্মৃতি যাদের তেমন মনে নেই, তারা প্রায় সবাই দাবি করছে, এলিয়েনরা তাদের কোনো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার শরীরে করা এক্সপেরিমেন্ট–সংক্রান্ত সব স্মৃতি মুছে দিয়েছে। মাঝেমধ্যে এ রকম রোগীদের সম্মোহনবিদ বা সাইকোথেরাপিস্টের কাছেও যেতে দেখা যায়। তাদের ধারণা, উপযুক্ত থেরাপি বা সম্মোহনের মাধ্যমে তারা তাদের হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে পারবে।
হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি পুনরুদ্ধার করার ব্যাপারটি একদমই ভিন্ন তল্লাটের গল্প। কেউ যদি কোনো একটি কাল্পনিক বিষয় নিয়ে খুব বেশি মগ্ন থাকে, তাহলে মাঝেমধ্যে মনে হতে পারে, কাল্পনিক কোনো কিছু বুঝি আসলেই তার জীবনে হয়েছিল। তেমনই সায়েন্স ফিকশন নিয়ে কেউ যদি রাত-দিন মত্ত থাকে, তাহলে ক্ষেত্রবিশেষে মনে হতে পারে সায়েন্স ফিকশনের কোনো কোনো ঘটনা তার জীবনেও ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে এগুলোকে বলা যায় মিথ্যা স্মৃতি বা False memories।
এখনকার চিকিৎসাপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বাইরে থেকে এ ধরনের মিথ্যা স্মৃতি মানুষের মস্তিষ্কে প্রবেশ করানো সম্ভব। জীবনে সত্যি সত্যি ঘটে যাওয়া স্মৃতি থেকে এটি একদমই আলাদা। তাই কেউ যদি সম্মোহনবিদ বা সাইকোথেরাপিস্টের কাছে যায় স্মৃতি উদ্ধারের জন্য, তাহলে তারা বড়জোর মিথ্যা স্মৃতি দিতে পারবে, সত্যিকার ঘটে যাওয়া স্মৃতি উদ্ধার করতে পারবে না।
কিছু মানুষ কেন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে তাদের এলিয়েন অপহরণ করেছিল, তা মিথ্যা স্মৃতি সিনড্রোমের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। এ ধরনের ব্যক্তিরা স্টার ট্রেক বা স্টার ওয়ার্স ধাঁচের সায়েন্স ফিকশন চলচ্চিত্রে অনেক বেশি মত্ত থাকে। তাদের সমসাময়িক সায়েন্স ফিকশনে যে যে ঘটনা ঘটে, তারাও সে রকম অভিজ্ঞতাই পায় এলিয়েনদের কাছ থেকে। তারা যে যে ঘটনার দাবি করে, সেগুলোর অধিকাংশই টেলিভিশনে প্রচারিত কোনো নাটক বা চলচ্চিত্রের সঙ্গে মিলে যায়।
স্লিপ প্যারালাইলিস বা ঘুমজড়তা নামে আরও একটি ব্যাপার আছে। কেউ ঘুমজড়তায় পড়লে শরীরের কোনো অঙ্গ নাড়াচাড়া করতে পারে না। কেউ যখন স্বপ্ন দেখে বা ঘুমায়, তখন ক্ষণস্থায়ীভাবে তার শরীর স্থবির হয়ে যায়। স্বপ্নে বা ঘুমে প্রয়োজন পড়লে অনেক কষ্ট করেও হাত-পা নাড়ানো যায় না কিংবা চিৎকারও দেওয়া যায় না। অনেকেরই এমন হয়। ঘুম যখন ভাঙে, তখন জড়তা চলে যায় এবং শরীর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে শরীর স্বাভাবিক হতে সামান্য সময় লাগে। এ অবস্থায় সে জাগ্রত আছে এবং আশপাশের সবকিছু দেখতে পাচ্ছে, কিন্তু তার কোনো অঙ্গ নাড়াতে পারছে না। ব্যাপারটা একদিক থেকে ঝুঁকির, কারণ এই সময়টায় অনেকে কাল্পনিক ভ্রান্তি বা হ্যালুসিনেশনে ভোগে।
সায়েন্স ফিকশনে আচ্ছন্ন কোনো লোক যদি এই পরিস্থিতিতে পড়ে, তাহলে সে ভাববে, বুদ্ধিমান কোনো প্রাণী তাকে হাত–পায়ে বেঁধে রেখেছে যেন নাড়াচাড়া করতে না পারে, তাকে নিয়ে বুঝি ভয়ংকর সব পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এটা বেশ খারাপ ভ্রান্তি। কল্পনা বা স্বপ্ন হলেও তা কোনো কারণে মনে গেঁথে যায়। একপর্যায়ে তারা এটাকে বাস্তব বলে ধরে নেয় এবং এর স্মৃতিকে সত্যিকার স্মৃতি বলে মনে করে।
একটা ব্যাপার এখানে উল্লেখযোগ্য, সায়েন্স ফিকশনের গল্পগুলো জনপ্রিয় হওয়ার আগেও এ ধরনের সমস্যা ছিল। তখনকার সময়ে যারা এ রকম সমস্যায় পড়ত, তারাও মিথ্যা স্মৃতিকে সত্য বলে মনে করত। তবে সেগুলো এলিয়েনকে নিয়ে নয়, ভূত–প্রেত-পিশাচ বা অশুভ মৃত আত্মাকে নিয়ে। আজকালকার যুগের হরর সিনেমাগুলো যেমন হয়, অনেকটা তেমন। তারা মানুষের কাছে বর্ণনা করত, একটি মায়া নেকড়ে বা একজন রক্তচোষা মানুষ এসে তাদের ঘাড়ে কামড় দিয়ে রক্ত চুষে খেয়ে গেছে। কেউ কেউ আবার দাবি করত ডানাওয়ালা অনিন্দ্য সুন্দরী পরি এসে তাদের সঙ্গ দিয়ে গেছে।
আরও একটি ক্ষতিকর ব্যাপার হচ্ছে ভুক্তভোগীর পরিবার ও বন্ধুবান্ধব। কেউ যখন ভাসা–ভাসা স্মৃতি নিয়ে এলিয়েনদের কথা উপস্থাপন করে, তখন পরিবারের সদস্য বা বন্ধুবান্ধব একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকে। এলিয়েনের উচ্চতা কেমন ছিল, গায়ের রং কেমন ছিল, চোখ কয়টা ছিল, নাক আছে কি না, মাথায় চুল আছে কি না, এরা কি দেখতে মুভি-সিনেমার এলিয়েনের মতো ইত্যাদি ইত্যাদি। কৌতূহলের কোনো শেষ নেই। এমন প্রশ্নবাণে পড়ে তারা তাদের বিশ্বাসের সঙ্গে কল্পনা মিশিয়ে ব্যাপারটাকে আরও ঘোলাটে করে ফেলে। এ রকম উল্টাপাল্টা প্রশ্নের কারণেও ব্যক্তির মস্তিষ্কে মিথ্যা স্মৃতি প্রবেশ করতে পারে এবং তা স্থায়ী হয়ে যেতে পারে।
১৯৯২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এক জরিপ থেকে দেখা যায়, দেশটির প্রায় চার মিলিয়ন মানুষ মনে করে, বহির্জাগতিক কোনো বুদ্ধিমান এলিয়েন তাদের অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশে এ রকম হাইটেক-ফ্যান্টাসিগুলো খুব একটা জনপ্রিয় নয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের মতো এ রকম ঘটনা খুব বেশি দেখা যায় না। তারপরও খোঁজ করলে অল্পবিস্তর ঠিকই পাওয়া যায়। জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ তাঁর এক স্মৃতিকথায় এ রকম একটি ঘটনার কথা বলেছিলেন। তাঁর লেখা কোনো একটি সায়েন্স ফিকশন পড়ে এক মেয়ে দাবি করছে সে একই সঙ্গে দুই জগতে বসবাস করছে।
আশা করি আলোচনা থেকে আমরা পরিষ্কার হতে পেরেছি, কেন মানুষ ভুলভাবে মনে করে তাদের এলিয়েনরা ধরে নিয়ে গিয়েছিল কিংবা কেন মানুষ মনে করত ভ্যাম্পায়াররা তাদের ঘাড় থেকে রক্ত চুষে খেয়ে নিয়েছে। এখন পর্যন্ত এমন কোনো তথ্য বা প্রমাণ নেই যে পৃথিবীতে এলিয়েন এসেছিল কিংবা পৃথিবীর বাইরে এলিয়েনের অস্তিত্ব আছে। এলিয়েনের পাশাপাশি ভূত বা অশুভ আত্মার অস্তিত্ব সম্পর্কেও কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই।
তারপরও প্রশ্ন থেকে যায়। পৃথিবীর বাইরে অন্যান্য নক্ষত্র বা গ্যালাক্সিতে অনেক অনেক বাসযোগ্য গ্রহ আছে এবং এগুলোর মধ্যে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা একদমই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তারা এখনো পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি কিংবা তাদের আমরা এখনো দেখিনি বলে তার মানে এই নয় যে তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। এমনও হতে পারে যে তারা ঠিকই আছে, কিন্তু আমাদের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা তাদের দেখতে বা শনাক্ত করতে পারছি না।
সূত্র: ব্রিটানিকা, বিজায়ারপিডিয়া, দ্য ম্যাজিক অব রিয়েলিটি, স্মিথসোনিয়ান