যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচিত ন্যাশনাল এআই লিডার মনোনীত হলেন বাংলাদেশের সৈয়দ বাহাউদ্দিন আলম

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল এআই লিডার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন বাংলাদেশি প্রযুক্তিবিদ সৈয়দ বাহাউদ্দিন আলম। হোয়াইট হাউসের মার্কিন জাতীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কর্মপরিকল্পনা ২০২৫-এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে মনোনীত করা হয় তাঁকে। সৈয়দ বাহাউদ্দিন আলম বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেঞ্জার কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নিউক্লিয়ার, প্লাজমা ও রেডিওলজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সারাবিশ্বে এআই প্রযুক্তিতে নিজেদের আধিপত্য নিশ্চিত করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করছে ট্রাম্প প্রসাশন। সে জন্য মার্কিন সরকার তথা হোয়াইট হাউস জাতীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কর্মপরিকল্পনা ২০২৫ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের অধীনের বেসামরিক ও বেসরকারি (অর্থাৎ সরকারি কোনো কাজে যুক্ত নন, এমন) অধ্যাপক ও বিশেষজ্ঞদের যুক্ত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে সরকার। এই বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যতের এআই নীতিমালা তৈরির জন্য বিভিন্ন প্রস্তাব ও পরামর্শ দেবেন, সরকারকে পথ দেখাবেন।

ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় হোয়াইট হাউসের এই অনুরোধে সাড়া দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, তাঁরা পাঁচ এআই বিশেষজ্ঞের কথা প্রস্তাব করেছেন। এই পাঁচ এআই বিশেষজ্ঞের একজন সৈয়দ বাহাউদ্দিন আলম। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় এআই নীতিমালা তৈরিতে সরাসরি অবদান রাখবেন। এই বিশেষজ্ঞ তালিকায় আরও আছেন ন্যান্সি আমাতো, বিল গ্রোপ, ক্লারা নাহারস্টেড এবং অনিতা নিকোলিচের মতো অভিজ্ঞ প্রযুক্তিবিদ। তাঁদেরকে ‘এআই লিডার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

গবেষণার পাশাপাশি এআই এবং এ প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে বাহাউদ্দিন আলমের কাজ প্রশংসিত হয়েছে। ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর সুসান মার্টিনিস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি পলিসি অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন, সেখানে তিনি বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘সৈয়দ বাহাউদ্দিন আলম ইতিমধ্যেই এআই নীতি ও দিকনির্দেশনা তৈরিতে কাজ করছেন।’

এই কমিটিতে তিনি সারা দেশের মোট ১১ সদস্যের একজন। কমিটির প্রধান কাজ হলো যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বিভাগকে পরামর্শ দেওয়া, কীভাবে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্ভাবনে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা যায়।

নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সৈয়দ বাহাউদ্দিন আলম জানিয়েছেন, ‘ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এমন এক স্বীকৃতি একেবারেই আশা করিনি। হোয়াইট হাউসের মার্কিন জাতীয় এআই কর্ম পরিকল্পনা ২০২৫-এর জাতীয় এআই লিডার হিসেবে (ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্বাচিত) পাঁচজনের একজন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে নিজেকে সম্মানিত মনে করছি। এই অসাধারণ সম্মান আমার পরিবার, শিক্ষার্থী, পরামর্শদাতা এবং সহকর্মীদের উৎসর্গ করছি। এই স্বীকৃতি আপনাদের।’

চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে সৈয়দ বাহাউদ্দিন আলম আরেকটি পোস্টে জানান, তিনি ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেডিসিনের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সম্মানজনক বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা সংস্থা। এই সংস্থা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেয়।

এই কমিটিতে তিনি সারা দেশের মোট ১১ সদস্যের একজন। কমিটির প্রধান কাজ হলো যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বিভাগকে পরামর্শ দেওয়া, কীভাবে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্ভাবনে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা যায়। সৈয়দ বাহাউদ্দিন আলম জানান, ‘তিনি তাঁদের নিউক্লিয়ার ডিপার্টমেন্টের ইতিহাসে দ্বিতীয় প্রফেসর, যিনি ন্যাশনাল একাডেমির কোনো কমিটিতে যুক্ত। এই কমিটিতে তাঁর সঙ্গে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ইউনিভার্সিটি অব হার্ভার্ড, ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া এবং ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়াসহ আরও কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা।