কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি আমাদের ভাবনার চেয়ে ভয়ংকর

প্রশ্ন: স্পেসএক্স ও টেসলার সিইও ইলন মাস্ক বলেছিলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের ভাবনার চেয়ে বেশি ভয়ংকর।’ তাঁর এ কথায় কি আমাদের ভয় পাওয়া উচিত?

সরদার রুবাইয়াৎ করিম, ঠিকানাবিহীন

উত্তর: ভয় পাওয়া উচিত, এ কথা বলব না। তবে হ্যাঁ, এ নিয়ে চিন্তার এবং আরও সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন আছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভয়ংকর হতে পারে। ডেটাসেট থেকে তথ্য নিয়ে এআই লেখালেখি থেকে শুরু করে ছবি আঁকা, অডিও সিনথেসিস করা, এমনকি ভিডিও এডিটিংও করতে পারে। নিজের মতো আরও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও জন্ম দিতে পারে জেনারেটিভ এআই। তবে এগুলোর নিয়ন্ত্রণ এখনো আমাদের হাতে। ওপেনএআই যদি চায়, এখনই চ্যাটজিপিটি বা ডাল.ই-এর মতো এআইকে বন্ধ করে দিতে পারবে। তাই এগুলো সেন্টিয়েন্ট বা নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন হয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার ভয় নেই। তা ছাড়া এগুলো তাদের ট্রেনিং ডেটাসেট ছাড়া অচল। আমরা এআইকে শেখার জন্য যে তথ্য দেব, এআই সে বিষয়েই পারদর্শী হতে পারবে। তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয় নেই।

তবে এখানে চিন্তার বিষয় হলো, কীভাবে এই এআই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ও কাজে প্রভাব ফেলছে বা ফেলবে। একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যদি একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের চেয়ে কম সময়ে, কম খরচে আরও ভালো ডিজাইন করতে পারে, তবে ধীরে ধীরে সেই ডিজাইনারদের কাজের সুযোগ কমে যাবে। একসময় হয়তো চাকরিও হারাবে সেই ডিজাইনার। এটা সব চাকরির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ভয় পেয়ে এর থেকে দূরে সরে গেলে চলবে না। উল্টো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করে নিজের কাজ কীভাবে আরও ভালো করে তোলা যায়, সেটা নিয়ে ভাবতে হবে।

তা ছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ ঠেকাতে ট্রেনিং ডেটাসেটে আমরা কী দিচ্ছি, সেটাও চিন্তা করতে হবে। ইতিমধ্যেই এআইয়ের অনেক ধরনের অপপ্রয়োগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে কলুষিত করেছে। তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কী কী শেখানো যাবে, কী কী করতে দেওয়া যাবে এবং কাদের এর ব্যবহার করতে দেওয়া হবে, এসব বিষয়েও সতর্ক হতে হবে। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভালো ব্যবহারও দেখা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোতে তৈরি হচ্ছে চাকরির সুযোগ। তাই নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারলে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।

উত্তর দিয়েছেন রিফাত আহমেদ, ব্যবস্থাপক, ডেফ্টাইল্ড, বাংলাদেশ

*লেখাটি বিজ্ঞানচিন্তার ডিসেম্বর ২০২৩ সংখ্যায় প্রকাশিত