‘টেকনোলজিক্যাল সিঙ্গুলারিটি’ কথাটার অর্থ কী? এআই কি তখন মানুষের চেয়েও বুদ্ধিমান হয়ে উঠবে? কেমন হবে সেই সময়টা? পাঠকদের জন্য সহজ করে বলুন।
মইনুল হোসেন: টেকনোলজিক্যাল সিঙ্গুলারিটি দিয়ে এমন এক সম্ভাব্য অবস্থা বা সময়ের কথা বোঝানো হয়, যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এত বিকশিত হবে যে সেটি মানুষের বুদ্ধিমত্তাকেও ছাড়িয়ে যাবে। তবে ব্যাপারটা এত সহজ নয়। মানুষের বুদ্ধিমত্তা অতি উন্নত পর্যায়ের এবং সেটি এমন এমন চিন্তা করতে বা সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যন্ত্রকে শত শেখানো হলেও এখনো পর্যন্ত যন্ত্র সে পর্যায় থেকে অনেক দূরে। কিছু কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে মেশিন বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খুব ভালো ফল দিচ্ছে। তার মানে এই নয় যে মেশিন বুদ্ধিমান মানুষকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
টেকনোলজিক্যাল সিঙ্গুলারিটি ধারণায় যন্ত্র নিজেই নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করতে পারবে, নিজেই নিজের অধিকতর নির্ভুল উন্নত সংস্করণ তৈরি করতে পারবে। সেটি যদি আসলেও করা সম্ভব হয়, মানুষের যে জিনিস শিখতে অনেক বেশি সময় লাগে, সেটি যদি মেশিন দ্রুত শিখে ফেলতে পারে, সে ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে। ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে সেটি সম্ভাবনা ও ঝুঁকি—দুটি দিক নিয়ে উপস্থিত হবে।
এটা কি বাস্তবে সম্ভব? নাকি শুধুই দূর কল্পনা?
মইনুল হোসেন: আসলে অনেক কিছুই আমাদের কাছে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে উপস্থাপন করা হয়। একটু চিন্তা করলে দেখা যাবে, ক্ষেত্রবিশেষে যন্ত্র বা মেশিন ইতিমধ্যে মানুষের চেয়ে এগিয়ে। এটা পৃথিবীতে নতুন কিছু নয়। ১৫ অঙ্কের দুটি সংখ্যার গুণফল বের করতে মানুষের কয়েক মিনিট লেগে যায়, অথচ এ রকম কয়েক হাজার গুণ করতে যন্ত্রের কয়েক সেকেন্ডও লাগে না। সাধারণ মানের একটি ক্যালকুলেটরও মানুষের চেয়ে অনেক দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করবে। এখন এটিকে কি ক্যালকুলেটরের মানুষের চেয়ে এগিয়ে যাওয়া বলব? নাকি বোকা ইলেকট্রনিক যন্ত্রের বিদ্যুতের বেগে কাজ সম্পন্ন করা বলব? অতএব, এটি যেমন একেবারে অলীক কল্পনা নয়, তেমনি আবার যেভাবে অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করা হয়, ততটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ের কিছুও নয়। অন্তত এখনো সে পর্যায়ে যায়নি।
আপনার কী মনে হয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি সত্যিই কোনো দিন পৃথিবী দখল করে নেবে?
মইনুল হোসেন: পৃথিবী দখল করা, মুক্তি দেওয়া—সবকিছু করে মানুষ। যন্ত্র মানুষের হাতিয়ারমাত্র। বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে মানবসভ্যতা এই পর্যায়ে এসেছে। ভবিষ্যতে কী হবে, তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে। আমার মনে হয় না কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোনো দিন পৃথিবী দখল করে নেবে। আমার কাছে বরং প্রশ্নটাই অসংগতিপূর্ণ মনে হয়। তা ছাড়া যন্ত্র বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে যদি কিছু দখল করানোর কাজে ব্যবহার করা হয়, সে দায়ভারও মানুষের—মানুষই সেভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে তৈরি করেছে। এখন আপাতকাল্পনিক যে প্রশ্নটা মনে আসে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিজে নিজে উন্নতি করতে পারলে এবং মানুষের কথা না শুনলে কী হবে? সত্যি বলতে, সেটি নিয়ে অর্থবহ ধারণা করার সময় এখনো আসেনি।
এখন এআই নিজে থেকে ছবি বানাচ্ছে, গান লিখছে, ভিডিও তৈরি করে দিচ্ছে। এগুলো কীভাবে করছে, একটু সহজ করে বলবেন?
মইনুল হোসেন: মানুষ কীভাবে এ কাজগুলো করে, সেটি একটু আগে চিন্তা করা যাক। জন্মগ্রহণ করেই কেউ কবিতা লিখতে বা ছবি আঁকতে পারে না। কবিতা লেখার জন্য আগে অনেক কবিতা পড়তে হয়। এরপর মানুষ মনের মধ্যে একটা ধারণা তৈরি করে, ঠিক কী জিনিস থাকলে একটি লেখাকে কবিতা বলা যাবে। একইভাবে আর্টিস্টদের ছবি না দেখে বা না প্র্যাকটিস করে, কেউ একজন সুন্দর ছবি এঁকে ফেলতে পারবে না। অনেক আর্ট দেখার পর বা প্র্যাকটিস করতে করতে মানুষ মনের ভেতর একটা নিয়ম বানিয়ে নেয়। এই যে কোনো কিছু সৃষ্টি করার জন্য মনের ভেতর তৈরি করা ধারণা বা নিয়ম, সেগুলো হলো প্যাটার্ন।
এআই মডেলগুলো অসংখ্য ছবি, গান, কবিতা গল্প, রচনা, গদ্য ইনপুট দিয়ে প্রথমে প্রশিক্ষিত করা হয়। সে ইনপুট থেকে এআই মডেল গাণিতিক একটা প্যাটার্ন বের করে নিয়ে আসে। প্যাটার্ন বের হয়ে গেলে সেটি অনুসরণ করে লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি তৈরি করে। যেমন সে হয়তো নিয়ম বের করে নিতে পারে যে কবিতা হতে হলে লাইনের পর লাইন সাজাতে হয়, প্রতি লাইনে শব্দ বা অক্ষর প্রায় সমান থাকতে হয়। কোন শব্দের পর কোন শব্দ আসার সম্ভাবনা বেশি, সেটি বিশ্লেষণ করে শব্দের পর শব্দ নিয়ে আসা, মূল শব্দ না দিয়ে পরিস্থিতি অনুযায়ী সমার্থক শব্দ দেওয়া ইত্যাদি ধাপ অনুসরণ করে এআই মডেল একটি নতুন কবিতা তৈরি করতে পারে। এর জন্য বেশ কিছু প্রযুক্তি আছে। মূল ধারণা প্যাটার্ন হলেও আগে-পরে আরও বেশ কিছু কাজ থাকে, পদ্ধতিগতভাবে ভিন্ন বেশ কিছু প্রযুক্তিও আছে।
তাত্ত্বিক আলোচনার পর এবার একটু আমাদের দেশের পটভূমিতে বাস্তব পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে চাই। শহরাঞ্চলের বাইরে কম্পিউটার বা প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা খুব বেশি নেই। এআইয়ের এই যুগে সব মিলিয়ে আমাদের কতটা সুযোগ বা সম্ভাবনা দেখেন?
মইনুল হোসেন: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অন্য অনেক শাখার তুলনায় এখানে তুলনামূলকভাবে বেশি সুযোগ দেখি। বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে হলে ল্যাবরেটরি প্রয়োজন হয়। নিয়মিত ভিত্তিতে বিভিন্ন সাজসরঞ্জাম কিনতে হয়। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উল্লেখযোগ্য অংশ একটি কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ হলেই করে ফেলা সম্ভব। গ্রাম-শহর আলাদা করে দেখার সুযোগও কমে আসছে। আমরা বিভিন্ন অলিম্পিয়াড আয়োজন করতে গিয়ে দেখি, শহরের বাইরে থেকে অনেকেই ভালো করছে।
এ ব্যাপারে আমরা কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারি?
মইনুল হোসেন: মাথায় রাখতে হবে, কোনো পরিকল্পনা থেকে যেন প্রান্তিক অঞ্চল বাদ না পড়ে যায়। উপযুক্ত প্রশিক্ষকের যে অভাব ছিল, সেটিও অনেকাংশে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বিভিন্ন অনলাইন টিউটোরিয়াল, ভিডিও, লেকচার ইত্যাদি দেখে। হ্যাঁ, অবশ্যই কিছু জায়গায় এখনো ডিজিটাল বিভাজনটা ভালোভাবেই আছে। কিন্তু সেটি এক দিনে দূর হবে না। সেটিকে উপলক্ষ করে থেমে থাকার সুযোগও নেই। কিছুটা বেগ পেতে হলেও যা আছে, সেটিই কাজ চালিয়ে নেওয়ার মতো। যা নেই, সেই অভাব পূরণের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক এআই অলিম্পিয়াডে অংশ নিচ্ছে, ভালো করছে। কিন্তু এখন তো এই আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াড কেবল শুরু হলো। আমাদের কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের কারিকুলাম কতটা আধুনিক প্রযুক্তিবান্ধব? আমরা কি পাঁচ বছর পর অন্য দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগোতে পারব?
মইনুল হোসেন: প্রথম এআই অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করেই বাংলাদেশ বেশ ভালো ফল অর্জন করেছে। মাত্র দু-তিনটা দলের সব সদস্যই কোনো না কোনো মেডেল অর্জন করেছে। বাংলাদেশ তাদের মধ্যে একটি। আমাদের দল দুটি সিলভার ও দুটি ব্রোঞ্জপদক অর্জন করে।
দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসংশ্লিষ্ট কিছু না কিছু কোর্স বা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কোথাও কোথাও নেই, সেগুলোতেও এ বিষয় সংযুক্ত হওয়ার পর্যায়ে আছে। গবেষণার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসংশ্লিষ্ট প্রকাশনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এটি ভালো লক্ষণ। তবে স্কুল-কলেজ পর্যায়ে কারিকুলাম, অবকাঠামো, পাঠদান ইত্যাদিতে ঘাটতি আছে। বিষয়সংশ্লিষ্ট শিক্ষকও অপ্রতুল।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় ভালো করতে হলে স্কুল থেকেই ভিত্তি তৈরি করতে হবে। এককথায় বললে, এখনকার যে অবস্থা আছে, তাতে ৫-১০ বছর পর অন্য দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগোতে পারব না আমরা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের বাজেট বরাদ্দ করছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তো দূরে থাক, আমাদের গোটা শিক্ষা খাতের বাজেটেই আছে ঘাটতি। গাছের গোড়া কেটে আগায় যত পানি ঢালি, লাভ হবে না। মনোযোগ দিতে হবে স্কুল পর্যায়ের শিক্ষায়। সমস্যাগুলো কোথায়, আমরা সেটিও জানি। কিন্তু সমাধানটা হচ্ছে না।
উদাহরণ হিসেবে বলা চলে, এসব প্রযুক্তিতে ভালো করতে হলে গণিতের ভিত্তি হতে হয় মজবুত। কিন্তু প্রাথমিক কিংবা মাধ্যমিকে আমাদের কয়টা স্কুলে গণিতের ভালো শিক্ষক আছে? একটু ভালো করতে চাইলে আবার আলাদা করে কোচিং করতে হয়। তাহলে শিক্ষার্থীদের এক বিশালসংখ্যক অংশ, যাদের আলাদা করে কোচিং করার সামর্থ্য নেই, তারা কী করে শিখবে? ফলে আমরা শুধু প্রযুক্তির ব্যবহারকারী হয়ে গড়ে উঠছি, প্রযুক্তি তৈরি করতে পারছি না।
যারা এআই অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে চায়, ভালো করতে চায়, তাদের উদ্দেশে আপনার পরামর্শ কী?
মইনুল হোসেন: শুধু এআই অলিম্পিয়াডই নয়, যেকোনো অলিম্পিয়াডে ভালো করার কোনো শর্টকাট নেই। ভালো করার উপায় একটাই, পরিশ্রম করা। আমি শুধু এতটুকুই বলতে পারি। এআই ভালো করে শিখতে জানতে পারলে, ভবিষ্যতে যে শুধু ভালো অবস্থায় থাকা যাবে তা নয়, এটি পড়াশোনার এমন এক শাখা, যেটি একই সঙ্গে আনন্দদায়ক এবং উদ্ভাবনী চিন্তার বিকাশের অন্যতম এক মাধ্যম। আর অলিম্পিয়াডগুলোতে অংশগ্রহণের তথ্য, প্রস্তুতি সহায়িকা ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট অলিম্পিয়াডের ওয়েবসাইট বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই দেওয়া থাকে। সেখানে নজর রাখতে হবে এবং নির্দেশনা অনুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
অনেকে বলছেন, চাকরির বাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। বিষয়টা কীভাবে দেখছেন?
মইনুল হোসেন: ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের জব রিপোর্ট ২০২৫ অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বর্তমান মোট কর্মসংস্থানের ১৪ শতাংশ, অর্থাৎ ১৭ কোটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে বর্তমান কর্মসংস্থানের ৮ শতাংশ (অথবা ৯ কোটি ২০ লাখ) সমপরিমাণ কর্মসংস্থান লোপ পাবে। অর্থাৎ এই রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। তবে এটি ঠিক যে নতুন যেসব কর্মসংস্থান হবে, সেটির এক বড় অংশ প্রথাগত দক্ষতা দিয়ে পাওয়া সম্ভব হবে না। নতুন দিনের নতুন ধরনের কর্মের জন্য নিজেকেও নতুন করে প্রস্তুত হতে হবে।
এখানে বলে রাখা ভালো যে চাকরির ধরন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আসার আগেও পরিবর্তন হয়েছে, পরেও হবে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। বিভিন্ন কারণে চাকরির বাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয় এবং বাজারব্যবস্থাই সেটিকে আবার স্থিতিশীল করবে। সেটি নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং নতুন পৃথিবীর জন্য প্রস্তুত হতে নিজের দক্ষতা উন্নয়নে মনোনিবেশ করা উচিত।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই যুগে আমাদের কি বই পড়া, গান গাওয়ার মতো সৃজনশীল কাজে আরও মনোযোগ দেওয়া উচিত?
মইনুল হোসেন: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই যুগ আসার আগেও আমাদের বই পড়া, গান গাওয়া বা যার যার মতো করে সৃজনশীল কাজে যুক্ত হওয়া প্রয়োজন ছিল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই যুগেও সেটি প্রয়োজন। কোনো ধরনের ডিভাইস ব্যবহার ছাড়া প্রতিদিন কিছু সময় আলাদা করে রাখা যেতে পারে। শিল্প-সাহিত্যচর্চা করা, প্রকৃতির কাছে যাওয়া, ভ্রমণ করা, মাঠে গিয়ে খেলাধুলা করা, বই পড়া—এসব অভ্যাস গড়ে তোলা যায়। অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া, সহনশীল হওয়া—এসব মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষ হওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। লেখাপড়ার বাইরেও নির্দিষ্ট কিছু শখ থাকলে সেটির জন্যও সময় দেওয়া যেতে পারে।
বিজ্ঞানচিন্তার বেশির ভাগ পাঠক কিশোর ও তরুণ। তাদের উদ্দেশে কিছু বলুন।
মইনুল হোসেন: নতুন নতুন অনেক প্রযুক্তি আসছে। মনে হতে পারে, চারদিকে এত কিছু হয়ে যাচ্ছে, আমি অনেক কিছুই জানি না বা বুঝি না। আমি মনে হয় অনেক কিছু থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছি। এটিকে বলে ফিয়ার অব মিসিং আউট বা বাদ পড়ে যাওয়ার ভয়। এই ভয়টা পাওয়ার দরকার নেই। যেভাবে বলা হয় ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে প্রোগ্রামিং না জানলে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা না জানলে কিছুই করা যাবে না, এগুলোও বাড়াবাড়ি পর্যায়ের কথাবার্তা। এগুলো জানা থাকলে ভালো, এগিয়ে থাকা যাবে। কিন্তু এগুলোই এগিয়ে থাকার একমাত্র মাধ্যম নয়। পৃথিবীতে জানাশোনার, জ্ঞানচর্চার আরও অনেক মাধ্যম আছে। সেখান থেকে নিজের পছন্দের বিষয় বা নিজের বাস্তবিক অবস্থা বিবেচনা করে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে হবে। যন্ত্র অনেক কিছুই করতে পারে, কিন্তু অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারে, মানবিক হতে পারে কেবল মানুষ। এগিয়ে থাকার চেয়েও অনেক বেশি জরুরি মানবিক থাকা।