হাতঘড়ির চমকপ্রদ প্রযুক্তি

২০১৮ বছরের শেষ দিকে অ্যাপল উপহার দিয়েছে চমকপ্রদ উদ্ভাবনে ভরপুর অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৪। নতুন প্রযুক্তি, বড় স্ক্রিন, হালকা গড়নের ডিজাইন আর স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে তাক লাগিয়ে দেওয়া সব ফিচার যুক্ত হয়েছে এবারের অ্যাপল ওয়াচে। চিকিৎসাব্যবস্থায় পুরো নতুনত্ব রাখার চেষ্টা করেছে এটি, যা ভবিষ্যতের চিকিৎসাসেবায় আনতে চলেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। এটি দেখতে আগের অ্যাপল

ওয়াচের মতো মনে হলেও এই গ্যাজেটের ভেতরে

লুকিয়ে আছে চমকপ্রদ কিছু প্রযুক্তি।

প্রথমত, এবারের অ্যাপল ওয়াচ আগেরগুলো চেয়ে দ্রুত কাজ করে। ফলে ডিভাইসের আকার বড় না করেও ব্যাটারি ক্ষমতার পাশাপাশি ডিভাইসের গতি বাড়াতেও জুড়ি নেই অ্যাপলের। ঘড়িটির পেছনে আপনি খুঁজে পাবেন বিশেষ অপটিক্যাল সেন্সর। এটি ব্যবহারকারীর হৃৎস্পন্দন পর্যবেক্ষণ করতে পারে। আগের ঘড়িগুলোতে এই সেন্সর থাকলেও এবার আরও বেশি সঠিক

তথ্য দিতে পারে এ চিপ। ঘড়ির ডিজিটাল কাঁটার সাহায্যে এটি হয়ে উঠেছে একটি অনবদ্য ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম (ইসিজি) যন্ত্র। এটি প্রতি মুহূর্তে ব্যবহারকারীর হৃৎস্পন্দন পর্যবেক্ষণ করে জানাতে পারে যে হৃৎপিণ্ডে কোনো সমস্যা আছে কি না। এ ছাড়া ব্যবহারকারীর ইসিজির ফলাফল চিকিৎসকের কাছে পৌঁছেও দিতে পারে এই অ্যাপল ওয়াচ।

আগের অ্যাপল ওয়াচগুলোর তুলনায় ৩০ শতাংশ বড় স্ক্রিন দেওয়া হয়েছে এবারের নতুন সিরিজ ৪–এ। স্ক্রিনের পরিধি বাড়লেও পাশের প্রশস্ততা বাড়েনি একটুও। প্রতিটি কোনায় বাঁকানো স্ক্রিনের এই ঘড়িটি ৫০ মিটার গভীর পানিতেও দিব্যি ব্যবহার করা যাবে। এ ছাড়া আগের মতোই ব্যবহারকারীর সার্বিক শারীরিক কার্যক্রমেই নজরদারি করতে পারবে অ্যাপল ওয়াচের সিরিজ ৪।

এত সব চমকপ্রদ প্রযুক্তিকে কীভাবে অ্যাপল সাজিয়ে ফেলল ছোট্ট এই কাচের স্ক্রিনের পেছনে, সেটাই তাহলে জেনে নেওয়া যাক এবার।

সুস্বাস্থ্যে প্রযুক্তি

প্রতিদিনের শারীরিক ব্যায়াম আর অন্যান্য বিষয়ের প্রতি বরাবরই নজর রাখত অ্যাপলের স্মার্ট ওয়াচগুলো। তবে নতুন সিরিজ ৪-এর অ্যাপল ওয়াচটি হৃৎস্পন্দন পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্যঝুঁকিকে এড়ানোর যে অভিনব প্রযুক্তি মানুষের হাতে তুলে দিয়েছে, তা আসলেই অনেক বড় প্রশংসার দাবিদার। ঘড়ির পেছনের বিশেষ ইলেকট্রোড সেন্সর ব্যবহার করে এটি ব্যবহারকারীর হৃৎস্পন্দন হিসাব করতে পারে। পাশাপাশি ব্যবহারকারীর হৃৎস্পন্দনের গতিবিধি বিশ্লেষণ করে এটি জানাতে পারে যে ব্যবহারকারীর কোনো হৃদরোগ আছে কি না। স্বাভাবিক হৃৎস্পন্দনের ব্যতিক্রম হলেই ব্যবহারকারীকে সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক করে দেবে অ্যাপলের এই স্মার্ট ওয়াচ।

এ ছাড়া ব্যবহারকারী আচমকা কোনো আঘাতে মাটিতে পড়ে গেলে হঠাৎ করে হাতে থাকা ঘড়িটিও বুঝতে পারবে এই অবস্থান পরিবর্তনের বিষয়টি। ১ মিনিটের ভেতর ব্যবহারকারী তার নিরাপদ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত না করলে, ঘড়ি থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হাসপাতাল ও ঘনিষ্ঠদের কাছে বার্তা পৌঁছে যাবে।

*লেখাটি বিজ্ঞানচিন্তার জানুয়ারি ২০১৯ সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়