ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর

অলংকরণ : সারা তৌফিক

আমরা কেউ না, ছোট এক প্রাণী, প্রকৃতিতে মিশে থাকি

আমরা যে আছি টের পাও যেই ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ডাকি।

ছোটবেলাটায় জলে থাকলেও বড়বেলা থাকি স্থলে

বায়োলজি বই তাই আমাদের উভচর প্রাণী বলে।

বড়বেলা নেই, ছোটবেলাটাতে আমাদের লেজ থাকে

লেজ কেন খসে? জানি না তো বাপু! জিজ্ঞেস করি কাকে?

সাঁতরাতে পারি, লাফ দিতে পারি, যেতে পারি চুপি হেঁটে

বৃষ্টিতে ভিজে সর্দি ছাড়াই জীবনটা যায় কেটে।

ছোটবেলা নিই ফুলকোতে শ্বাস, বড়বেলা ফুসফুসে

আমরা ব্যাঙেরা মনের ভেতরে দুঃখ রেখেছি পুষে।

আমাদের মাঝে তারকা হচ্ছে এক ‘কুনো’, এক ‘কোলা’

বাড়াবাড়ি দেখে বাকি ব্যাঙদের অভিমানে গাল ফোলা।

বাকিদের নাম কয়জনে জানে? তাঁদের কী ভাবো? কেঁচো?

যেমন রয়েছে ‘লাল-পা গেছো’, আরও আছে ‘ডোরা গেছো’।

‘কটকটি’ ‘চীনা’ ‘কোপের আসাম’, আছে ‘বড় লাউ বিচি’

‘সবুজ’ ব্যাঙেরও নাম ভুলে যাও? তোমরা এমন! ছিঃ ছিঃ।

‘কুনো’, ‘কোলা’ ছাড়া তোমাদের কাছে পেল না কেউ তো দামও

এই কারণেই বিষণ্ন থাকে ‘লাল-চোখা’, ‘ঝিঁ ঝি’, ‘ভামো’।

আমাদের, মানে ব্যাঙদের কথা রাখতে চাও না মনে

চুপচাপ থাকি ডোবার ভেতরে অথবা দূরের বনে।

বৃষ্টি হওয়ার সংকেত দিতে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ডাকি

ক্ষতিকর সব পোকাদের খেয়ে ফসল বাঁচিয়ে রাখি।

অবহেলা কর, কিন্তু ব্যাঙেরা তোমাদের ভালোবাসে

তারপরও কি না আমাদের কাটো জুলজি স্যারের ক্লাসে!

* লেখাটি বিজ্ঞানচিন্তার মে ২০১৭ সংখ্যায় প্রকাশিত