কেমন করে দেখি

বলতে পারো- আমরা সবাই কেমন করে দেখি?

একটু ভাব, পারছ না তো! ও মা, একি একি!

বস্তু থেকে আলোকরশ্মি পড়ে যখন চোখে

সঠিকভাবে বস্তুটাকে দেখে তখন লোকে।

দুচোখ তোমার যতই থাকুক ভালো

আঁধার রাতে দেখবে কিছু না থাকে তো আলো?

এ আলোই বস্তুটাকে দেখতে পাওয়ার মূলে

কখনো এই সার কথাটা যেও নাকো ভুলে।

প্রথমেই আলো এসে পড়ে ‘কর্নিয়া’তে

কর্নিয়া কী? দিচ্ছি বলে চিনতে পার যাতে

কাঁচের মতো স্বচ্ছ এটা গম্বুজ-আকার, গোলও

দেখতে পাবে প্রথমেই, যখনই চোখ খোলো।

আলোটাকে বাঁকিয়ে সে যথাযথভাবে

‘পিউপিল-এর রাস্তা দেখায়, যেখানে সে যাবে ।

পিউপিলটা সুড়ঙ্গপথ—সরু এবং কালো

এই পথেই সোজা গিয়ে ‘লেন্স’ এ পড়ে আলো।

কঠিন তো নয় পিউপিলও চিনে নিতে পারা

এটাই হলো ‘চোখের মণি’ কেউবা বলে ‘তারা’।

আংটির মতো পাতলা পর্দা থাকে ভেতর দিকে

‘আইরিশ’এই পর্দাটার নাম, রাখতে পারো শিখে।

আলোর প্রবেশমাত্রা সে-ই করে নিয়ন্ত্রণ

পিউপিল হয় ছোটো-বড়, যেমন প্রয়োজন।

‘লেন্স’টা করে আলোরশ্মির প্রতিসরণ, তাতে-

কেন্দ্রীভূত হয়ে আলো পড়ে ‘রেটিনা’তে।

লেন্সটা স্বচ্ছ, ক্রিস্টালাইন প্রোটিনে গঠিত

কাছের বস্তু দেখার বেলায় হয় সে প্রসারিত।

দূরবর্তী বস্তু দেখা যখন প্রয়োজন

দূরত্বটা অনুযায়ী হয় এর সংকোচন।

রেটিনা কী? একেবারে ভেতরদিকের স্তর

বস্তুর উল্টো প্রতিবিম্ব পড়ে এর ওপর

‘অপটিক নার্ভ’ তা পাঠিয়ে দেয় নিজ দায়িত্ব জেনে

তড়িৎ সংকেত হয়ে সেটা উপস্থিত হয় ব্রেনে।

উল্টো প্রতিবিম্বটা হয় কেমন করে সোজা

ব্রেনই জানে; একটুখানি কঠিন এটা বোঝা।

ব্যাপার হলো—ব্রেনই আবার উল্টে দেয় এটাকে;

দু’বার উল্টায়, তাই তো দেখি বস্তু যেমন থাকে।