সূর্য পরিবার

কারণ ছাড়াই লোকে আমায় সুয্যি মামা বলে?

হাইড্রোজেন আর হিলিয়ামের আগুন গায়ে জ্বলে।

আমি বুঝি একা একা? কী বলছ! আরে!

আট-আটটি গ্রহ আছে আমার পরিবারে।

এদের বেশি কাজটাজ নেই, থাকে আমার পাশে

আমায় ঘিরে নিয়ম করে ঘুরে ঘুরে আসে।

সবচেয়ে যে কাছাকাছি নাও না ওকে চিনে

যে আমাকে ঘুরে আসে মোট আটাশি দিনে।

এই গ্রহে নেই কোনো বাতাস, এই গ্রহে নেই পানি

এই গ্রহটার নেই কোনো চাঁদ, তা কি সবাই জানি?

কী বললে চিনতে ওকে কষ্ট হলো নাকি?

ইংরেজিতে ‘মার্কারি’ আর বাংলাতে ‘বুধ’ ডাকি।

এরপরে যে গ্রহ আছে—ঢাকা অনেক মেঘে

উজ্জ্বল এক তারা হয়ে কাটায় সময় জেগে।

সন্ধ্যাবেলায় ‘সন্ধ্যাতারা’, ‘শুকতারা’ খুব ভোরে

আমায় ঘিরে ঘোরে যেদিক ঘড়ির কাঁটা ঘোরে।

অন্য সবাই ঘুরতে থাকে কাঁটার বিপরীতে

ইচ্ছা হলে খুব সহজেই পারবে চিনে নিতে।

যেমন চেনে রাতের পাখি এবং ভোরের পাখি

আমি একে ‘ভেনাস’ না হয় ‘শুক্র’ বলে ডাকি।

‘পৃথিবী’ বা ‘আর্থ’ যা বল—শুক্র গ্রহের পরে

এই গ্রহটার কথা ভেবে মনটা কেমন করে।

বাতাস আছে, পানি আছে, ভরা সবুজ গাছে

এখানটাতেই সব রয়েছে, তাতেই জীবন আছে।

পৃথিবীটার একখানা চাঁদ অনেক মায়াভরা

তাই তো মানুষ কাব্য লেখে, মুখে বানায় ছড়া।

পরের গ্রহের রং হলো লাল, লালচে রঙের মাটি

অমঙ্গলের কিচ্ছুটি নেই এই কথা তো খাঁটি।

ওর নাম তাই ‘মার্স’ রেখেছি, ‘মঙ্গল’ও কেউ ডাকে

জানতে আরও গুগল কোরো পড়ালেখার ফাঁকে।

পরের গ্রহ ছাড়া যদি বাকিরা হয় জড়ো

তারপরও তা লাগবে ছোট, এটা এমন বড়।

আকৃতিতে বড় হলেও অনেক জোরে ছোটে

এই গ্রহটার একদিন হয় দশ ঘণ্টায় মোটে।

নিজ অক্ষে ঘোরার সময় অনেক দ্রুতগতি

এই গ্রহটার নাম ‘জুপিটার’ কিংবা ‘বৃহস্পতি’।

বৃহস্পতির উপগ্রহ সাতষট্টিখানা

কী বললে, এটা তোমার আগে থেকেই জানা?

আকৃতিতে দ্বিতীয় স্থান, চেনা খুবই সোজা

পরের গ্রহ চিনতে লাগে বলয়টাকে খোঁজা।

এই গ্রহটার চারপাশটায় চাঁদ সবচেয়ে বেশি

কিন্তু জেনো চাঁদে চাঁদে নেই তো রেষারেষি।

গ্রহটাতে গ্যাস রয়েছে। হিলিয়ামে ঠাসা

বেলুনে শখ? বুদ্ধি হলো বেলুন নিয়ে আসা।

ইংরেজি নাম ‘স্যাটার্ন’ এবং বাংলাতে নাম ‘শনি’

গ্রহটাকে আঁকাও সোজা। আঁকো তো এখনই!

তেরো বলয়, সাতাশটা চাঁদ পরের ঠান্ডা গ্রহে

আদর করে কেউবা তাকে ‘বরফ দৈত্য’ কহে।

‘ইউরেনাস’-এর নাম শুনলে গা হিম হিম করে?

আমায় এটা ঘুরে আসে চুরাশি বত্সরে।

লম্বা সময় একই ঋতু—কে শুনেছ আগে?

এক ঋতু পার করতে এটার বছর কুড়ি লাগে।

বরফ দৈত্যগুলোর মাঝে সবচেয়ে ছোট গ্রহে

ঠান্ডা বাতাস অনেক অনেক অনেক অনেক জোরে বহে।

নীলরঙা এই গ্রহখানাই সবচেয়ে দূরে

এক শ পঁয়ষট্টি বছর নিয়ে আসে ঘুরে।

একটুখানি অবাক হলে আমার কথা শুনে?

চৌদ্দখানা চাঁদ রয়েছে এই গ্রহ ‘নেপচুন’-এ।

ভাগনে এবং ভাগনি যারা আমায় মামা ডাকো

সূর্য পরিবার চিনতে ভুল করবে নাকো।