ন্যূনতম ও বৃহত্তম সংখ্যা দুটি কত?

আপনি পরীক্ষায় ১০-এ ১০ পেতে চান। কিন্তু কখনো প্রকাশ করেন না। আমি বললাম আপনার মনের কথাটা আমি বলে দিতে পারি। আপনি ভাবলেন আমি কীভাবে জানব? বললাম, অবশ্য এ জন্য আপনাকে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর বলতে হবে।

আপনি বললেন, কীরকম? আমি বললাম আপনি যেকোনো একটি সংখ্যা মনে মনে ঠিক করুন এবং তার সঙ্গে ৫ যোগ করুন। এবার এর ৩ গুণ বের করুন। বিয়োগ করুন ১৫। এবার আপনি যে নম্বর পেতে চান, সেই সংখ্যাটি দিয়ে এই বিয়োগফলকে ভাগ করুন। এর সঙ্গে যোগ করুন ৭। এখন যে উত্তর পেয়েছেন, সেটাই আপনার মনের ইচ্ছা, ঠিক কি না? আপনি তো বাকরুদ্ধ। ভাঙা ভাঙা গলায় বললেন, আপনি জানলেন কীভাবে? আমি তো মনের কথা কাউকে বলিনি।

এখানে আমার একটা চালাকি কাজ করেছে। আমি কিন্তু জানি না আপনার মনের ইচ্ছাটা। কিন্তু হিসাবের মারপ্যাঁচে পড়ে আপনি ভাবলেন আমি নিশ্চয়ই জানি। আসলে আমি কিন্তু কিছুই জানি না। আপনার মনের কথা মনেই রয়েছে। যেমন, প্রথমে মনে মনে ৭ সংখ্যাটি ধরেছেন। আমি কিছু না জেনেই বলেছি আপনার নিজের মনের গোপন সংখ্যাটির সঙ্গে ৫ যোগ করুন। হলো ১২। আমি কিন্তু জানি না ১২ হলো না কি ২২ হলো। জানার দরকারও নেই। এর পর ৩ গুণ করে ১৫ বিয়োগ করুন। হলো ২১। ভাগ করুন আপনার প্রথমে ধরে নেওয়া সংখ্যা ৭ দিয়ে, হলো ৩। যোগ করুন ৭ এবার পেয়ে গেলেন ১০। এটাই তো আপনার ঈপ্সিত নম্বর, তাই না? আসলে আপনি মনে মনে ৩,৫ বা ৯ ধরুন, হিসাব করার পর সব সময়ই উত্তর হবে ১০। অবশ্য পরীক্ষায় ১০ পাওয়ার ইচ্ছাটা আমি না জানলেও অনুমান করে নিয়েছি। কারণ সবাই তো পরীক্ষায় ১০-এ ১০ পেতে চায়।

এবার একটি মজার গুণ অঙ্কের প্রতিসাম্য রূপ দেখুন। আপনি যদি ৩৭ সংখ্যাটিকে ৩ দিয়ে গুণ করুন। এর পর এই ৩৭ সংখ্যাটিকেই ক্রমান্বয়ে প্রতি পদে ৩ করে বাড়িয়ে ৬, ৯, ১২, ১৫, ১৮, ২১, ২৪, ২৭ দিয়ে গুণ করলে এক ধরনের ম্যাজিক উত্তর পাবেন। যেমন:

(৩৭×৩) = ১১১

(৩৭×৬) = ২২২

(৩৭×৯) = ৩৩৩

(৩৭×১২) = ৪৪৪

(৩৭×১৫) = ৫৫৫

(৩৭×১৮) = ৬৬৬

(৩৭×২১) = ৭৭৭

(৩৭×২৪) = ৮৮৮

(৩৭×২৭) = ৯৯৯

এবার আসছি মূল প্রশ্নে

দুই অঙ্কের একটি সংখ্যা তার অঙ্ক দুটির যোগফলের ৪ গুণ। এ রকম ন্যূনতম ও বৃহত্তম সংখ্যা দুটি কত?

আপনার উত্তর আমার ই-মেইলে পাঠাতে পারেন।

সঠিক উত্তর দেখুন আগামী রোববার এই অনলাইন কলামে।

গত সংখ্যায় প্রকাশিত প্রশ্নের উত্তর

প্রশ্নটি ছিল এ রকম: ৩৫১৭ ও ৩৮৩৯ সংখ্যা দুটিকে একটি তিন অঙ্কের সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে একই অবশিষ্ট থাকে। বলুন তো তিন অঙ্কের সংখ্যাটি কত এবং তিন অঙ্কের এ রকম সংখ্যা কতটি আছে?

উত্তর

তিন অঙ্কের সংখ্যাটি ৩২২ এবং এ রকম অপর একটি সংখ্যা ১৬১ কীভাবে উত্তর বের করলাম প্রদত্ত সংখ্যা দুটির বড় সংখ্যাটি থেকে ছোটটি বিয়োগ করি। প্রাপ্ত তিন অঙ্কের সংখ্যাটি দিয়ে মূল সংখ্যা দুটিকে ভাগ করলে একই অবশিষ্ট থাকবে। (৩৮৩৯-৩৫১৭) = ৩২২। এই ৩২২ দিয়ে সংখ্যা দুটিকে ভাগ করলে উভয় ক্ষেত্রে ভাগশেষ সমান থাকবে, এ ক্ষেত্রে অভিন্ন ভাগশেষ ২৯৭। কিন্তু প্রথম ক্ষেত্রে ভাগফল ১০ ও দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ১১। ৩২২ এর অর্ধেক ১৬১। তিন অঙ্কের এই সংখ্যাটি দিয়ে মূল সংখ্যা দুটিকে ভাগ করলেও অভিন্ন ভাগশেষ থাকবে। সে ক্ষেত্রে ভাগশেষ ১৩৬ ও ভাগফল যথাক্রমে ২১ ও ২৩। সুতরাং নির্ণেয় তিন অঙ্কের অপর একটি সংখ্যা ১৬১। তিন অঙ্কের মোট এই দুটি সংখ্যা দিয়ে ৩৮৩৯ ও ৩৫১৭ কে ভাগ করলে অভিন্ন অবশিষ্ট পাওয়া যাবে।

বীজগণিতের সাহায্যেও আমরা এই সমস্যাটির সমাধান করতে পারি। মূল সংখ্যা দুটিকে আমরা প্রকাশ করতে পারি এভাবে: (ক×খ) + অ = ৩৮৩৯ এবং (ক×গ) + অ = ৩৫১৭। তাহলে (কখ - কগ) = ৩২২। এখানে ‘ক’ = মূল সংখ্যা দুটির পার্থক্য, এ ক্ষেত্রে নির্ণেয় তিন অঙ্কের সংখ্যা ৩২২। ‘খ’ ও ‘গ’ হলো ৩২২ দিয়ে মূল সংখ্যা দুটির ভাগফল এবং ‘অ’ = দুইটি ভাগের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত অভিন্ন অবশিষ্ট। সুতরাং ক(খ - গ) = ৩২২ । (খ - গ) এর মান যদি ১ হয়, তাহলে ক-এর মান ৩২২, নির্ণেয় তিন অঙ্কের সংখ্যা। যদি (খ - গ) এর মান ১-এর অর্ধেক বা ০.৫ হয়, তাহলে ক-এর মান ১৬১, যা নির্ণেয় অপর একটি তিন অঙ্কের সংখ্যা।

*আব্দুল কাইয়ুম: মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক ও প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক, [email protected]