সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক নতুন প্রজাতির টমেটোর জাত উদ্ভাবন করেছেন। উচ্চফলনশীল টমেটোর জাতটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাউ বিফস্টেক টমেটো-১’। এই গবেষণা দলের পরিচালনায় ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক এবি.এম আরিফ হাসান খান এবং কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আতিকুর রহমান। পাশাপাশি কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের শিক্ষার্থী মেশকুল জান্নাত তাঁর গবেষণার অংশ হিসেবে তিন বছর এই জাতটি নিয়ে কাজ করেছেন।
সদ্য উদ্ভাবিত এই টমেটোর নামের পেছনে রয়েছে মজার কাহিনি। ‘বাউ বিফস্টেক টমেটো-১ নামের প্রথম অংশ অর্থাৎ ‘বাউ’ শব্দটি নেওয়া হয়েছে Bangladesh Agricultural University-এর সংক্ষিপ্ত রূপ BAU (বাউ) থেকে। আর বিফস্টেক শব্দটি নেওয়া হয়েছে গরুর মাংসের স্টেক বা স্লাইসের সঙ্গে মিল রেখে। এই টমেটো সচরাচর বাজারে পাওয়া টমেটোগুলোর চেয়ে একটু আলাদা। আকারেও বেশ বড়। আর স্বাদেও মিষ্টি। ভোজনরসিকদের কাছে বিফস্টেক বা গরুর মাংসের স্টেক খুবই পরিচিত খাবার। সদ্য উদ্ভাবিত এই টমেটোর মাংসল গঠন আর কোষবিন্যাস দেখতে অনেকটা বিফস্টেকের মতো হওয়ায় এর নামকরণ করা হয়েছে বাউ বিফস্টেক-১ টমেটো।
এই টমেটোর এক স্লাইস একটা বার্গারের জন্য যথেষ্ট। টমেটোটি আকারে যেমন বিশাল, স্বাদেও তেমন অনন্য। সাধারণত প্রতিটি টমেটো ৩০০-৬০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। এর ফলন সাধারণ টমেটোর চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি।
নতুই এই টমেটো সম্পর্কে আরিফ হাসান খান বলেন, ‘সাধারণ টমেটোর তুলনায় এই টমেটোর আকৃতি অনেক বড় এবং গঠনেও পার্থক্য রয়েছে। সাধারণত টমেটোয় দুটি কোষ থাকে। কিন্তু এই বিশেষ জাতের টমেটোতে অনেকগুলো কোষ রয়েছে। আকারে অন্য টমেটোর প্রায় দ্বিগুণ।’
আতিকুর রহমান বলেন, ‘এই টমেটোর গাছের উচ্চতা ৯০-১২০ সেন্টিমিটার। গড়ে ৩-৪টি টমেটোতেই ১ কেজি ওজন হয়। একটি গাছে সাধারণত ১৫ থেকে ২০টি টমেটো ধরে। ফলে প্রতি গাছ থেকে গড়ে ৫-৬ কেজি টমেটো উৎপাদন করা সম্ভব।’
এই টমেটোর এক স্লাইস একটা বার্গারের জন্য যথেষ্ট। টমেটোটি আকারে যেমন বিশাল, স্বাদেও তেমন অনন্য। সাধারণত প্রতিটি টমেটো ৩০০-৬০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। এর ফলন সাধারণ টমেটোর চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি। প্রতিটি গাছে ৫-৬ কেজি পর্যন্ত ফলন হয়। আর প্রতি হেক্টরে ফলে ৪০ থেকে ৫০ টন! এই টমেটোর রাসায়নিক গঠনও সাধারণ টমেটো থেকে একটু ভিন্ন। এতে উচ্চমাত্রার গ্লুকোজ (১.২%), ফ্রুক্টোজ (৩.৭%) আর সুক্রোজ (৩.৬%) রয়েছে। গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ আর সুক্রোজের সম্মিলিত মিশ্রণ এই টমেটোর স্বাদকে মিষ্টি করে তোলে। সাধারণ তাপমাত্রায় ১৫-২০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
সদ্য উদ্ভাবিত এই টমেটোর নামের পেছনে রয়েছে মজার কাহিনি। ‘বাউ বিফস্টেক টমেটো-১ নামের প্রথম অংশ অর্থাৎ ‘বাউ’ শব্দটি নেওয়া হয়েছে Bangladesh Agricultural University-এর সংক্ষিপ্ত রূপ BAU (বাউ) থেকে।
সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, নতুন উদ্ভাবিত এই টমেটো পোকামাকড় ও রোগবালাই প্রতিরোধী। ফলে এতে ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহারের ঝামেলা নেই। উৎপাদন প্রক্রিয়াও পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব।